ভারতের সরকারি চাকরির আবেদনের বয়ঃসীমা এবং বাংলাদেশের শিক্ষা

এনামুল হক
Published : 28 Jan 2017, 07:15 AM
Updated : 28 Jan 2017, 07:15 AM

ভারতে চাকরির বয়ঃসীমা সরকারি চাকরির আবেদনের জন্য বয়ঃসীমা গেল। শুক্রবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে সরকারি চাকরির গ্রুপ A পদে আবেদনের জন্য বয়স সীমা ৩২ বছরথেকে বেড়ে ৩৬ বছর করা হবে। শুধু তাই নয়, গ্রুপ B-র ক্ষেত্রে আবেদন করা যাবে ৩৯ বছর বয়স পর্যন্ত। অপরিবর্তিত থাকছে গ্রুপ C আর D পদে আবেদনের বয়ঃসীমা।

আমাদের পাশের দেশে সরকারি চাকরির আবেদনের জন্য বয়ঃসীমা বেড়ে গেলো কিন্তু  বাংলাদেশের ৩৫ বছর হতে মনে হচ্ছে আরো কয়েক যুগ লাগবে। মহাজোট আমলের প্রথম মেয়াদের শেষ দিকে সরকার কিছু জনকল্যাণমূলক কাজের উদ্যোগ নিয়েছিল। সেই কাজের তালিকায় সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স সীমা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছিল। এর আড়ালে হয়তো তাদের নির্বাচনে সমর্থন পাওয়াই লক্ষ্য ছিল, তবু এটি করলে সত্যি সত্যি একটি ভালো কাজ করা হতো।বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন বয়সে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা লক্ষ করা যায়। তাহলে বাংলাদেশের মতো একটি দেশে যেখানে প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতার কারণে শিক্ষাজীবনে প্রচুর সময় নষ্ট হয়, সেখানে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা কেন ৩৫ বছর করা হবে না?  সাম্প্রতি ভারতেও সরকারি চাকরির আবেদনের জন্য বয়ঃসীমা বেড়ে গেলো ৩৯ বছর পর্যন্ত হয়েছে  তাই আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি মেনে নেওয়া উচিত। পাশের দেশে ৩৯ বছর আর আমারা ৩৫ বছরও পাবো না??  তা হলে কি পাশের দেশ থেকে আমরা এখনও ৯ বছর পিছিয়ে আছি?

আমরা পিছিয়ে আছি যে যে বিষয়েঃ

বাংলাদেশ হচ্ছে হরতাল-অবরোধের দেশ। প্রতি পাঁচ বছর পর নির্বাচনকেন্দ্রিক বিড়ম্বনার কারণেও শিক্ষাজীবন ব্যাহত হয়। ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে হরতাল-অবরোধেও যে পরিমাণ সেশনজট তৈরি হলো, তার দায় কি শিক্ষার্থীদের নিতে হবে? সেশনজট সৃষ্টির বহুবিধ কারণের কোনোটা না কোনোটা ঘটছেই।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত ১৮.৫ বছর + ভর্তি প্রক্রিয়ায় দশমিক ৫ বছর + স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ৮ বা ৯ মোট ২৭-২৮ বছর প্রয়োজন হয়। অন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েও অভিন্ন চিত্র।  এতো কঠিন অবস্থা আমাদের দেশের তার পরেও আমাদের দাবি সরকার মেনে নিতে রাজি না এর কারণ কি?