কমিউনিটি পুলিশ কার্যক্রম -সাতাইশ, টঙ্গি, গাজীপুর

আতাস্বপন
Published : 24 Feb 2016, 03:20 PM
Updated : 24 Feb 2016, 03:20 PM

গাজিপুরা সাতাইশ ঢাকার নিকর্টবর্তি টংগী গাজীপুরের একটি এলাকা। এখানে আমার বাবা ছোট্ট একটি নীড় তৈরি করে যান আমাদের ভাইবোনদের জন্য। ১৯৯৮ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে আমরা খিলগাঁয়ের ভাড়া বাড়ি ছেরে এ এলাকায় চলে আসি। সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত এ এলাকার সুখ দু:খের সাথে জীবনকে জড়িয়ে নিয়েছি। শুরু থেকে এলাকাটি ছিল চাঁদাবাজ আর চোর ডাকাতের তান্ডবরাজ্য। আর মাদক ব্যাবসায়ীদের স্বর্গ রাজ্য। এলাকাতে জঙ্গিদেরও দেখা গেছে। আর বিভিন্ন কিছিমের দালাল আর ৪২০ দেরতো অহরহ মোকাবেলা করতে হয় এখনো। এই পরিবেশে ্আমরা বাড়ি করে সেখানে আছি আজ প্রায় দেড় যুক হয়ে গেল। নানা সমস্যায় পতিত হতে হতে একসময় ঘুরে দাড়ানোর প্রত্যয়ে এলাকার তরুনদের নিয়ে গড়ে তুললাম ভাই ভাই যুব সমিতি। আমাদের এলাকায় হঠাৎ করে বিদ্যুতের তার চুরির উৎপাত বেরে যায়। বের যায় মাদকদ্রব্যের কেনা বেচা আর ব্যবহার। এই সমস্যা থেকে উত্তরনের লক্ষ্যে সমিতির উদ্যোগ এ টংগী থানার সহায়তায় ২০০৯ সালে যাত্রা শুরু করে কমিউনিটি পুলিশ কার্যক্রম। এই কার্যক্রম দুটি কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। উপদেষ্ট কমিটি আর কার্যনির্বাহী কমিটি। এলাকার কাউন্সিলর আর গন্যমান্যরা উপদেষ্টা কমিটির সদস্য। আর তরুন যুবকরা হলো কার্যনির্বাহীর সদস্য। মুলত কার্যনির্বাহী কমিটিই পুরো কার্যক্রমের সাথে সরাসরি জড়িত । উপদেষ্টার কমিটির প্রধান হলেন ৫১ নং ওয়ার্ডের সম্মানিত কাউন্সিলর জনাব মো: মজিবুর রহমান খান। আর কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি জনাব মো: আবু তালেব স্বপন ।

সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আজও উক্ত কার্যক্রম সচল আছে। এলাকায় অপরাধের পরিমান দিন দিন কমে যাচ্ছে। এলাকারবাসীল ইউনিটি আরো দৃঢ় হচ্ছে। এইতো কদিন আগে গাজীপুর পুলিশ লাইনে কমিউনিটি পুলিশিং  মহা সমাবেশে ২০১৫ তে আমারা প্রথমবারের মত অংশগ্রহন করেছি।

কমিউনিটি পুলিশ কার্যক্রম এর কর্মপদ্ধতি

আমি তুমি সে। অনেক আমির সমন্বয়ে আমরা। আমাদের সমন্বয়েই সমাজ। তাই সমাজকে সুষ্ঠ ও সুন্দর রাখার দায়িত্ব আমার আপনার সকলের। সামাজিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে সমাজের উন্নয়ণ। আর সমাজের উন্নয়নের মাধ্যমেই দেশের উন্নয়ণ। তাই দেশপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ হয়ে সাতাইশ এর সচেতন নাগরিকদের নিয়ে যাত্রা কমিউনিটি পুলিশ কার্যক্রম এর। এলাকার বিভিন্ন সমস্যা, অনৈতিক ও অসামাজিক কার্যকলাপ রোধে এ সংগঠন সবসময় চেষ্টা করে যাচ্ছে। এলাকার সকল শ্রেনীর নাগরীক তিনি বাড়ীর মালিকই হোন বা ভাড়াটিয়া সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টাই পারে এ কার্যক্রমকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে।

