মাননীয় বানিজ্যমন্ত্রী, এবার শাকসবজীর ক্ষেতে চলুন

ডাক্তার সুলতানা আলগিন
Published : 22 Nov 2012, 03:30 AM
Updated : 22 Nov 2012, 03:30 AM

ঢাকায় বেশ কিছু বাজারে ফরমালিন মুক্ত মাছ বিক্রি হচ্ছে বলে শুনেছি। চমৎকার উদ্যোগ। ফরমালিন পরীক্ষার কিট দিয়ে শনাক্ত করা হচ্ছে মাছে ওই বিষাক্ত পদার্থ আছে কি না। বানিজ্য মন্ত্রনালয় খুবই ভাল উদ্যোগ নিয়েছে। বানিজ্যমন্ত্রী অবশ্যই এজন্যে ধন্যবাদের দাবীদার। আশা করছি এভাবে ঢাকার বেশীর ভাগ মার্কেট বাজারকে ফরমালিনযুক্ত মাছ মুক্ত করা যাবে। কিন্তু এটাই কি শেষ কথা! এভাবে কি সারাদেশের সকলবাজারকে ফরমালিনমুক্ত করা যাবে কি? নাকি এই কাজ কেবলই লোক দেখানোর কাজই রয়ে যাবে। কেননা সারাদেশে হাজার লাখো বাজার। এসবের ক‌টিই বা এভাবে নজরদারির মধ্যে আনা সম্ভব হবে। আদৌ কি তা সম্ভব! তারপরও সাধু উদ্যোগ। আরেকটা কথা, সরকারের পক্ষে একা সব কাজ করা সম্ভব নয়। এজন্য জনগনের নজরদারি ও সচেতনতা চাই। একা জি এম কাদির কতটা করবেন! একজন মন্ত্রীর পক্ষে কতটা সম্ভব ! মাঝখানে অবশ্য শুনেছিলাম দেশে ফরমালিন আমদানির ব্যাপারে কড়াকড়ি করা হবে। কেউ কেউ বলছিলেন নিষিদ্ধই করা হবে। সেটা যদিও মাথাব্যাথা নিরাময়ের জন্য মাথাকাটার মত হত_ তারপরও মনে হয় উদ্যোগটা খারাপ হত না। বিশেষ করে ফরমালিন আমদানির ক্ষেত্রে কড়াকড়ি একান্তই দরকার। লাশ রক্ষার জন্য ফরমালিন এনে তা ব্যাবহার করা হরে মাছ-রক্ষার জন্য_ আর এটা করে মাছখেকো মানুষকে লাশ বানানোর চেষ্টা ; এটা মেনে নেয়া যায় না।

এবার আরেকটি গুরুতর ব্যাপারে মাননীয় বানিজ্য মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। মন্ত্রী বিষয়টা অবশ্যই জানেন । কমবেশী আমরা সবাই জানি। মিডিয়া এ নিয়ে সবসময় আমাদর সচেতন করে চলেছে। তারপরও আমরা কতটা সচেতন।

মাছে না বাজারে নিয়ে ফরমালিন মেশায় মাছবিক্রেতা। কিন্তু প্রতিদিন আমরা যে তথাকথিত টাটকা শাকসবজী ফলমূল খাচ্ছি- তার কি অবস্থা। আপেল কমলা এখন আর পচেই না। কারণ কি!অথচ ছোটবেলায় দেখতাম ২/৩দিনও রাখা যেত না। পচে গন্ধ হত। আর এখন ২/৩ সপ্তাহেও পচবেনা _কারন কি!ইদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে এক কাদি কলা এনেছিলাম। সেগুলো পাকার পর ২/১দিনও রাখতে পারি নি। অথচ ঢাকায় যে কলা কিনে খাই সেগুলো নষ্ট হয়ই না। রহস্য কি!লাল শাক মুলা শাক নষ্ট হয়ই না। কি টাটকা! টমেটোর কথা সবাই জানি। বাজারে কাচা টমেটোর দেখা নেই তেমন; কিন্তু পাকা লাল টুকটুকে টমেটোর অভাব নেই। রহস্য কি! এর রহস্য মিডিয়ারর কল্যানে আমরা সবাই জানি। টমেটো পাকানো হচ্ছে বিষাক্ত মেডিসিন দিয়ে। প্রকাশ্যে দেয়া হচ্ছে সেই মেডিসিন। সবার সামনে। লেখা হচ্চে পত্রিকায়। তারপরও কোন ব্যাবস্থা নেয়া হচ্ছে না। মেডিসিন দেয়া হচ্ছে কলা খেতে। লাল শাক মুলা শাক সবকিছুতে। কারন শহরবাসীকে টাটকা সবজী খাওয়াতে হবে যে!

মাননীয় বানিজ্য মন্ত্রী, এই ব্যাপারে কি কিছু করবেন। নেবেন কি কোন শক্ত ব্যাবস্থা! দয়া করে তিনি ছুটবেন টমেটোর খেতে। অবশ্য তাকে খেতে ছুটে যাওয়ার অনুরোধ করার আমি কে! তিনি একা কতটাই বা করবেন। এটা ঠিক তিনি পারেন এ ধরণের সামাজিক আন্দোলনের সূচনা করতে। এজন্য প্রথম প্রথম তাকে ছুটে যেতে হবে। তিনি একা পারবেন না। যেমন একা সরকার পারবে না ঢাকার সব বাজারকে ; দেশের সব বাজারকে ফরমালিন মুক্ত করতে।

এ কাজে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। পত্রিকা ভাল কাজ করছে। বড় কাজ করছে। ইদানিং দেখছি পত্রিকা গুলো নানা সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলছে। তাদের বন্ধুসভা পাঠকসভা জাতীয় নানা সংগঠনও রয়েছে। সেসব সংগঠনও সামাজিক কাজে এগিয়ে আসতে পারে। নানা পেশাজীবী সংগঠন রয়েছে। বিএম এ রয়েছে। সব পেশাজীবীদের আলাদা সংগঠন ছড়িয়ে আছে সারাদেশে। এ ধরনের সামাজিক আন্দোলনের কাজে এরা বড় ভুমিকা পালন করতে পারি। রাজনৈতিক নানা সংগঠন, শাখা সংগঠন উপসংগঠন রয়েছে। সেসবের ওপর জনগন ভরসা পাবে কিনা বলা মুশকিল। কেননা তাতে ভাল কাজের উদ্যোগ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। @