মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র নিকট একটি ছোট আবদার

মোঃ তানভীর সাজেদিন নির্ঝর
Published : 3 Oct 2012, 03:16 AM
Updated : 3 Oct 2012, 03:16 AM

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি যে মুহূর্তে জাতিসংঘের অধিবেশনে দেশের বাইরে ঠিক সেই মুহূর্তেই গত শনিবার ও রবিবার কক্সবাজারের রামু,উখিয়া,টেকনাফে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজনের উপর সাম্প্রদায়িকতার যে ঘূর্ণিঝড় তাঁদের সব কিছুকে লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেছে সে সম্পর্কে আপনি সম্যক অবগত আছেন। আজ তাঁদের মাথা গুজার ঠাই নেই, প্রার্থনা করার উপাসনালয় নেই, সহানুভূতি দেখানোর কেউ নেই। যারা সহানুভূতি দেখাচ্ছেন তাঁরা এ ব্যাপারে যথেষ্ট আন্তরিক কিন্তু ওখানে গিয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর মতো সামর্থ্য অনেকেরই নেই। যদিও আপনার মন্ত্রীসভার দুজন মন্ত্রী ও একজন প্রতিমন্ত্রী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন,ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তথাপি দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনি আমাদের অভিভাবক। আর অন্য সব ঘটনার মতো এ ঘটনাটি বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়। এই একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা শুধু বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় মানুষের মনেই আঘাত হানে নি বরং গণমাধ্যমের মারফত বিশ্বে সকল শান্তিপ্রিয় মানুষের মনে চরমভাবে আঘাত হেনেছে এ বর্বরতা।

জানি আপনাকেও প্রচণ্ড ব্যস্ততার কারনে কর্মব্যস্ত দিন কাটাতে হয় কিন্তু আপনি তো তাঁদেরও অভিভাবক। আপনি আপনার উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করেছেন এবং দোষীদের শাস্তি দেয়ার নির্দেশও দিয়েছেন, কিন্তু একটু সময় করে বেশী না যদি ১ বা ২ ঘন্টার জন্য ঐ ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় গিয়ে তাঁদের মাথায় সহানুভূতির হাতখানা বুলিয়ে ঐখানে বসেই প্রশাসন কে কঠোর নির্দেশ দিতেন যে, বিশৃঙ্খলা যে বা যে দলের লোকজন করুক না কেন শাস্তি হবেই তবে ঐ ভীত আতঙ্কিত মানুষগুলো'র মনের কষ্ট একটু হলেও প্রশমিত হত। আজ তাঁরা অসহায়ের মতো আপনার মুখের দিকে তীর্থের কাকের মতো চেয়ে আছে। আর আপনার তো যেতে বেশী সময় লাগবে না, কারন রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে আপনি সহজেই হেলিকপ্টারে যাতায়াত করতে পারবেন।

আজ বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে, আমি শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি তিনি ছুটে যেতেন তার দেশের নির্যাতিত মানুষের কাছে তা যেভাবেই হোক আর যত ব্যস্ততাই থাক না কেন। এমন একজন পিতার সন্তানের কাছ থেকে আমরা এতটুকু আশা না, আবদার করতেই পারি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার কাছে আকুল আবেদন মানবতার প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা দেখিয়ে, একজন অভিভাবক হিসেবে, একজন রাষ্ট্র নায়ক হিসেবে এবং সর্বোপরি একজন মা হিসেবে একটি বারের জন্য হলেও স্বচক্ষে গিয়ে দেখে আসুন আর ক্ষতিগ্রস্থদের মাথায় একটু সান্ত্বনার হাত বুলিয়ে আসুন। কোন স্বার্থের জন্য না,ভোটের আশায় না শুধু মানবতার তাগিদে আপনি একটু আন্তরিক হোন, সৃষ্টিকর্তাও আপনার প্রতি সহায় হবেন। আর হামলাকারীরা যে বা যারাই হোক তাঁদের দ্রুত বিচারের ব্যাবস্থা করুন।

মহান আল্লাহ্‌ আপনার মঙ্গল করুন, এই প্রত্যাশায়

–আমরা বাংলার শান্তিপ্রিয় জনতা।