কমিউনিটি পুলিশ কার্যক্রমের লক্ষ্য ও উদ্দ্যেশ: সকল প্রকার অসমাজিক, অনৈতিক ও বে আইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ করে এলাকা তথা সমাজে সুষ্ঠ ও নিরাপদ পরিবেশ ফিরিয়ে এনে সমাজের সকলের মাঝে সামাজিক ঐক্য গড়ে তোলার মাধ্যমে নিরাপদ থাকা।

কর্মসূচি:
• এলাকা তথা সমাজে বসবাসকারী নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ করার মাধ্যমে কমিউনিটি পুলিশ কার্যক্রমের আওতায় আনা।
• ঐক্যবদ্ধ নাগরিকদের মাঝে সামজিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জোড় প্রচারনা চালানো।
• সমাজের নিরপত্তা ও সুষ্ঠ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সম্মিলিত ভাবে নিরাপত্তা ফান্ড গঠন। এর মাধ্যমে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্যয় নির্বাহ করা।
• এলাকার নিরাত্তা জোরদার করার জন্য সবার ঐক্যবদ্ধ ভুমিকার পাসাপাসি নিরপত্তা প্রহরীর ব্যবস্থা করা। যাদের বেতন- ভাতা নিরাপত্তা ফান্ড থেকে গ্রহন করা হবে।
• সামাকিজক কার্যক্রম ও নিরাপত্তার স্বার্থে সভা, সমাবেশ, আলোচনা, রেয়্যালীর ইত্যাদির আয়োজন করা।
• এলাকার এম.পি, কাউন্সিলর, গন্য মান্য ব্যাক্তবর্গ, ও লোকাল থানার সাথে সু-সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা।
• কমিউনিটি পুলিশ কার্যক্রম পরিচালনায় উপদেষ্টা ও কার্যনির্বাহী নামক একটি সম্মেলিত কমিটি রয়েছে। উপরোক্ত কার্যক্রম গুলো এ কমিটির সার্বিক ত্বত্তাবধানে পরিচালিত হবে। যা সমাজের সকল নাগরিকের আন্তরিক সহযোগীতা ও সমর্থনে দিনে দিনে সমৃদ্ধ করা হবে।

কমিউনিটি কার্যক্রম সংক্রান্ত নীতিমালা:

