বিজয়ের মাসে রাজাকারদের বাঁচাতে হরতাল, অন্যদিকে সুশীলগণ ঘুমে মাতাল

মোঃ তানভীর সাজেদিন নির্ঝর
Published : 4 Dec 2012, 06:32 AM
Updated : 4 Dec 2012, 06:32 AM

মীরজাফর, ঘষেটি বেগম, ইয়াহিয়াদের উত্তরসূরিরা সেই ১৯৭১ থেকেই সক্রিয় বাংলার স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নস্যাত করার ষড়যন্ত্র। এই বাংলাদেশের স্বাধীন হওয়ার পথে এমন কোন ন্যাক্ক্যারজনক কাজ নেই যা ঐ ঘাতকের দল করে নাই। অবশেষে ওদের পরাজিত করে ৭১ এর ডিসেম্বরে যখন বাংলার স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিলো, পাক হানাদাররা আত্মসমর্পন করেছিলো সেই ডিসেম্বরকে আজও ভুলতে পারে নাই ঐ দেশদ্রোহীর দল। একটি বিশেষ বাংলা মাসে কুকুর যেমন পাগলা হয়ে উঠে ঠিক তেমনই ডিসেম্বর এলে ওরাও পাগলা হয়ে উঠে। শুধু ব্যাতিক্রম হয়েছিলো ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত। এই সময়কালে লাল সবুজের পতাকাতলে আশ্রয় নিয়ে পাগলামিটা ওরা করেছে একটু অন্যভাবে। ৭৫ এর ধারাবাহিকতায় তৎকালীন সরকারের একাধিক প্রভাবশালী মন্ত্রির সহযোগিতায় কম চেষ্টা করে নাই জাতির জনকের পরিবারের অবশিষ্ট যারা আছেন তাঁদের হত্যা করতে, স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করতে। ওরা মনে প্রানে বিশ্বাস করতো যদি মুজিব পরিবারের কেউ বেঁচে না থাকে তবেই কেল্লা ফতে মানে বাংলা কে করবে মিনি আফগান আর ইসলামের লেবাসে দেদারছে মানুষ হত্যা, নির্যাতন, চাঁদাবাজি চালিয়ে যাবে কোরআন হাদিস কে ঢাল সরুপ ব্যাবহার করে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার কি বিচার! তিনি সফল হতে দেননি ঐ ধর্মান্ধদের যারা শান্তির ধর্ম ইসলামকে পুঁজি করে ক্ষমতা হাসিলের লক্ষ্যে অনবরত সন্ত্রাস নৈরাজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।

২০০৮এর জাতীয় নির্বাচনে এ এসে জোটবদ্ধ ভরাডুবির পর ওদের চেয়ে বেশী বেসামাল হয়ে পড়ে ওদের আশ্রয় প্রশ্রয় দাতারা। তাঁরা আবারো জোটবদ্ধ হয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার দিবাস্বপ্ন যখনই সবে দেখা শুরু করেছিলো তখনই ওদের উপর নেমে আসে আরেক আসমানি গজব মানে ৭১ এ কৃত কুকর্মের জন্য ওদের উপর মহলের নেতাদের শুরু হয় বিচার মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে। নিমিষেই ভেঙ্গে যায় দিবাস্বপ্ন আর এবার আরো হিংস্র হয়ে ওঠে ওদের জল্লাদি আচরণ; সাথে পরোক্ষভাবে ওদের সাফাই গাওয়া শুরু করলেন নব্য সুশীল সম্প্রদায়ের কিছু স্বার্থান্বেষী কীট। মধ্য রাতের নির্ঘুম টক শো, বিদেশি তদ্বির, দেশের অভ্যন্তরীণ আইন শৃঙ্খলা ভংগ ও এর সাথে এমন কোন অপচেষ্টা নেই যা ওরা করে নাই এই বিচার বানচাল করতে। শেষ মুহূর্তে এসে ওরা বাদ দেয়নি প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা কর্মচারীদেরও, তাঁদের উপর হামলা করেছে সাথে সরকারি হাতিয়ারও ছিনিয়ে নিয়েছে।

এতো দীর্ঘ অতীত পেরিয়ে আজ বাঙ্গালী জাতি আজ আরেকটি বিজয় উৎসবের দ্বারপ্রান্তে। ওদের মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারও প্রায় শেষের পথে। তাই এই বিজয়ের মাসকেই বেছে নিলো ওরা মরণ কামড় দেয়ার লক্ষ্যে আর ওদের সাথে যারা হাত মেলালেন তাঁদের দলেও একাধিক মুক্তিযোদ্ধা বিদ্যমান। আর সাথে তো সুযোগ সন্ধানী বহু সুশীলের চাটুকারিতা আছেই যারা রাত জেগে টক শো করেন আর দিনের বেলায় নিদ্রা যাপন করে দিন কাটান। এই অপশক্তির দলের ইন্ধনে ওরা ইতিমধ্যে বিজয়ের মাসে রাজাকারদের বাঁচাতে কর্মসূচী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে অবরোধ, হরতাল আর অন্যদিকে রাতজাগা সুশীলরা ঘুমে মাতাল।

সবাই ঘুমিয়ে গেলেও জেগে থাকবো লাখো শহীদের রক্তের অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত মোরা বঙ্গ মায়ের সন্তানেরা। শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও চেষ্টা করে যাবো ইনশাআল্লাহ্‌। ৭১এ নির্যাতিত-ধর্ষিত মা-বোনের কাপড়ের টুকরো হবে আমাদের দাফনের কাফন কিন্তু কসম বিচার ওদের হবেই, শাস্তি ওদের হবেই এই স্বাধীন বাংলার মাটিতে।