জীবন বনাম আমরা

আরিয়ান নিহাল
Published : 1 August 2015, 06:37 PM
Updated : 1 August 2015, 06:37 PM

একে একে জীবনের অনেকগুলো বসন্ত পার করলাম। জীবনের রূপ যেন অধরাই রয়ে গেল আমার কাছে, শুধু গুণেই শুনে গেলাম। কয় জনেইবা পেরেছে? এই অভাগার দলে আমিই শুধু এক জন নয়, শত আত্ম বোবা ও আত্মকেন্দ্রিক মানব নেই কি? এবং রোজই তাদের দল ভারি হচ্ছে ও হবে। এ যেন শুধুই এক পক্ষের খেলা। আসলাম, খেলাম, গেলাম। তিনটি, মাত্র তিনটি শব্দেই জীবন শেষ। একটু গুছিয়ে বলি, ধরুণ আপনি এক জন পিতা, আপনার একটি সন্তান আছে। আপনার প্রথম ও প্রধান খেয়াল থাকবে কিভাবে আপনার সন্তানকে মানুষ করা যায় বা আত্মপ্রতিষ্ঠিত করা যায় এবং কিভাবে আপনার পরিবারকে সুন্দর ভাবে চালানো যায় আর তা করতে করতেই আপনার জীবনের পরিসমাপ্তি ঘনিয়ে আসবে। চারপাশের হাজার অসঙ্গতি অন্ধকার রাতের কালো বিড়ালের মত আপনার পাশ কাটিয়ে যাবে কিন্তু আপনার দৃষ্টি গোচর হবে না। খুবই স্বাভাবিক কারণ, আপনি তখন খুবেই ব্যস্ত মানুষ!

আপনার অধ্যায় শেষ এবার আসুন পুত্র অধ্যায়ে, আপনার কপি পেস্ট পুত্র এক দিন বড় হলো, চাকরি নিল এবং বিয়ে করল। এখন আপনার জন্য সুখবর এই যে, সে ও আপনার চক্রের পুনরাবৃত্তি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারও আবার সন্তান হবে সে ও আপনার মত একই কাজে আত্নকেন্দ্রিক হয়ে উঠবে এবং আপনার পদাঙ্ক হুবহ নকল করবে, বাহ জীবন বটে! আবার তার সন্তানও তার পিতার চক্র সফল করে জীবনের ইতি টানবে। চার পাশে সমাজ বলে কিছু ছিল বা সমাজে অবহেলিত, নিপীড়িত, নিগ্রীহুত কিছু প্রাণি বিশেষ মানুষ ছিল তা চক্রে আবদ্ধ আত্নকেন্দ্রিক ব্যস্ত পিতা পুত্র কেউ টের পায়নি। ভাবলে হাসি পায় যে এই আবাল শ্রেণীর মানুষেরা সমাজ সংস্কারে চরম ভাবে অবিশ্বাসী! এবং তারা মনে করে রাষ্ট্র তথা সমাজের প্রতি তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই আছে শুধুই বোকা নির্লিপ্ত অবহেলা। এ কি জীবন? এ কি আমাদের জীবন বোধ? আমরা কি এই চক্রে ঘুরপাক খেতে খেতে জীবনের ঘানি টানবো? নাকি অসীম সাহস ও বীর দর্পে এই চক্র ভেঙে সমাজ তথা জাতির জন্য কিছু করবো? সকল সুস্থ ও বিবেক সম্পন্ন মানুষের প্রতি আহ্বান আপনারা চক্র থেকে বের হয়ে আসুন, দেখুন জীবন কত বৈচিত্র্যময় ও বর্ণিল।