১। আপাতত নৈশ প্রহরীর মাধ্যমে রাতের নিরপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। কমিউনিটির প্রত্যেকটি সদস্যকে তাদের বেতন-ভাতা মাসের ১০-১২ তারিখের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। কোন প্রকার অবহেলা করা যাবেনা।
২। মাসিক বেতন-ভাতা নৈশপ্রহরীরাই সংগ্রহ করবে। তারা যাতে যাওয়ার সাথে সাথে টাকা বুঝে পায় সে ব্যবস্থা করতে হবে। কোন অবস্থাতে তাদের ঘোরানো চলবেনা। রিসিটি যা আছে তা কমিটির সিদ্ধান্ত কাজেই তাদের সাথে কোন বিষয়ে তর্কে জড়ানো যাবে না। কমিউনিটি সংক্রান্ত/রিসিটি সংক্রান্ত কোন কথা থাকলে কোন অভিযোগ থাকলে তা দায়িত্ব প্রাপ্ত কমিটিকে তাংক্ষন্কি ফোন করে অবহিত করতে হবে।
৩। যে সকলা বাড়ির দায়িত্বে ম্যানেজার বা ভাড়াটিয়া রয়েছে তাদের কে অবশ্যই বাড়িওয়লার কাছ থেকে নির্দিষ্ট মাসিক ভাতা সংগ্রহ করে রাখতে হবে। কোন অযুহাতে ঘোড়ানো চলবেনা।
৪। বছরে ২টি ঈদে কমিটি যে বোনাস নির্ধারিত করবে তা প্রদান করতে হবে। কোন প্রকার গড়িমসি করা যাবে না। কিমউনিটির প্রতিটি সদস্য সবাইকে অবশ্যই এ বোনাস প্রদান করতে হবে।
৫। রাত ১০.১৫ থেকে সিকিউরিটিদের দায়িত্ব শুরু।
৬। এ সময় কোন সমস্যা হলে কমিটিকে তাৎক্ষনিক ভাবে তা জানাতে হবে। কোন ভাবেই সিকিউরিটির সাথে খারাপ ব্যবহার করা যাবে না।
৭। কোন বাড়িতে এ সময়ে কোন চুরি ডাকতি ইত্যাদি ঘটলে। এ বিষয়ে পরবর্তী করনিয় সম্পর্কে কমিটি আলাপ আলোচানার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহন করবে। কোন ক্ষতিগ্রস্থ সদস্য আগবাড়িয়ে কোন বাজে মন্তব্য করবেন না।
৮। কমিউনিটি কার্যক্রমের আওতায় যারা রয়েছেন নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের প্রত্যেককে নিজ নিজ বাড়ির সামনে একটি লাইট লাগতে হবে।
৯। কমিউনিটির প্রত্যেক সদস্যকে তাদের এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সিকিউরিটির খোজ খবর নিতে হবে। প্রয়োজনে তাদের মোবাইল নং সংগ্রহ করতে হবে। এলাকায় সিকিউরিটির অনুপস্থিতি সম্পর্কে সন্দিহান হলে তার মোবাইলে কল দিয়ে বা বাহিরে বের হয়ে নিন্চিত হতে হবে। অযথা সিকিউরিটির দায়িত্ব সম্পর্কত মন্তব্য থেকে বিরত থাকুন।
১০। বাশীঁর আওয়াজ বা টর্চ এর আলো সংক্রান্ত সমস্যা বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানান। সিকিউরিটিকে কিছু বলার প্রযোজন নেই।
১১। কমিউনিটির সদস্যরা তাদের ভাড়াটিয়ার বিষয়ে ভালভাবে খোঁজ খবর নিয়ে বাড়ী ভাড়া দিন। আপনার বাড়ীতে কোন চোর ডাকাত সন্ত্রাসী মাদক ব্যবসায়ী ভাড়াটিয়া বেসে ওৎ পেতে নেইতো। কিংবা মেয়েমানুষদের দিয়ে অনৈতিক কোন হচ্ছে নাতো। একটু সচেতন হোন । ভাড়াটিয়াদের গতি বিধির প্রতি নজর রাখুন। যেসব ভাড়াটিয়া ডিউটি শেষে মধ্য রাতে বাসায় ফিরে তাদের দেয়াল টপকে বাসায় ঢুকতে নিষেধ করুন। প্রয়োজনে আলোচনা করে বিকল্প ব্যবস্থা নিন।
১২। বাড়ীর জানালার পাসে মূলবান কোন কিছু রাখবেন না।
১৩। কমিউনিটির সদস্যদের দিনেও সচেতন থাকতে হবে। বাড়ির আসেপাসে অজাচিত কাউকে দেখেলে তার সাথে কথা বলুন। আপনার আসে পাসে কেউ যেন মাদক ক্রয়-বিক্রয় ও সেবন না করে লক্ষ্য রাখুন। আপনার বাড়ীর আসে পাসে দাগী কেউ আড্ডা দিচ্ছে কিনা খেয়াল রাখুন। প্রয়োজনে কাউকে আড্ডা দিতে দিবেন না।
১৪। নৈশ প্রহরীরা যদি কোন পরিস্থীতে কমিউনিটির সদস্যদের সাহায্য কামনা করে। সবাইকে তাদের সর্বাত্তক সহয়োগীতা করা নৈতিক দায়িত্ব। নৈশ প্রহরীও মানুষ তাই তাদের মনবল বৃদ্ধিতে এগিয়ে আসা সবার কর্তব্য। আপনার সামনে কেউ ণৈশ প্রহরীকে থ্রেড করলে সাথে সাথে প্রতিবাদ করুন।
১৫। রাস্তায় লোকাল থানার টহলরত ডিউটি অফিসার রয়েছেন। প্রয়োজনে তাদের সহযোগীত গ্রহন করা যেতে পারে।

কমিউনিটি পুলিশ সাতাইশ এর উদ্যোগে নৈশ প্রহরী দের মোবাইল প্রদান করা হয়েছে …..

সাতাইশ কমিউনিটি পুলিশ এর উপদেষ্টা কমিটি এবং কার্যনির্বাহী কমিটির সভার ছবি….

