আজ বিশ্ব আবহাওয়া দিবস

নুরুন্নাহার শিরীন
Published : 23 March 2012, 12:31 PM
Updated : 23 March 2012, 12:31 PM

এইমাত্র দুপুরের খবরে শুনলাম আজ বিশ্ব আবহাওয়া দিবস। যার প্রতিপাদ্য বিষয়ঃ সুরক্ষিত ভবিষ্যতের জন্য আবহাওয়া-জলবায়ু-পানির সুষ্ঠু ব্যবহার। বিশেষজ্ঞরা ৫০ বছরের গড় হিসেবকে "জলবায়ু"-র হিসেব ধরেন। তো, সে নিরিখে জলবায়ুর ক্রমাগত পরিবর্তনে পরিবেশ-সাস্থ্য ঝুঁকিতে বাংলাদেশ অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। বাংলাদেশে এযাবত ঘটে যাওয়া / ঘটমান বহুবিধ পরিবেশ-দূষণসহ প্রাকৃতিক দূর্যোগই তার প্রমাণ।

উইকি-র তথ্য মতে ১৯৫০ সালের ২৩ মার্চ বিশ্ব আবহাওয়া দিবস গঠিত হয়। এবঙ ১৯৫১ সালে জাতিসঙ্ঘ তার স্বীকৃতি প্রদান করে। তারপর থেকেই দিবসটি বিশ্বে পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও অন্যন্য সঙ্গঠন বিশেষ কর্মসূচী নিয়েছে। আদতেই জলবায়ুর ক্রমাগত পরিবর্তন ও তার প্রভাবে বাংলাদেশ যে শঙ্কাজনক অবস্থানে তার জন্য ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নিয়ে দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগ জরুরী আজ। নইলে বিপর্যয় এড়ানো অসম্ভব। এবঙ সরকারী-বেসরকারী সকল মহলের সন্মিলিত পরিকল্পনা গ্রহণ করে সাস্থ্য-পরিবেশ ঝুঁকির বাড়তি প্রস্তুতি না থাকলে যে কোনও বড় প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবিলা করা কঠিনই কেবল নয় গোটা দেশই ভয়াবহ বিপর্যয়ের শিকার হবে বলে বিশেষজ্ঞরা অনেক আগে থেকেই সতর্ক সংকেত দিয়ে যাচ্ছেন।

অথচ অবস্থা মোটেও সন্তোষজনকতো নয়-ই উপরন্তু বিশেষভাবে হুমকি-র মুখে। সম্প্রতি সারাদেশে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পটি যদি আর দু'চার সেকেন্ড বেশি স্থায়িত্ব নিতো বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ হাজার-হাজার স্থাপনা পাহাড়ি অঞ্চল-চরাঞ্চল বিপর্যস্ত এমন কি ধূলিস্মাত / বিলীন হবারই সম্ভাবনা সমধিক ছিলো। অতএব এখনই যদি পর্যাপ্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গৃহিত না হয় তবে মারাত্মক ধস / ধ্বংস থেকে পরিত্রাণের উপায়ই থাকবেনা।

আবার এও বিষম সত্য যে ক্ষমতাবান বিত্তশালী দেশগুলি তাদের ভাবনাহীন-দায়িত্বহীন ব্যাবসায়িক লাভের স্বার্থ অক্ষুন্ন রাখতেই পরিবেশ দূষণের দায়ভার অগ্রাহ্য করে তার কর্মফলের বোঝা অনুন্নত / উন্নয়শীল দেশগুলির দিকে ঠেলে দিচ্ছে নিত্যই। তাইতো আজ বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়েই চলেছে আর জলবায়ু বিপন্ন হচ্ছে। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশ এর আপন্ন মানুষের পরিণতির কথা তাদের ভাবার বিষয়ই নয় যেন ! যদিও বিশ্ব সন্মেলনও করা হয় বটে কিন্তু ফলাফল শূণ্যের ঘরে ! জানিনা আমাদের ভবিষ্য প্রজন্মের পরিত্রাণের কি উপায় ! বিষয়টি আমায় বেদনাগ্রস্ত করেছে বড়ো আজকের বিশ্ব আবহাওয়া দিবসে। আমাদের সাধের ভালোবাসার বাংলাদেশ ভয়াবহ জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হয়ে বিপর্যয়ে তলিয়ে যাচ্ছে এমন দৃশ্য মাথা থেকে তাড়ানো যাচ্ছেইনা। আমি বিষাদিত বেদনার মেঘে আচ্ছন্ন হয়ে খড়-কুটো ধরে হলেও বাঁচতে ও বাঁচাতে চাই প্রিয় বাংলাদেশ। জানি সে কি আর আমার কাজ ! আর জানি কোনও স্বপ্নহীন-শিশুহীন স্বর্গ চাইনা আমার।

আমার একটি কবিতা দিয়েই নাহয় শেষ হউক আজকের ভাবনা।

শিরোনামঃ নদী ও হৃদি
কতকাল নদীকে রাখিনি নদীর মতোন করে
নদী ভেসে গেছে দূরে।
কতকাল নদীর দুধার থেকে সরাইনি দূষিত জঞ্জাল
পার ধসে খসে গেছে হাজার জীবন কাল।

কাল আবার কি আসে
কি রোদন বাতাসে
ভেসে যাই যদি পারের চে' দূরে !
অকূল আগুনে যদি হৃদি যায় পুড়ে !

কে তারে আবার ঊষর এষণাদিনে
বাতসল্যের জোয়ার দিবে কিনে !
এপার-ওপার একাকার পারে কেউ নেই বলে কে যেন বলছে কেঁদেঃ
ওগো নদী ও প্রিয় গোমতি জ্বলো মরণ অবধি !

হায় এযে আমাদেরই বাংলাহৃদি !
হায় এযে আমাদেরই বাংলাহৃদি !

২৩ মার্চ ২০১২ ইং