একজন রাজহংসপ্রিয় মানুষ

নুরুন্নাহার শিরীন
Published : 8 Jan 2015, 08:16 PM
Updated : 8 Jan 2015, 08:16 PM

তিনি একজন রাজহংসপ্রিয় মানুষ। তিনি রোজই পকেট উজার করতে ভালোবাসেন প্রিয় রাজহংসদের জন্য। রোজই বনরুটি একডজন কিনে অনেক ভালোবেসে ওদের খাওয়ান। উনার এমন হংসপ্রিয় বিষয়টি সত্যিই অবাক হবার মতোন। নিজে না খেয়ে অাগে ওদের খাওয়ান। উনার এই হংসপ্রেম গৌতম বুদ্ধের বাণী স্মরণ করিয়ে দেয় –

জীবে দয়া করে যে জন –
সেইজন সেবিছে ঈশ্বর"।।

অথচ, অামরা মানুষ জাতি অবলীলায় ওদের কিনে জবাই করে দারুণ রোস্ট বানিয়ে খাই – বাড়িতে / রেঁস্তোরায় জম্পেশ ডিশে সাজিয়ে টেবিলে পরিবেশন করি এবঙ সপরিবারে / বন্ধুরা মিলে সাবাড় করি ! অাদতে মানুষ জাতিটি বড়ো নিষ্ঠুর। সুদূর সাইবেরিয়া হতে শীতের পাখিদের পর্যন্ত অামরা শিকার করি / বাজারে বিক্রি করতে পারি নির্দ্বিধায়। তবু তারই মাঝে বিস্তর মানুষ অাছেন ব্যতিক্রমধর্মী। রাজহংসপ্রিয় এই মানুষটিকে দেখে শোখার অাছে সবার কি করে ভালোবাসতে হয় দারুণ সুন্দর পঙ্খীরে। ওরা উনার ভালোবাসা পেয়েই পায় অানন্দদিন। এমন কি অামরা পারিনা ওদের ভালোবাসতে এমন করে? কি হয় পাখি বাণিজ্য না করলে? জগতে বাণিজ্যের উপকরণের অভাব অাছে কি?

অাজ সকালে অামার স্বামীর মোবাইলে ধারণকৃত এই ছবিটি দেখে অামার খুব ভালোলেগেছে তাঁকে – রোজই যিনি এভাবে অনেক অাদর করে রাজহংসদের খাওয়ান নিজের পকেটের পয়সা খরচ করেই – বনরুটি একডজন।

এটি একটি শিক্ষনীয় বিষয়। অামরা কি পারি না পাখিদের না খেয়ে / শিকার না বানিয়ে এইভাবে নিঃস্বার্থ ভালোবেসে খাবার খাইয়ে বাঁচিয়ে রাখতে ওদের মতোন করে? ওদের বেঁচে থাকার অধিকার ফিরিয়ে দিতে অামরা কি পারিনা? ওরা যে বাঁচতে চায় বিশাল উদার অাকাশতলে – ওদের মতোন করে – অামাদেরই কিছু ভালোবাসায় ওরাও অানন্দদিন পেয়ে বাঁচতো অঢেল জীবনানন্দে !

পৌষ। ১৪২১ বঙ্গাব্দ।
জানুয়ারী। ২০১৫ সাল।