পিড়িতে মজিলে মন কিবা হাড়ি কিবা ডোম:প্রেমের টানে ঘর ছেড়েছেন মিতা মুখার্জী

আজমাল হোসেন মামুন
Published : 4 Jan 2011, 01:44 PM
Updated : 4 Jan 2011, 01:44 PM

পিরিতে মজিলে মন কিবা হাড়ি কিবা ডোম। প্রেম মানে না জাত কুল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়, প্রেমের ফাঁদ পাতা ভূবনে, কখন কে ধরা পড়ে কে জানে।' প্রেমের কারণে বাবা-মা, ভাই-বোন এবং আত্মীয় স্বজনের মায়া ত্যাগ করে শুধু প্রেমিক-প্রেমিকার সাথে মিলনের জন্য আকুল হয়ে ওঠে। ধর্ম পর্যন্ত ত্যাগ করে। এ রকম ঘটনা ঘটে সমাজে অহরহ। এ রকম একটি ঘটনা ঘটেছে ঝালকাঠী জেলায়। যা বিভিন্ন দৈনিকেও প্রকাশিত হয়েছে।

ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার তারাবাড়ি গ্রামের হিন্দু ধর্মালম্বী মিতা মুখার্জি (১৮) প্রেমের টানে মুসলিম ধর্মালম্বী সুমন সিকদারকে (৩০) বিয়ে করেছেন। হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মিতা মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করে এখন নব মুসলিম হিসেবে নাম ধারণ করেছে শাহনাজ ইসলাম। এ ঘটনায় মিতা ওরফে শাহনাজের বাবা গোবিন্দ লাল বাদী হয়ে সুমন ও তার তিন ভাইকে আসামি করে অপহরণ মামলা করেন।

এ ব্যাপারে বাদী ২৫ ডিসেম্বর দায়েরকৃত এজাহারে উল্লেখ করেন, তার মেয়ে মিতাকে বিকেলে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় সুমন তার ভাইদের সহায়তায় অপহরণ করে। এদিকে গত ২৯ ডিসেম্বর ঢাকা নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে দেওয়া হলফনামায় মিতা উল্লেখ করেন, তিনি প্রাপ্তবয়স্ক। ইসলাম ধর্মে আকৃষ্ট হলে তাকে পরিবার থেকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। এতে ভীত হয়ে তিনি ঢাকায় চলে আসেন এবং ২৮ ডিসেম্বর নোটারি পাবলিকে হলফনামা সম্পাদন করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। সংশ্লিষ্ট থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্ত করছে।

এখন আসা যাক আসল কথায়। যারা অর্থ বিত্তশালী তারা অন্য ধর্মের ছেলে বা মেয়েকে বিয়ে করলে সমস্যা হয় না। কারণ, তাদের অঢেল সম্পদ রয়েছে। সুলতানা কামাল সুপ্রিয় চক্রবর্তীকে বিয়ে করেছেন। ফেরদৌসী রামেন্দ্র মজুমদারকে বিয়ে করে ফেরদৌসী মজুমদার নাম ধারণ করেছে। বেশ কিছু দিন আগে তানিয়া বিয়ে করলো হিন্দুকে। চাঁদনী বাপ্পা মজুমদারকে বিয়ে করে সুখেই রয়েছে। জানি না কেন তারা এ কাজ করে। আবেগের বশীভূত হয়ে নাকি টাকা পয়সার লোভে। ফেরদৌসী মজুমদার আরবী সাহিত্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছে। তারপরেও অন্য ধর্মের লোককে বিয়ে করাটা পূন্যের কাজ ভেবেই কাজটি করেছিল। এখন কেন মিতা মুখার্জির বাবা মামলা করবে। তার মেয়ে প্রেমের টানে ঘর বেধেছে। তবে পরিশেষে কাজী নজরুল ইসলামে কবিতার লাইন দিয়েই লেখাটি শেষ করতে চাই,

মোরা এক বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান
মুসলিম তাঁর নয়নমণি হিন্দু তাঁহার প্রাণ।

যে যার ধর্ম সে পালন করবে। তবে দেশের স্বার্থকে বিবেচনা করেই এগিয়ে যেতে হবে। সকল ধর্ম ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আমরা দেশ এবং জাতির কল্যাণে কাজ করি। ওই দুই নবদম্পতির প্রতি রইল অসংখ্য অভিনন্দন। ওরা সুখী হোক। ওদের ঘর ভরে যাক শান্তিতে।