আমাদের দৈন্যতা কি কাটিয়ে উঠা যায় না?

মুহাম্মদ আমিনুল আবেদীন
Published : 7 May 2012, 05:46 PM
Updated : 7 May 2012, 05:46 PM

রাজনীতি, সমাজনীতি,অর্থনীতি,ধর্মনীতি- এ সব নিয়ে অনেক লেখালেখি, টক শো হয়েই চলছে।এতে পক্ষ বিপক্ষ নিয়ে চলে তুমুল বিতর্ক । অনেক সময় মনে হয় যেন, এখনি বাকযুদ্ধ মুষ্টিযুদ্ধে রূপ নেবে। সঞ্চালক থামাবার চেষ্টা করেন আর মুচকি মুচকি হাসেন। অনেকে বলেন আমি নিরপেক্ষ । কোন দলের পক্ষে আমি নই। আসলে কি তাই? তিনি কোন দলের পক্ষে নন? বাস্তবে নিরপেক্ষ বলতে কিছু নেই। কারণ নিরপেক্ষতা ও একটি পক্ষ। যিনি বলেন আমি নিরপেক্ষ তিনি ও কিন্তু ভোট দেন। যে কোন এক পক্ষকে ভোট দেন। তবে তিনি কিসের উপর ভিত্তি করে ভোট দেন? নিশ্চয় তার যুক্তিতে যিনি ভাল/মন্দের ভাল, তাকে ভোট দেন। এতে তিনি একটি পক্ষকে সমর্থন করলেন।

ইলিয়াস আলী নিখোঁজ নিয়ে গতমাসের মাঝামাঝি সময় থেকে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে যাচ্ছে দেশে। অনেক ব্লগার এ বিষয়ে কলম ধরেছেন। একজন ব্লগার এই বিশিষ্ট বাজনীতিকের জীবন বৃত্তান্ত তুলে ধরেছিলেন। তিনি হয়ত: ভেবেছেন, এই রাজনীতিকের জন্য তার দল তো কাঁদবেই ,কিন্তু নিরপেক্ষ ব্যক্তি বর্গ যারা কাঁদছেন, তাদেরকে একটু জানিয়ে দেই। আর যদি তিনি এই ভেবে লিখেন যে, ইলিয়াস আলী বা তার দলের ভাব মূর্তি ক্ষুন্ন হোক, তাও হতে পারে। এক্ষেত্রে একটি বিষয় বিবেচ্য রয়ে যায়, আসলে তিনি যা লিখেছেন তা সত্য কিনা ! তিনি যে উদ্দেশ্যেই লিখুন না কেন,তিনি সত্য লিখেছেন কিনা? ব্লগার কালবৈশাখীর লেখার বিপরীতে যারা মন্তব্য করেছেন, তাদের মন্তব্যের বিশ্রী শব্দ গুলো মডারেট করতে করতে মডারেটর রীতিমতো হাঁপিয়ে উঠেছেন হয়ত। এতে বলা চলে, কোন অপরাধীর বিষয়ে লেখা বা অপরাধ প্রকাশ করা ও যেন অপরাধ!

আমরা যারা ব্লগে লিখি, পড়ি বা মন্তব্য করি তারা নিশ্চয় কিছু জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ। আমাদের ভাষা জ্ঞান অন্তত রয়েছে। তাহলে আমাদের বিবেক কিভাবে অকথ্য,অভব্য ভাষা ব্যবহারে বাধা দেয় না? আমরা কি বিবেককে একটি বার ও কাজে লাগাই না? আমাদের যদি এমনতর বিচার হয় তাহলে স্বল্প পড়ুয়া বা অশিক্ষিত মানুষ গুলো কি করবে? আমরা আলোচনা জানলে ও সমালোচনার বিষয়টি হয়ত বা শিখতে পারিনি। অসুদ্ব ভাষা ছাড়া কি সমালোচনা করা যায় না? যে ব্যক্তিটিকে নিয়ে আর ও কয়েকজন ব্যক্তির জীবন হানি ঘটলো,শত কোটি টাকার সম্পদ বিনষ্ট হল,সারা দেশ ৫টি দিন অবরুদ্ব রইল, প্রতিদিন রাস্তায় মিটিং মিছিলে সাধারণ জীবন যাত্রা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সে নেতার নেতৃত্বের দোষগুণ বিষয়ে নেতা/কর্মী/জনগণের জানা কি প্রয়োজন নেই ? আর এটি কেউ জানালে তাকে নাজেহাল করাটা কি উচিত?

যদি লেখক ভিন্নমতাবলম্বী ও হয়ে থাকেন তাহলেও তো দোষের কিছু নেই, কারণ তিনি যে দলের ই হোন না কেন, তার দলেও তো অনুরূপ দোষে দুষ্ট নেতা/কর্মী রয়েছে। কোন দলের বিরুদ্বে বলার মানসে লিখলে ও আমজনতা তা বুঝে নিচ্ছে। তাই আমরা আরেকটু ধৈর্য্যশীল হয়ে কলম ধরলে বা মন্তব্য করলে অন্তত আমাদের অনুসারী কনিষ্ঠরা তা শিখে পরিশুদ্ধ হবে, নচেৎ আমাদের গোরামি, অসুদ্ধতা ,অভব্যতা, অশ্রদ্ধা নতুন প্রজম্ম শিখে নেবে, তাতে আমাদের সকল প্রচেষ্টা ভেস্তে যাবে।

আসুন, আমরা অন্তত ব্লগ পরিবার একটু সচেতন হয়ে কথন,লিখন,চলন,বলন সব কিছুতে একটু সহনশীলতার পরিচয় দেই। আমরা অবশ্যই কামিয়াব হবো। আমাদের অবলোকন করে আর ও অনেকেই এ ধারা সৃষ্টি করবে আশা করি।

পুনশ্চ: আমার এ লেখা কাউকে আঘাত করার মানসে নয়,বিবেকের তাড়নায় লিখা মাত্র । যদি কারো আঘাত লেগে থাকে, তবে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আর দলীয় ভাবে চিন্তা করে অকথ্য বলে/লিখে থাকেন তা সইবার শক্তি যেন পাই। ধন্যবাদ।।