সম্প্রতি আমরা দেখেছি বিএনপির আইনজীবিরা ( সিনিয়ন ও জুনিয়র, রেজিষ্ট্রার্ড ও নন-রেজিষ্ট্রার্ড প্রায় সবাই) দলীয় নেত্রী বা তার পরিবারের সদস্যদের প্রত্যেকটি মামলায় আদালতে হট্রোগোল, গালাগালি, হাতাহাতি করেই চলছেন। বিশেষ করে খালেদা জিয়া,জিয়া, তারেক ও কোকোকে নিয়ে যখনই কোন মামলা আদালতে উপস্থিত হয়, তখনই তারা এ রায় ও আদালতকে প্রভাবিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এ ধররেন নগ্ন আচরন করে আসছে। যেন এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া বা ক্যাম্পাস অথবা রাজপথ অথবা পল্টন ময়দান। এটা যে আদালত তা তারা যেন বেমালুম ভুলে যান বা মানতে চান না।
আমরা সংসদে বই, কলম ইত্যাদি স্পিকারকে উদ্দ্যেশ্য করে ছুড়ে মারতে দেখেছি, কিন্তু আদালতেও তা চালু হয়ে গেল ! গতকাল ০২/০৮/২০১১ তারিখ ছিল ফজলুল হক আমিনীর বিরুদ্ধে সংবিধান ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলা নিয়ে মামলার শুনানি। সেখানে খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গ আসায় হাইকোর্টে হট্টগোল ও হাতাহাতি করেছেন বিএনপি ও বাদী পক্ষের আইনজীবীরা। এর এক পর্যায়ে বিএনপির সংরক্ষিত আসনের মহিলা এমপি (পাপিয়া) প্রিন্টারের ট্রেটি ছুড়ে মারেন আদালতের বিচারকের দিকে। কিন্তু সেটা ফ্যানে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে বিচারকের শরীরে লাগে নাই। এই হল আমাদের দেশের আইন প্রনেতা ও আইনজীবিদের আচরনের একটি ছোট্র নমুনা্। এর মাধ্যমে ঐ এমপি যা বুঝাতে চেয়েছেন তা হল এভাবেই সংবিধান খালেদা "ছুড়ে" ফেলে দিবেন, প্রয়োজনে বিচারককে ডেকে তার উপড়ও ছুড়ে ফেলা হতে পারে !
এরা আবার বলেন আইনের শাসন দিবেন, ন্যায় বিচার নিশ্চিত করবেন, দুর্নীতি থাকবেনা, স্বজপ্রিতি থাকবেনা, কেউ না খেয়ে মারা যাবেনা, চুরি-ডাকাতি থাকবেনা, আইন-শৃঙ্খলার ভাল রাখবেন, কোন রকম অন্যায়-অবিচার থাকবে না ইত্যাদি। এটাই তার নমুনা।
আমিনী সংবিধার ডাষ্টবিনে ছুড়ে ফেলার আগে যার রেফারেন্স উল্লেখ করে বক্তব্যটা গত ১৪ই জুলাই রাজধানীর লালবাগ এলাকায় জামিয়া আরাবিয়া কোরআনিয়া মাদ্রাসায় এক আলোচনা সভায় মুফতি আমিনী সংশোধিত সংবিধানকে ডাস্টবিনে ফেলার কথা বলেন। সেখানে তিনি খালেদার বক্তব্যকে রেফারেন্স হিসাবে উল্লেখ্য করে ছিলেন। তিনি খালেদাকে ধন্যবাদ জানিয়ে, খালেদার বক্তব্যের সূত্র ধরেই বলেছিলেন যে "শুধু ছুড়ে নয়, এ সংবিধান ডাস্টবিলে ছুড়ে ফেলা হবে।" তাহলে আমিনীর হাজিরায় খালেদার প্রসঙ্গ আসাটাইতো স্বাভাবিক। কিন্তু বিএনপির আইনজীবিদের মহান আবদার এখানে খালেদাকে টানা যাবেনা। উৎপত্তিকে বাদ দিয়েতো আর মাথা নিয়ে টানাটানি করার মানে নেই। যেখান হতে এ ধরনের জঘন্য বক্তব্যের জন্ম, যিনি এর জন্মদাত্রী তাকে কিভাবে বাদ দিবে আদালত ? আর এখানেই হল সমস্যা। ফলে ছুড়ে মারা হল ট্রে। গালাগাল করা হল । হলো জঘন্য ভাষায় মিছিল। যেমন: 'কালা মানিকের চামড়া তুলে নেবো আমরা', 'ঘাদানি মানিকের আদেশ মানি না মানবো না', 'কালা মানিকের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে' স্লোগান দিতে থাকেন। এরাই আমাদের দেশের বিখ্যাত সব আইনজীবিদ্বয় ও তাদের সহোযোগী।
আমরা আদালতে এ ধরনের জঘন্য ভাষার ব্যবহার, মিছিল, হট্রোগোল, ঢিল ছোড়া সহ সকল অবৈধ কার্যকলাপের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সাথে সাথে যে বা যারা এধরনের কাজের সাথে যুক্ত তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
বিস্তারিত খবর: বিজয় নিউজ২৪.কম –সংবিধান ছুড়ে ফেলার মামলায় বিচারককে ট্রে ছুড়ে মারলেন বিএনপির আইনজীবী
মানব জমিন- আদালতে হট্টগোল হাতাহাতি