আগস্ট এক ট্র্যাজিক মাসের নাম!

আতাস্বপন
Published : 21 August 2015, 04:34 AM
Updated : 21 August 2015, 04:34 AM

২১ শে আগষ্ট আজ। গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। মারা গিয়েছিল অনেক রাজনৈতিক কর্মী সহ সাধারণ মানুষ। এটা কি ঠিক ছিল? একটা দল কে সবাই পছন্দ নাই করতে পারে, তাই বলে তার কর্মীদের শেষ করে দিতে হবে? ঐ লোকগুলো একটি দল করে। তার সমর্থনে রাজনৈতিক সভায় এসেছিল। দোষতো কিছু করেনি? গনতান্ত্রিক দেশে সবাই সভাসমাবেশ করবে। এটাই নিয়ম। একটা দলকে আদর্শগত ভাবে পছন্দ করিনা বলে গ্রেনডে মেরে নিশ্বেষ করে ফেলতে হবে এই মনোভাব কি গনতান্ত্রিক? ইসলামের শত্রু ! এই ধোয়া! কাউকে বা কোন দলকে আমার ইসলামের শত্রু মনে হতে পারে? আমার মনে হওয়াটা কতটুকু সঠিক তা না ভেবে এ ভাবে মানুষ হত্যা ইসলাম কি আদো সমর্থন করে? যে লোকগুলো মারা গেছে তারাতো সবাই কাফের নয়। মুসলমানওতো আছে। একজন মুসলমান আরেক মুসলমানকে বিনাবিচারে হত্যা করা ইসলাম কি সমর্থন করে?

ক্ষোভ আর প্রতিহিংসার বলি হলো যারা তারাতো কারো না কারো সন্তান ভাই-বোন-পিতা-মাতা। তাদের হত্যা করে কতগুলো পরিবারকে পঙ্গু করা হলো। আজো শরিরে গ্রেনেডের স্পীলন্টার নিয়ে অসহনীয় জীবন যাপন করছে অনেকে। যতো বড় পাপিই হোক যুদ্ধ ছারা এভাবে স্বাধীন দেশে উগ্র আক্রমন সত্যিই ঘৃনিত কাজ। এ আগষ্টেই হত্যা করা হয়েছে সপরিবারের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে। আবার এই মাসেই হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে তার কন্যা সহ রাজনৈতিক কর্মিদের। শোকাবহ মাসটি। কেউ কেউ আনন্দ পান। কথা হলো স্বাধীন দেশে বিনা বিচারে হত্যায় দু:খ না পেয়ে আনন্দ যারা পায় তারা কি মানবিকতা ভুলে গেছ? পাপি পাপ করলে তার বিচার হবে। তারপার সাজা।আগষ্টের ভয়াবহ যে হ্ত্যাকান্ডগুলো সত্যাই কি জঙ্গী কোন গোষ্টির কাজ? না কোন বিদেশী তাবেদার ষরযন্ত্রকারিদের ষরযন্ত্র? র্জজ মিয়া নাটক। কত কান্ড কির্তন । কেন এই সব করা? তৎকালিন সরকারেরতো উচিত ছিলো প্রকৃত আসামী সনাক্তকরে তাদের বিচার করা। বরং নানা নাটক করে পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে করা। এখন তৎকালিন সরকার যদি দুধে ধোয়া তুলসি পাতাও হয় তাকে কে বিশ্বাস করবে? সরকার জড়িত এটাতো ভিকটিম রা বলতেই পারে? বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্যদিয়ে আগষ্টে যে হত্যার সুচনা হলো তা ২১ শে আগষ্টে এসে নতুন ভাবে আবিভৃত হলো। কথা হলো কেন একটি দল বার বার টার্গেট হচ্ছে? এটাও ভেবে দেখা দরকার।

স্বাধীনতা পূর্বে এই দলটি যেমন ছিল স্বাধীনতার পর তাদের মাঝে বিস্তর পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। কারন তারা তখন ক্ষমতায়। আর সেই দাপটে কি তারা তখন একনায়ত্রান্তিক হয়ে যায়নি? মাওলান ভাসানী যে আদর্শ নিয়ে এই দলটি গড়েছিলেন স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এ দল সে আদর্শ থেকে দূরে সড়ে যায় নি? তারা কি স্বেচ্ছাচারি মনোভাব পোষন করেনি? সবগুলো রাজনৈতিক দল আর মত প্রকাশের স্বাধীনতার কন্ঠরোধ করেনি? তারা কি বাকশাল করেনি? একনায়কতান্ত্রিক ভাবে বলেনি এক নেতার এক দেশ? এসব থেকে কি জনমনে ক্ষোভের জম্ম হয় নি? ডাকতি আর সন্ত্রাসে সে সময় দেশে মগের মুল্লক হয় নি? তারা কি তখন ক্ষমতার মোহে সাধারন মানুষের চাওয়া পাওয়ার কথা ভুলে গিয়েছিল? যে জন্য মানুষ যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিল সেই স্বপ্ন কি তৎকালিন সরকার পুরন করতে পেরেছিল? মানুষ কি হতাশ হয়ে যায়নি? মানুষ যে মানুষটির জন্য রোযা রেখে দোয়া করেছিল এক সময় ,তার মৃত্যুত কই তারাতো প্রতিবাদ করে নি? কই প্রতিবাদ করেনিতো সেই মন্ত্রিী সভার মন্ত্রিরা? তারাকি হত্যাকরিদের বা মদদ দাতাদের মন্ত্রী সভার মন্ত্রী হয় নি? অনেক প্রশ্ন। অনেক উত্তর । এগুলোর মাঝে আছে আগষ্ট মাসের ট্রেজেডির মুল রহস্য।

আগস্টের ট্রেজেডির বিরাট একটা শিক্ষা হল এই যে, স্বেচ্ছাচারিতা বা ক্ষমতার দাপট সবসময় সুখকর নয়। বেদনারও কারন হতে পারে। তাই নয় কি?