ধর্ষনের বর্ষণে পরিবেশটা ক্রমশ ভারী হয়ে উঠছে। সমীকরণ বলে বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে দশজন নারী-শিশু ধর্ষনের শিকার হচ্ছে। কয়টার বিচার হয় বলতে পারবেন? বিচারহীনতা অপরাধ কে ক্রমশ বৃদ্ধি করছে। যেদিন তনুকে জাতি ভুলে গেছে, যেদিন তনুর মেডিকেল রিপোর্ট নিয়ে করেছিল কারচুপি সেদিনই বুঝে গেছি। জাতি বুঝে গেছে। অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া পূর্ণিমাকে যখন ধর্ষণ করা হয় এতো লোক দেখে ভয়ে পূর্ণিমার মা বলেছিল, আমার মেয়েটা ছোট, মরে যাবে, তোমরা একজন একজন যাও। এদেশে ধর্ষিতা ঘরের কোনে একলা জল ফেলে, ধর্ষক গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে। একটি মেয়ে একবার ধর্ষকের দ্বারা ধর্ষিত হলেও বার বার ধর্ষিত হয় আমাদের মানসিকতার কাছে।
একজন ধর্ষিতার চোদ্দগৌষ্ঠীর পরিচয় দিয়ে বিবরণসহ যখন রিপোর্ট প্রকাশ করে তখন সে তার লজ্জার কাছে ধর্ষিত হয়। পুলিশে রিপোর্ট করতে গেলে- আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ালে উকিল যখন জেরা করে বলে আপনার কোথায় কোথায় হাত দিয়েছে, কোথায় কামড় দিয়েছে, কিভাবে লিঙ্গ টুট টুট করেছে তখন ধর্ষিতা প্রতিটা প্রশ্নে হাজার বার ধর্ষিত হয়।। এমন প্রশ্নের ভয়ে ৮০% ধর্ষিতা মামলা করতে চান না।
একজন ধর্ষিতা তার প্রতিবেশি -সমাজের মানসিকতার কাছে প্রতিনিয়ত ধর্ষিত হয়। তখন সবাই গলাবাজি করে একটু সাবধান হলে কী হতো? সামাজিক তিরস্কারের ভয়ে একজন ধর্ষিতা সিলিং ফ্যানে ঝুলে মুহূর্তের মধ্যে হয়ে উঠে ধর্ষিতা থেকে লাশ। পারিবারিক ভাবে শিশুরা প্রচুর যৌন হয়রানী, ধর্ষনের শিকার হয়।একটা মেয়ে যখন তার মায়ের কাছে অভিযোগ করে লোকলজ্জার ভয়ে মা বলে কাউকে বলিস না, অথবা যখন এক পর্যায়ে গর্ভবতী হয়ে উঠে তখন বেড়াতে যাওয়ার নাম করে হাসপাতালে গিয়ে এবরশন করে।
ধর্ষিতা তুমি কোথায় যাবে?
এ সমাজ তোমায় কুঁড়ে কুঁড়ে খাবে।
ন্যায় বিচার কি তুমি পাবে?
কথা হলো বিচারের জন্য তুমি কার কাছে যাবে??
পরিবেশটা ক্রমশ ভারী হচ্ছে নিঃশ্বাস নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে, বোনরা আমাদের ক্ষমা করে দিস। আমরা মধ্যরাতে তোদের শোকে মোমবাতি জ্বালাতে পারি, কিন্তু ধর্ষকের শাস্তি দিতে নাহি পারি। ক্ষমা করে দিস তোরা।