আমাকে ক্ষমা করবেন-আমার সংগ্রহে থাকলেও এমন ছবি আমি আপনাদের দেখাতে পারছি না (অশ্লীলতার অর্থটাই পাল্টে গেছে)

হাবিব
Published : 30 Oct 2011, 11:56 PM
Updated : 30 Oct 2011, 11:56 PM

যাত্রাপালা প্রদর্শনের অনুমতি পত্র দেখালেন যাত্রাপালার সাধারন সম্পাদক। "যাত্রাপালায় যদি অশ্লীলতা প্রদর্শনের কোন নমুনা পাওয়া যায় তাহলে তাৎক্ষণীক ভাবে যাত্রাপালা প্রদর্শন বন্ধ করে দেয়া হবে"– বলে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক জামাল উদ্দীন আহাম্মেদ তার স্বাক্ষরিত পত্রে লিখেন।

কিন্তু দিনাজপুর শহর এলাকা থেকে ৪০ কিলোমিটার দুরে, ঠাকুরগাঁও জেলার সীমান্ত সংলগ্ন ঢেমঢেমিয়া নামক এলাকায় কালি মেলায় বসেছে যাত্রার আসর। সেখানে চৈতালী, প্রতিমা, আনন্দ, ভোলানাথ অপেরা সহ বিভিন্ন মিনি সার্কাস, চ্যারিটি শো-এর প্রদর্শনের মেলা বসেছে।

তখন রাত ১১ টা। প্রতিমা অপেরা নামক যাত্রাপালায় গিয়ে দেখা যায়, প্রিন্সেস নামধারী ষোড়শী একটি মেয়ে প্রায় অর্ধনগ্ন অবস্থায় ষ্টেজে নাচছেন। নাচতে নাচতে শরীরের কাপড় খুলে ফেলেন। নতর্কী উলঙ্গ অবস্থায় ষ্টেজের চারপাশেই যাচ্ছেন আর দর্শকদের স্পর্শের সুযোগ দিয়ে টাকা নিচ্ছেন। ষ্টেজের একপাশেই এ দৃশ্য দেখছিলেন জেলার বীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ওসিসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। পাশাপাশি এটাকে অশ্লীল বলার কোন ভাষাই খুজে পাননি সেখানে ঠাকুরগাঁও জেলা শহর থেকে যাওয়া কয়েকজন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।

এমন নাচ কেন?-জবাবে বীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান,

আমাদের করার কি আছে। এটাই পাবলিক ডিমান্ড।

তাই বলে আপনাদের সামনেই এভাবে উলঙ্গ নাচ?-কোন জবাব না দিয়ে তিনি মেলার সাধারন সম্পাদককে ডাক দেন। সাধারন সম্পাদক জেলা প্রশাসকের আদেশ সম্বলিত একটি চিঠি দেখিয়ে বলেন-

এটা পাবলিক ডিমান্ড, জেলা প্রশাসকের অনুমতি আমাদের কাছে আছে।

উলঙ্গ নাচের অনুমতিও আছে?-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,

আপনাদের যা কিছু করার করেন।

এ ব্যাপারে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক জামাল উদ্দীন আহাম্মেদ জানান, নগ্নতা বা অশ্লীল কিছু প্রদর্শনের কোন অনুমতি আমরা দেইনি। আমি শুনেছি সেখানে অশ্লীলতা চলছে। আজই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পরে সাংবাদিকরা ঘুরে দেখেন, চৈতালী, আনন্দ, ভোলানাথ অপেরা সহ কয়েকটি মিনি সার্কাস ও চ্যারিটি শো। সেখানেও নগ্ন নৃত্যের ছড়াছড়ি। মেলা ঘুরে দেখা গেছে, দর্শকের সারিতে বসে আছে তরুন বয়সী দর্শকরা। সেখানে নারী দর্শকের উপস্থিতি ছিল না। মেলা সম্পর্কে এলাকার ষাটোর্ধ আহমুদুল, আঃ লতিফসহ কয়েকজন জানান, আমরা খুব কষ্ট পাচ্ছি। কিন্তু এসব বন্ধের কোন রাস্তাই আমরা খুঁজে পাচ্ছি না। প্রশাসন আর পুলিশ মিলে, ক্ষমতাসীন দলের লোকজন মিলে এমন অশ্লীল আর অপকর্ম করছে। এটাকে যাত্রা না বলে শরীর প্রদর্শনী বললেও ভুল হবে না। এক্ষুনি এ মেলা বন্ধ হওয়া দরকার।