একটি মেধার অকাল মৃত্যু ও পারিপার্শ্বিকতা

হানী
Published : 7 March 2011, 07:58 AM
Updated : 7 March 2011, 07:58 AM

০৬/০৩/১১। ঝরে গেল একটি মেধা। কেউ ধরে রাখতে পারলো না তাকে। বাবার বড় আশা ছিল, ছেলে আর এক বছর পরেই লেখা-পড়া শেষ করে বের হবে, পরিবারের হাল ধরবে। সব কিছু স্বপ্নই রয়ে গেল।

গত ০৫/০৩/১১ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের এফ রহমান হলের ছাত্ররা নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও -এ বেড়াতে যায়। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ইশা খাঁ তে করে ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পথিমধ্যে হিমালয় পরিবহনের লোকেরা জোর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে সাধারণ যাত্রীদের তুলতে চায়। এ নিয়ে প্রথমে বাসের মামাদের সাথে এর পরে ছাত্রদের সাথে বাক-বিতণ্ডা হয়। পরে বাস মতিঝিলে এলে হিমালয়ের একটি বাসকে আটকানোর চেষ্টা করা হয়। এক পর্যায়ে হিমালয় পরিবহনের লোকেরা লাঠি-সোটা নিয়ে আক্রমণ চালায়। ছাত্রদের মধ্যে মাস্টার্সের রেজওয়ান, তৃতীয় বর্ষের জিসান,ওজায়ের ও মমিন আহত হয়। তারা রেজওয়ানকে পিটিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে রাখে। ( অথচ মিডিয়া জানিয়েছে যে, ট্রাকে চাপা পড়েছে )। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থা খারাপ হলে ধানমন্ডির এক হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে রাত ১২.৩০ এর দিকে মারা যান। তার সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য হারুন অর রশিদ স্যার বলেন " পুলিশের সামনে ছাত্রটি অনেকক্ষণ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল বলে শুনেছি। পুলিশ ইচ্ছা করলে তাকে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা দিতে পারত।"

তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে রাতেই ছাত্র ও শিক্ষকরা ছুটে যান। পরে সকালে বিভাগের সব ছাত্র এসে কলাভবনের সামনে জমায়েত হয়। সেখান থেকে সবাই শাহবাগ চলে যায় বিক্ষোভ করতে।
জানাযা কেন্দ্রীয় মসজিদে হওয়ার কথা থাকলেও পুলিশি পাহারা দিয়ে লাশ গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এতে ছাত্ররা আরো ক্ষুব্ধ হয়।

আরেক জন ছাত্র জহিরুল হক জিসান। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হয়। অবস্থা খারাপ হলে সি এম এইচ এ নেয়া হয়েছে।

এদিকে প্রশাসন সহ বিভিন্ন মহলের বৈরিতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রশাসন এটাকে আমলেই নেয়নি। পরে ছাত্ররা দাবি-দাওয়া উত্থাপন করার পর উপাচার্য দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। দাবি-দাওয়া পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ছাত্ররা ক্লাস করবে না বলে জানিয়েছে। দাবির মধ্যে রয়েছে , হত্যার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও ঢাবি এলাকায় বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধ।

গতকালের প্রেক্ষাপটে আজ সকাল থেকে ক্যাম্পাসে বাইরের কোন গাড়ি চলতে দেখা যায় নি। শুধু রিক্সা ও ক্যাম্পাসের স্টিকার যুক্ত গাড়ি চলাচল করছে। আশা করা হচ্ছে , প্রশাসন তাদের আশ্বাস অনুযায়ী কাজ করবে নতুবা বিক্ষোভ চলতেই থাকবে।