নব্য রাজাকারদের বিষদাঁত ভেঙে দেয়ার এখনই সময়

মাধুরী শিকদার
Published : 22 Feb 2013, 04:48 AM
Updated : 22 Feb 2013, 04:48 AM

সামাজিক যোগাযোগের সাইট থাকায় খুব সহজেই আমি কিছু নব্য রাজাকারদের সন্ধান পেয়েছি। বিশেষ করে শাহাবাগ নবজাগরণ এর পর আরো বেশি করে। হিন্দু ঘরে জন্ম নেয়ায় জামাত-শিবির কোন আত্মীয় থাকবেনা এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই সামাজিক যোগাযোগের সাইট বিশেষ করে ফেইসবুক আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। উল্লেখযোগ্য ২টা ঘটনার কথা উল্লেখ না করলেই নয়।

ঘটনা ১। আমার স্বল্পপরিচিত এক ফেইসবুক ব্যবহারকারী শাহাবাগ চত্বরে জড়ো হওয়া আন্দোলনকারী মেয়েদেরকে পতিতা বলে দাবি করেছে। সাথে সাথে যে অন্যায় রাজাকাররা (খুন/ধর্ষণ সহ অন্যান্য মানবতাবিরোধী কর্মকান্ড) করেছে, এই ছেলে তারই একটা করার ইঙ্গিত দিয়েছে শাহাবাগে অবস্থানরত নারী আন্দোলনকারীদের। সে নাকি শোক আর দু:খে টিভিতে সব খবর দেখা বন্ধ করে দিয়েছে, এমনকি পত্রিকাও খোলেনা। দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে রাজাকার বলায় তার নাকি সব কিছু তছনছ করে দিতে ইচ্ছা করছে।

ঘটনা২। আমারই এক ফেসবুকের বন্ধু (আসলে নব্য রাজাকার, বন্ধু না বলে মুখে থুথু দিতে ইচ্ছা করছে), েয কিনা বেশ কিছু দিন ধরে আমার ফেসবুক ওয়ালএ বিভিন্নরকম নেতিবাচক কথা বলে আসছিল আমি শাহাবাগ আন্দোলনকে সমর্থন করছি বলে। আমি প্রতিদিনই তাকে স্বাভাবিক ভাবে তার কথার উক্কর দিয়েছি। কিন্ত সে আমাকে বারবার সীমান্ত হত্যা আর দ্রব্যমূল্য নিয়ে আন্দোলন হচ্ছেনা কেন সেটা বলতে লগল। তো আমি তাকে বললাম সেই একই চেতনার কথা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, আমাদের মাতৃভূমির উথ্থানের সময়কালীন বেঈমানদের আমরা আর কোন রকম ছাড় দিতে চাই না, এই জাতীয় অনেককিছু। সাথে বললাম যে, এই সব ইস্যু নিয়ে যদি তোর মনে হয় আন্দোলন করা উচিত সেটা তুইই শুরু কর। কিন্তু সময় পেরোনোর সাথে সাথে ঐ ছেলে আরো বেশী বেপরোয়া হয়ে উঠল। আর আমাকে বারবার একই কখা বলতে লাগল যে, "যে যুদ্ধটা তুই দেখিসই নি, সেইটা নিয়ে তুই কেন এত মাথা ঘামাচ্ছিস? জামাত তোর কি ক্ষতি করেছে? অন্ধের মত আচরণ কেন করছিস? তুই অনেক বুদ্ধিমতি, তোর কাছ থেকে আমি এটা আশা করিনি", এই জাতীয় হাজারো উস্কানি। আমি যত বেশী মাথা ঠান্ডা রেখে যুক্তি দেখাচ্ছি, সে তত বেশি খেপে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে আমি তাকে বললাম যে, " তুই আল্লাহকে কিভাবে বিশ্বাস করিস, তাকেতো তুই দেখিসনি" (এটা অনেক পরের কথা)। এবার সে শুরু করলো আমার ধর্ম নিয়ে বাজে কথা বলা। হিন্দু ধর্মের সব গ্রন্থ গুলো নাকি আমরা নিজেরা লিখে লিখে প্রচার করে বেড়াচ্ছি। আরো অনেক উস্কানি। সাথে বললো আমি নাকি ভারতের দালাল। আর আমরা হিন্দুরা ১৯৭১ এ এদেশের অনেক ক্ষতি করেছি আর এখনো করছি। আর, আমাদের জন্যই নাকি দেশটার এই অবস্থা। এই কথা শোনার পর আমি যখন তার উপর ক্ষেপে গেলাম, এবার সে আমাকে হুমকি দিলো আমাকে দেখে নেবে বলে। বলল, আমার ভালো হবে না। আমিও তাকে বলেছি, তোরাতো এটাই পারবি রাজীবের মত আমার অবস্থা করতে। কিন্তু সামনে আসতে পারবি না। কারণ তোরা জানিস যে, তোরা হেরে যাবি। তাই ভয় পেয়ে আমার মত সাধারণ একটা মেয়ের পিছনে লেগেছিস। আর সহ্য করতে না পেরে তাকে ফেসবুক থেকে ব্লক করে দিতে বাধ্য হলাম।

এখন পাঠকদের কাছে আমি একটা বিষয় ছেড়ে দিচ্ছি, ১৯৭১ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত হিন্দুরা বাংলাদেশের কতটা ক্ষতি করেছে, কিংবা কি কি ক্ষতি করেছে? যদি আপনাদের জানা থাকে. প্লীজ আমার পোষ্ট এ কমেন্টে আমি সেটা জানতে চাই।

আর দ্বিতীয়ত, ব্লগারদের জীবনের নিরাপত্তা এখন অনেক কম। আমি কি এটা ধরে নিবো যে, আজ থেকে আমিও নিরাপত্তাহীনতার দলে?

উপরিউক্ত লেখার পর আমি এটা বলব যে, আমার আগের লেখারই পথ ধরে জামাত-শিবির ভয় পেয়েছে। আর ভয় পেয়েছে বলেই এত্ত সব টালবাহানা শুরু করেছে। আমরা ভয় পাইনা কিছুতেই। প্রজন্ম চত্বরে স্বশরীরে গিয়েই হোক আর কম্পিউটারএর কি-বোর্ড থেকেই হোক আমি রাজাকার সহ লক্ষ-কোটি নব্য রাজাকারদের আস্তানাও আমরা ভেঙে জ্বালিয়ে দিতে চাই। আর সেই সময় এখনই। যখন সারা দেশের এবং দেশের বাইরের বাংগালী জাতি এক দাবিতে একাত্ব হয়েছে, তখন তার সাথে সাথে নব্য রাজাকারদের বিষদাঁত গুলো ভেঙে দেয়ার জন্য মহার্ঘ্য সময় আর কি হতে পারে?

সেই শুভ দিনের অপেক্ষায়, নতুন এক মুক্তির আলোয় আলোকিত হওয়ার জন্য নতুন সূর্যোদয়ের অপেক্ষায় আছি আমি, আমরা, মানবতাবাদী সমস্ত বাঙালী জাতি।