কমিটির সদস্যদের করনীয়:
উপদেষ্টা কমিটি: এ কমিটি কার্যনির্বাহী কমিটির যাবতীয় কাজে বুদ্ধি ও পরমর্শের মাধ্যমে সহায়তা করবে। এছাড়া এ কমিটি বাড়ির মালিকদের মধ্যে উদ্ধুত্ব সমস্যা সমাধান বা নানধরনের ভুল বুঝাবুঝি অবসানে কাজ করবে। প্রয়োজনে তাদের বাড়ী বাড়ী যেয়ে তাদের সাথে যোগাযোগ করবে বা তাদের নিয়ে মিটিং করবে।

কার্যনির্বাহী কমিটি: এ কমিটি কমিউনিটি পুলিশের মুল চালিকা শক্তি। কমিউনিটি পুলিশ কার্যক্রমের যাবতীয় কাজে এ কমিটি সরাসরি যুক্ত থাকবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে উপেদ্ষ্টো কমিটির সহযোগীতা নিবে। পদ অনুযায়ী কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের দায় দায়িত্ব পালন করতে হবে।

সভাপতি: এই পদে যিনি থাকবেন তিনি উপদেষ্টা কমিটি ও কার্যনির্বাহী কমিটি দুইয়ের সাথে সমন্বয় সাধন করবেন। সময়ে সময়ে তিনি কার্যনির্বাহী কমিটির যাবতীয় সুযোগ সুবিধা বা নানমুখি সমস্যা উদেষ্টা কমিটির নিকট তুলে ধরবেন এবং তাদের পরামর্শমত কাজ করবেন। তিনি কার্যনির্বাহী কমিটির প্রধান বলে বিবেচিত হবেন। তার অথাব তার মনোনীত ব্যাক্তির অনুমোদন ছাড়া কোন কাজ করা যাবে না। কার্যনির্বাহী কমিটির সকল সদস্যকে তার নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। এক্ষেত্রে কোন ভিন্নমত থাকলে তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধনা করতে হবে। কমিটির সকলকে তাদের কাজের জন্য তার কাছে রিপোর্ট করতে হবে। সভাপতি কার্যনির্বাহী কমিটির সকল সভার সভাপতিত্ব করবেন।

উদ্ধর্তন সহ সভাপতি: সভাপতির অনুপস্থিতিতে তিনি সভাপতির যাবতীয় দায় দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া সবসময় সভাপতিকে তার যাবতীয় কাজে সহায়তা করবেন। সভাপতির অনুপস্থিতিতে তিনি যে কোন বিষয় তার পক্ষে অনুমোদন স্বাক্ষর করতে পারবেন।

সহ- সভাপতি: সভাপতি ও উদ্ধর্তন সহ- সভাপতিকে তাদের কাজে সহযোগিতা করবেন।

সাধারণ সম্পাদক: এই পদে যিনি থাকবেন তিনি কার্যনির্বাহী কমিটির যাবতীয় কার্যক্রম সরাসরি পর্যবেক্ষন করবেন। কমিটির অন্যান্য সদস্যদের কাজের তদারকি করবেন। কার্যক্রমের যাবতীয় প্রয়োজনাদি পুরনে ভুমিকা রাখবেন। সকল প্রকার সভা ও অনুষ্ঠানাদীর আযোজন করেবেন। তিনি যাবতীয় কাজের জন্য অবশ্যই সভাপতি বা তার মনোনীত ব্যাক্তির সাথে পরামর্শ করবেন। সভাপতির মত তার অনুমোদন ব্যতিত কোন কাজ করা যাবে না। কমিটির সকলকে তার কাজে সহায়তা করতে হবে।

সহ- সাধারণ সম্পাদক: সাধরন সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে তিনি তার যাবতীয় দায় দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া সবসময় সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক কে তাদের যাবতীয় কাজে সহায়তা করবেন। সাধার সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে তিনি যে কোন বিষয় তার পক্ষে অনুমোদন স্বাক্ষর করতে পারবেন।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক: সাধারন সম্পাদক ও সহ সাধারন সম্পাদকের যাবতীয় কাজে সহযোগীতা করবেন।

হিসাব রক্ষক: একটি সংগঠনের জন্য হিসাব নিকাশের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ন। তাই যিনি এই পদে থাকবেন তাকে অবশ্যই হিসাব নিকাশে দক্ষ হতে হবে। তাকে অবশ্যই সাবধানী হতে হবে। সর্বপুরি তাকে সৎ হতে হবে। নিম্নে তার দায়-দায়িত্বগুলো ক্রমান্বয়ে উল্লেখ করা হল-

১.) তিনি সংগঠনের যাবতীয় আয়-ব্যায় এর বাজেট প্রনয়ন, টাকা কালেকশন, কমিটির যাবতীয় খরচ/ব্যায়, বেতন-ভাতা প্রদান সহ নানাবিধ হিসাব সংক্রান্ত কাজ করবেন।

