আজ বড়ই নিসঙ্গ

আতাস্বপন
Published : 1 Feb 2016, 12:31 PM
Updated : 1 Feb 2016, 12:31 PM

ভাড়টিয়া জীবনের আরেক নাম যাযাবর। আমার জীবনটা এমনই কেটেছে। শিকর বিহিন । জলেভাসা পদ্মের মতো। আজ এ বাড়িতো কাল ও বাড়ি। আমার কোন স্থায়ী বন্ধুত্ব হয়নি কখনো। যখন কোন এলাকার বন্ধুদের বা এলাকাটিকে আপন করে নিয়েছি এরপরই তাকে ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। অথচ যখন এলাকাগুলোতে সবার মাঝে ছিলাম নিজের অতি আপন আবাসভুমি মনে হয়েছে। একে ছেড়ে চলে যেতে হবে কখনো মনে আসেনি। আমাদের গ্রামের বাড়িতে আমার যাইনা বললেই চলে। বাবার চাকুরী সুত্রে ঢাকাতেই ছিলাম। ফলে সেখানেও আপনদের কাছে আমরা অচেনা। আপন হয়েও যেন পর। যে এলাকাগুলোতে আমার এ যাবৎ ছিলাম তার মধ্যেই খিলগাঁও, তিলপাপাড়া, বাগিচা, সিপাহীবাগ এ এলাকাগুলোতে প্রচুর বন্ধু ছিল। এলাকার স্কুলে যেহেতু পড়েছি। প্রচুর সহপাঠিও ছিল। আজ এতো দিন পড় সেসব এলাকায় বন্ধুুদের দেখিনা। দেখি না সেই পরিবেশ। চারদিকে নতুনের হাতছানি। নতুনের সমারোহ। এর মাঝে আমি যেন অচেনা একজন। আছ্চা আমাকে আমার আপন গ্রামের লোক চিনেনা সেখানে যাইনি বলে। আর যেসব এলাকায় ছিলাম তার লোকজন আমাকে ভুলে গেছে। আমি কোথায় পাব একটু সুখ দুখ শেয়ার করার মতো বন্ধুত্ব? এখন যেখানে নিজ বাড়ী করে আছি সেখানেও বিদেশী তকমা নিয়ে আছি। স্থাানীয়রা সেভাবে আপন করে গ্রহন করে না। তাহলে এই যাযাবর যাবে কোথায়? যাদের আপন ভেবে এতোকাল শৈশব আর কৈশর আর যৌবন কাটাল তাড়া আজ স্মৃতি। সেই এলাকাগুলোতে আজ কোন অধিকার নেই। অথচ একসময় এটাই ছিল আপন আলয়। মাঝে মাঝে যখন ভাবি তখন কেমন যেন একা একা লাগে। গ্রামে নয় ! শহরে নয়! যেখানে আছি সেখানেও নয়! তবে কোথায় আমার শিকর? যেখানে একটুকু অধিকার নিযে থাকা যায়। যেখানে মাথা উচু করে দুটি কথা বলা যায়। যেখানে বিদেশী তকমা নিয়ে নয় একজন ভাল প্রতিবেশী হিসেবে বাঁচা যায়।

একটি অপরিচিত এলাকায় কিছু জমি কিনে বাড়ি করে থাকলেই কি সেখানে শিকর গজিয়ে যাবে? সব মানুষগুলো আপন হয়ে যাবে?
তাদের কাছে কোন অধিকার জম্মাবে? যে অধিকার জম্মেছিল শৈশবে কৈশরে যৌবনে সেখানে আজ সময়ের ফেরে অচেনা এই আমি আজ তাই বড়ই নিসঙ্গ।