জনগণের ধৈর্য্যের-সহ্যের সীমা ভাঙার জন্য খালেদা জিয়া আসামী

নুরুন্নাহার শিরীন
Published : 22 Jan 2015, 08:58 PM
Updated : 22 Jan 2015, 08:58 PM

অবস্থা আজ এমন এক অসহ্য পর্যায়ে গেছে যে জনগণের ধৈর্য্য, সহ্যের বাঁধ ভাঙছে। জনগণ এখন একবাক্যে বোমাবাজির জন্য খালেদা জিয়ার বিচার চায়। কারণ খালেদা জিয়ার ডাকা অবরোধের কারণেই বাংলাদেশের মানুষ জিম্মি বোমাবাজির আতংকে। এই অবস্থা চলতে পারে না। তাই খালেদা জিয়ার গ্রেফতারের দাবী উঠেছে সঙ্গত কারণে। এযাবত বোমায় দগ্ধ হয়েছে বহু মানুষ। জীবন্ত পোড়ার জ্বালা, যাতনা নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যাও অনেক। আমরা রোজই সেইসব খবর সচিত্র দেখছি মিডিয়ায়। তারপরেও অনড় খালেদা জিয়া। উনার বিশেষ প্রতিনিধির সর্বশেষ বয়ান – 'নেত্রী বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ চালিয়ে যাবার নির্দেশ দিয়েছেন'!

আমরা হতবাক। উনি কি উন্মাদ একটা নেত্রী? বাংলাদেশে কোন যুদ্ধের বিজয় অর্জন করবার কথাটি ভেবে উনার এই নির্দেশ জারি? অবরোধের ফতোয়া জারির মাধ্যমে কি ম্যাডাম জনগণকে বোমায় জীবন্ত পুড়িয়ে মারবার খেলায় বিজয় অর্জন করে ক্ষমতারোহনের খায়েশে বদ্ধ উন্মাদ আজ? বাংলাদেশের জনগণ কি খালেদা জিয়ার খেলার পুতুল? এত মানুষ বোমায় জীবন্ত দগ্ধ হয়েই চলেছে তবুও উনি অবরোধের বিজয় অর্জন করবার খায়েশে মত্ত? বাংলাদেশে এই রাজনীতির অধিকার উনার কতটুকু সেইটা আজ জনগণই বুঝিয়ে ছাড়বে। জনগণ খেপেছে এমন চিত্রটি আমরা দেখেছি আজ টিভির সব চ্যানেলে। খালেদা জিয়াকে দুই দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে আজ শ্রমিক লীগ, দিনমজুর সহ আরও অনেক সংগঠন। সংসদে খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের দাবী উঠেছে। এটি একটি অত্যন্ত সময়োচিত দাবী। এমন রাজনীতি আমরা প্রিয় বাংলাদেশে দেখিতে চাহি না একদিনও। দুইদিনে আরও কতজন বোমায় জীবন্ত জ্বলবে তার দায় কি খালেদা জিয়ার নয়?

আমরা সরকারের সময়োচিত সিদ্ধান্তটি দেখার অপেক্ষায়। আমরা সরকারকে কঠোর ভূমিকায় দেখতে চাই। জনগণের প্রাণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বোমাবাজির অবসান ঘটাতে জরুরী যা-যা করণীয় তা করতে কালক্ষেপণ করা চাই না। তা নাহলে আরও প্রাণের জীবন্ত দগ্ধ হবার জন্য সরকারও দায়ী থাকবে। অবরোধ, হরতালের রাজনীতি জনগণের জানমালের, জীবন ধারণের উপর এক ভয়ংকর হুমকি, হামলা আজ। জনগণের নিরাপত্তার দায়িত্বভার সরকারের বলেই সরকারের কঠোর ভূমিকা ব্যাতীত অন্য উপায় নাই। বাংলাদেশের অবস্থা আজ কয়েকদিনের ভিতর এক বোমাবাজির বাংলাদেশ হিসেবে দেখছে সবাই। এমন বাংলাদেশ কেউ চাই না। আমরা আমাদের নিজের, সন্তান-সন্ততির, সবার স্বাভাবিক জীবন যাপনের অধিকারটি চাই। একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিক অবরোধের রাজনীতির বোমার আতংকে থাকবে কেন? শিশুর ইশকুল যাওয়া বন্ধ করার রাজনীতি চাই না। দিনমজুরের রুজি-রোজগারের উপর খাড়া পড়ার রাজনীতি চাই না। যে রাজনীতি জনগণের ভোগান্তির কারণ, মৃত্যুর কারণ, দগ্ধতার কারণ সেই রাজনীতির নেতা / নেত্রীর গ্রেফতারের দাবীটি সমুচিত একটি দাবী। এবঙ বিচারের দাবীও যৌক্তিক। বোমার রাজনীতি বন্ধের জন্য যা করণীয় তা করার দায়িত্ব নিশ্চয় সরকারের।

ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সেনা বাহিনীরও কঠোর হবার বার্তা পাওয়া গেছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে দ্রুত জনগণের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নেওয়া হবে এমন বার্তা প্রকাশ করেছে মিডিয়া। টিভি চ্যানেলগুলি নাশকতার বিরুদ্ধে খবর প্রচারে একমত হয়েছে এই খবরটিও আশাব্যাঞ্জক। আমরা সাধুবাদ জানাই। অচিরেই বাংলাদেশ হতে সকল সহিংস রাজনীতির অবসান ঘটবে বলে আমরা আশাবাদী। জয়তু প্রিয় বাংলাদেশ।

২২ শে জানুয়ারী। ২০১৫ সাল।