মৌলভীবাজারে মাদক চোরাচালান চক্রের উপক্রম অনিয়ন্ত্রিত

আবুল হায়দার তরিক
Published : 13 April 2017, 08:32 PM
Updated : 13 April 2017, 08:32 PM

মৌলভীবাজারের রয়েছে অনেক গৌরব উজ্জল ইতিহাস। কিন্তু সেই মৌলভীবাজারকে কলংকিত করছে মাদক চোরাচালান চক্র। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ‌এই জেলার মানুষ ও বিভিন্ন এলাকা থেকে শাহমোস্তফা (রহ) মাজার ও  জামে মসজিদে আগত মুসল্লীরা। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এসব মাতালরা মদ, ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা ব্যবসাসহ ভারতীয় চোরাকারবারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। স্থানীয় একাধিক সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়, এসব মাতালরা মাদকদ্রব্য ব্যবসাসহ মদ্য পান করে মাতলামি এবং চাঁদাবাজী করছে। প্রকাশ্যে পথচারীদের আটক করে নানা হয়রানী করছে, এবং এলাকার সাধারণ মানুষের কাছ থেকে জুরপূর্বক চাঁদা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিবহন শ্রমিক জানান, সন্ধ্যা নামলেই ওই চক্রের সদস্যরা পরিবহন চালকদের জোরপূর্বক তাদের আস্তানায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এতে চালকরা রাজি না হলে তাদের উপর চলে অমানুষিক নির্যাতন। এতে যেমন বিপাকে পড়েছেন জেলা শহরের ব্যবসায়ীরা তেমনি দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে শহরে বিভিন্ন কাজে আসা সাধারণ মানুষেরা।

অভিযোগ রয়েছে গুটিকয়েক প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রছায়ায় এসব মাদক ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে রাতের আধারে মদ্য পান করে মাতাল হয়ে অবস্থান নেয় মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন রাস্তার ফটকে। এ সময় তাদের লালসায় শিকার হতে হয় পথচারীদের। বিশেষ করে রাত ৯/১০টার পর মদ পান করে অবস্থান নেয় মৌলভীবাজার টু কুলাউড়া রাস্তার পাহাড়ী অঞ্চলের মধ্যবর্তি চা বাগান এলাকার সড়কে। প্রবাসী যাত্রীরা হয় তাদের নির্যাতনের সিকার। এছাড়াও মাতাল হয়ে অশ্লিল অঙ্গভঙ্গিতে জনসাধারণের সাথে অশুভ আচরণ করেই থাকে। এ যেন তাদের নিত্যদিনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এমন ঘটনায় ভয়ে মূখ খোলতে চায় না স্থানীয় ব্যবসায়ী কিংবা সাধারণ মানুষ। কখনো কেউ নূন্যতম প্রতিবাদ করতে গেলেই বখাটেদের শারীরিক নির্যাতনে শিকার হতে হয় প্রতিবাদকারীর।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার সদর থানার অসি অকিল উদ্দিন আহমদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান এই থানায় যোগদানের পড়থেকে প্রতিদিন ৮-১০ জন মাদক সেবনকারী দাওয়া করছি, এবং ১০-১৫ টি মামলা আমলে নিচ্ছি এবং আমি ঘোষনা করছি ২০১৭ সালের ভিতের মৌলভীবাজার কে মাদক মুক্ত করব। আমি মাদক সেবন কারী ও মাদক চুরাচালান চক্রের বিরুদ্বে সর্বদা স্বোচ্ছার। আমার অভিযান চলেছ, চলবে। উল্লেখ্য যে, ইতিপূর্বে গত ০৪/০১/২০১৭তারিখে মাদক চোরাচালানকারী ধাওয়া করতে গিয়ে মৌলভীবাজার সদর থানার এস.আই. আব্দুল মালিক গুরুতর আহত হন। প্রথমে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল ও পরে সিলেট এম.এ.জি. ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘ চিকিৎসার পড় সুস্থতা লাভ করেন। ওই সময় তার গুলিতে মাদক চুরাচালান কারী রুহেলের মৃত্যূ হয়। মাদক প্রতিরোধের বিষয়ে মৌলভীবাজার বাজার জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ জাবেদ বলেন আমরা মাদক প্রতিরোধে কাজ করছি,  প্রশাসনও এ ব্যাপারে সক্রিয় অবস্থানে রয়েছে।

প্রশাসনের এতো কঠোর অবস্থানে থাকার পড়েও মাদক সেবনকারি ও মাদক ব্যবসায়ীদের নির্মূল করা যাচ্ছে না। কিন্তু কেন, এমন প্রশ্ন সচেতন মহলে থেকেই যায়। অনেকের সাথে মাদকের ব্যপারে কথা বলেত গেলে মুখ খুলতে চায় না। কি যেনো আতঙ্ক বিরাজ করছে সাধারণ মানুষের মনে। মৌলভীবাজার বাসী এর প্রতিকার চায়।

মাদক এমন একটি দ্রব্য, যা মানুষের মধ্য থেকে মানুষত্ব কেরে নেয়, মানুষের বিবেক, বুদ্ধি, চিন্তা, চেতনা, থেকে দুরে রাখে। মানবিকতা ও মানবিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে। যা যুবসমাজের জন্য হুমকি স্বরুপ। এর প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন জনসচেতনা। সমাজকে মাদক মুক্ত করতে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পাড়ে যুবসমাজ। এর জন্য প্রয়োজন যুবসমাজের সচেতনতা ও সজাগ দৃষ্টি। যার মধ্যদিয়ে সমাজ হতেপাড়ে মাদক মুক্ত ও প্রগতিশীল। আমার এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে মাদক প্রতিরোধে মৌলভীবাজার তথা সারা দেশের যুবসমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। যাতে দেশ হয় মাদক মুক্ত ও সৃজনশীল।