এ যে সত্যি-ই সেলুকাস রাজনীতির চাল

নুরুন্নাহার শিরীন
Published : 5 Jan 2015, 07:31 AM
Updated : 5 Jan 2015, 07:31 AM

গতকাল হতেই গুলশানের নেত্রীর মানে – বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় লোকজন তামাশা দেখতে বিষম উৎসুক। পুলিশ-ফুলিশ-গোপালিদের অানাগোনায় সরগরম সেই এলাকা। অার সাংবাদিকগণের নেত্রীর কার্যালয়ের সামনের গাছের ডালে দাঁড়িয়ে ক্যামেরা সমেত তাক করেই থাকা – দৃশ্যটি কি অভাবিত। যদিও এমন অারও একবার দেখেছে লোকজন। সেদিন এইরকম পরিস্থিতির পরে যা ঘটেছিলো সেটিও লোকজনের – অর্থাৎ এই দেশের জনসাধারণের সম্পৃক্ততায় কারণে না, অপরাজনীতির কারণেই। সত্যি-ই সেলুকাস ! অাশপাশ পুলিশি ঘেরাও – তারই মাঝে সাংবাদিকদের অতি উৎসাহের মহাব্যাস্ত ক্যামেরা তাক – কোথায় নেত্রী? তিনি কি তবে অফিসবন্দী? বিএনপি নেত্রীর কথা বলা বা ভাষণ বারণ? অর্বাচীন অামার কি অার ধারণা করাও সম্ভব – এই উদ্ভট রাজনীতির চালাকি বুঝি? তেমন রাজনৈতিক বিদ্যাবুদ্ধি রাখিনা অামি।

কেবল একটুখানি প্রশ্নের মুখোমুখি – নেত্রীর কার্যালয়ের সামনে দিয়া হাঁটার কালে – বিচিত্র দৃশ্যটা দেখেই প্রশ্ন জেগেছে মনে –
নেত্রী-ই যদি তাহলে ভয় কি উনার? এইসব পুলিশ-ফুলিশ-গোপালিদের ভয় পাওয়া নেত্রীকে মানায়? নেত্রী কোথায় – কি কারণে উনার মুখে কুলুপ – জানা জরুরী অাজ। তাইতো উনার বাড়ির সামনে ভিড় – ব্যাপক অায়োজন – যদিও ধরপাকড়ের কোনও দৃশ্য না দেখে হতাশ লোকজন এবঙ উৎসাহী সাংবাদিকগণ ! সবার ধৈর্য ধারণ দেখে একটা অাশাব্যাঞ্জক বিশ্বাস জন্মালো এই যে – জাতি হিসেবে বাংলাদেশের লোকজন অাদতে ধৈর্যশীল একটি জাতি। অথচ, অাজকের রাজনীতিবিদগণের কাছে এমন ধৈর্যশীল জাতির মূল্যায়ন হয়না ! একদা এইদেশের রাজনীতিবিদগণ কিন্তু জাতির চাওয়া-পাওয়া বুঝতেন বলেই এদেশে মহান নেতা-নেত্রী জন্মেছেন ও জাতিকে দিক নির্দেশনাও দিয়েছেন সঠিক। অাজ তাইতো স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়ে অদ্ভুত রাজনীতিবিদগণ যেমন খুশি রাজনীতির চাল চালেন ! একজন বলেন – কাজও করেন কিছু কম না – অন্যজন কাজের কাজ না করে হুমকি-ধমকি দেন (বাংলাদেশের চালিকাশক্তি – নেত্রীদ্বয় – খালেদা জিয়া এবঙ শেখ হাসিনা) ! বিগত কয়েক বছর দুই নেত্রীর দুই মেরুর নীতিতেই বাংলাদেশ চলমান। যাহোক, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনা করে যাচ্ছেন দাপটেই। বহির্বিশ্বের সাপোর্ট পাচ্ছেন। অন্যদিকে খালেদা জিয়া দলের নেতা-কর্মী এবঙ পুত্রধন তারেক জিয়ার চরম বেসামাল বচনে কোণঠাসা বলাই যায়। এমতাবস্থায় নেত্রীসুলভ বিচক্ষণ অাচরণও অনুপস্থিত। হয়তো পরামর্শকগণও নেত্রীকে ঠিক পরামর্শটি দিতে অক্ষম। অামার এমন মনে হবার কারণটি উনার অাজকের অদ্ভুত মুখে কুলুপ দশা দেখেই।

উনার কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় হেঁটে ফেরার পথে দুজন গোপালিদের সনেও কথা বলেছি। ওরা তেমন কিছু জানেনা। ডিউটি পড়েছে বলে এসেছে। ওদের তারুণ্যময় স্মার্টনেস অামার বেশ লেগেছে। অাজকের বাংলাদেশের গোপালি খ্যাত নারী-পুলিশরাও দারুণ স্মার্টলি চলে – যা অাগে কখনও দেখিনি। ছবি তুলতে চেয়েছিলাম, ওরাই মানা করলো – "না অাপু, পারমিশন নাই , চাকরী যাবে, বারণ ছবি উঠানো অামাদের , ডিউটিরত অবস্থায়"। অগত্যা অামি নেত্রীর কার্যালয়ের সামনে গাছে ক্যামেরা তাক করার দৃশ্য ধারণ করি অামার মোবাইলে। সেটিই এই লেখায় সংযুক্ত করছি – সিটিজেন জার্নালিজমের সুযোগ পেয়ে – এখানে। এবঙ তারপরেও অাশাবাদ – বাংলাদেশ অপরাজনীতিমুক্ত হবেই একদিন।

*পোস্টটি প্রকাশিত হবার পর একটু সংযোজন করছি – অবশেষে – নেত্রীর অফিস গেইটে গাড়িতেই অবস্থানের দৃশ্যের খবর মিডিয়াতে দেখতে পাই বিকেলে। এক সময় তিনি বেরিয়ে ভাষণদান করেন। যথারীতি পুলিশদের ধমক দিলেন। যথারীতি সরকারকে দোষারপ এবঙ জনগণ তাঁরই ডাকে পাগলপারা – এমন কথাটি বোঝালেন। যথারীতি অাবারও অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধের ডাক দিলেন। অামরা কি বুঝেছি কিছু????????????? *