পড়ন্ত বিকেলে জানলাতলে

নুরুন্নাহার শিরীন
Published : 28 April 2015, 08:02 PM
Updated : 28 April 2015, 08:02 PM

সেদিন ভূকম্পনের কাঁপন ধরা অনুভবের রেশ যায়নি তখনও – হঠাৎ বিকেল নাবতে দেখি -জানলাতল অালো করেই দারুণ এমন ছবি ! সে যেন ভুলিয়ে দিতেই এসেছে জগত হতে সকল কম্পমান ঝাকুনি। তাই অামার খোলা জানলাতলে সে এসেছে এমন করে অাকুল করা ছবিটি হয়ে ! অামি কি তাহারে ক্লিক না করে পারি ! করেছি তাই।

অাদতে জীবন সে বড়ো হাতছানিময়। সে খুব ছবিময়। তাইতো – "যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ অাশ" প্রবাদটি যে কতটা সত্য বুঝতে শিখি। বুঝি যে এ জীবন মায়াবী ছবিভর্তি বলেই মানুষ জীবনপ্রিয় এত। মানুষ তাই কবিতা লেখে ছবিরা অাছে বলেই। রঙে-রঙে রঙিন করা ক্যানভাসের ছবি মানুষ দেখে দারুণ মুগ্ধতায় ছবিরা অাছে বলেই।

হ্যাঁ, এইসব ছবিরা অাছে বলেই অামিও খানিক উজ্জীবিত হবার জন্য এ হাতে কালি ও কলম নিই – ছবিরা অাসে অামার জীবনের হাজার স্মতিময়তা জাগিয়ে দিয়ে। তখন কবিতা না কি হয় – না বুঝেই কিছু না কিছু লিখতে বসি। সেসব লেখার কিছুটা প্রকাশিত। কিছু বা অপ্রকাশিত। সম্প্রতি সেইসব ছবির মুহূর্তের লেখালিখির কতিপয় অধ্যায় নিয়ে "জীবনপুঁথি" – নামের একটা কাব্য লিখতে চেয়েছি – সেখানে ছবিরাই কেবল কথা বলতে চেয়েছে বলেই অামি তাদের কৃতিত্ব পুরোপুরিই ছবিদের দেবার পক্ষপাতি। সে যদি সত্যি জীবনপুঁথি হয় – কারও মনে তেমন রেখাপাত করতে পারে – ছবিদেরই কৃতিত্ব ভাববো অামি। অামার লেখা ছবির মুহূর্তের জীবনপুঁথির একটা যদি না দিই এই লেখায় – তবে তা হয়তো এই লেখার প্রতি একটু অন্যায় হয়েই যায় – দিলাম তাই জীবনপুঁথি পর্বের দশম কাব্য প্রয়াস *

তারপরও বাঁচিয়ে রাখি সম্বল-কম্বল ভাবগুলি –
ভাবের ডানায় গুঁজে রাখি স্মৃতিদের গ্রামগুলি।
অতঃপর অামাদের তোমাদের মুখপানে –
না চেয়ে ভাবের চোখে পাই জীবনের মানে।
বলি, সবকিছু উঁচুলয়ে বাঁধতে হয়না সবখানে।
হয়তো হারায় তাতে নীচুলয়ে বাঁশিটির মানে।
বাঁশি শুনে অার কাজ নেই –
মনের কথা না মোটে। মন ধায় বাঁশিতেই …
বলি, তবে ঝেড়ে ফেলো মুখভার-মনভার …
দেখো সন্ধের সুশান্ত যত না দেখা পাহাড়।
বলি, সব ছুঁয়ে ফেলাতেও নেই না ছোঁয়ার সুখ –
বোঝেনা মানুষ তাই সুখের অসুখ।
যদি ফেরা যেতো সেই শিশুতোষ গাঁয়ে –
হয়তো প্রাণান্ত না পাওয়া ফিরতোই পায়েপায়ে। *************

ভাবাই সার। অাদতে চলে যাওয়া কিছুতেই ফেরেনা অার জীবনে। এ খুব সহজ সত্য। মানতে কষ্ট হলেও সত্য। কঠিন করে বুঝিয়ে দিয়ে যাওয়া সত্য। তবুও মানুষ কঠিন সত্য বুঝেও এড়িয়ে যেেতেই ভালোবাসে অনেকে। অনেকে অাবার তারেই অাঁকড়ে একটা জীবন পার করতে গিয়ে হঠাৎ পায় স্মরণ কালের ছবির মুহূর্তরে। তখন ছবিদের কবিতা অথবা শুধুই ছবি হওয়া কারও-কারও হাতে। তেমন মুহূর্তরা জীবনে অাসে বলেই ছবিরা হয়তো কবিতায় বাঁচতে চায়। বাঁচতে চায় কোনও শিল্পিত ছরির মাঝে। অামার এমন ধারণা শুধু অামারে তেমন ছবির মুহূর্তরে নিয়েই কখনও হঠাৎ কিছু লিখিয়ে ফেলে !

(*জীবনপুঁথি।। পৃষ্ঠা ১৮*)

বৈশাখ। ১৪২২ বঙ্গাব্দ।
ঢাকা। বাংলাদেশ।