২) খচরচের ক্ষেত্রে অবশ্যই ভাউচার ব্যবাহার করতে হবে। তাতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অথবা তাদের মনোনীত ব্যাক্তির অনুমোদন থাকতে হবে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুমোদন ছাড়া কোন প্রকার লেন-দেন/খরচ করা যাবে না।

৩) কার্যনির্বাহী সভায় মাস ও বছর শেষে হিসাব সংক্রন্ত রিপোর্ট প্রদান করবেন এবং উক্ত সভার সিদ্ধান্ত মত পরবর্তী কাজ পরিচালনা করবেন।

৪) তিনি সময়ে সময়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে তার যাবতীয় কর্মকান্ড সংক্রান্ত সুবিধা ও অসুবিধা তুলে ধরবেন। তাদের সাথে পরামর্শ করে নির্দেশ মত কাজ করবেন। এছাড়া তিনি আর কারো সাথে হিসাব সংক্রান্ত কোন বিষয়ে আলোচনা করতে পারবেন না।

৫) যেহেতু এটি আমানতদারীর কাজ আর হিসাব নিকাশ সংক্রান্ত যাবতীয় দায় হিসাব রক্ষকের উপরই বর্তায় তাই পূর্ন আমানতদারীর সাথে সর্বোচ্চ গুরুত্বসহকারে এককাজ করতে হবে।

৬) তার চাহিদামত কমিটির সদস্যগন তাকে সহযোগীতা করবেন।

সহ-হিসাব রক্ষক: হিসাব রক্ষকের চাহিদার আলোকে তার যাবতীয় কাজে সহায়তা করবেন। হিসাব রক্ষের অনুপস্থিতিতে তিনি হিসাব রক্ষকের পক্ষে দায়িত্ব পালন করবেন। তিনিও হিসাব সংক্রান্ত কোন বিষয় সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, হিসাব রক্ষক ব্যতিত আর কারো সাথে আলোচনা করতে পারবে না।

সাংগঠনিক সম্পাদক: একটি সংগঠনে সাংগঠনিক ভিত্তি এই পদের উপর অনেকাংশেই নির্ভির করে। তাই তার দায়-দায়িত্বগুলো খুবই গুরত্বপূর্ণ। নিম্নে তা ক্রমান্বয়ে উল্লেখ করা হল-

১) এই পদে যিনি থাকবেন তিনি সংগঠনের সাংগঠনিক সুযোগ-সুবিধা ও সমস্যাগুলো নিয়ে কাজ করবেন।

২) তিনি সময়ে সময়ে কমিটির সকল সদস্যদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে বা নানা মুখি কর্মকান্ডের মাধ্যমে কমিটি ও কমিউনিটির সদস্যদরে মাঝে ঐক্য ধরে রাখবেন।

৩) এলাকায় কোন প্রকার অনৈতিক বা বে আইনি কর্মকান্ড বা চুরি ডাকাতি হলে কমিউনিটির সকল সদস্য ও নিরাপত্তা সম্পাদকগণ তার কাছে রিপোট করবে। তিনি সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের পরামর্শ ক্রমে উদ্ধুত সমস্যার সমাধান করবেন।

৪) নতুন বাড়ীতে নাম্বার দেয়ার ব্যবস্থা করা এবং নতুন কোন বাড়ী হলে তার তথ্য হিসাব বিভাগে প্রদান করতে হবে।

৫) থানা এবং এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিদের সাথে সু সম্পর্ক রক্ষায় কাজ করবেন। প্রয়োজনে তাদের গিফট/উপহার প্রদান করবেন বা তাদের সংগঠনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রন দিবেন। এক্ষেত্রে প্রচার ও আমন্ত্রন বিষয়ে প্রচার সম্পাদক তাকে সর্বাত্তক সহযোগীতা করবেন।

৬) তিনি সাধারন সম্পাদকের চাহিদানুয়ায়ী তার কাজে সরাসরি সহযোগীতা করবেন। তিনি সিকিউরিটি নিয়োগ- অব্যহতি ও তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি বিষয়ে পর্যবেক্ষনের আলোকে সুপারিশ করবেন।
৭) সময়ে সময়ে এই কাযর্ক্রমের তাৎক্ষনিক অবস্থা সাধারণ সম্পাদককে অবহিত করবেন।

৮) তিনি প্রধান নিরাপত্তা সম্পাদকের সাথে একযোগে মাঝে মাঝে সম্মিলিত কমিটির সদস্যদের নিয়ে রাতে এলাকায় টহলের আযোজন করবেন। এছাড়া নানাবিধ অনুষ্ঠান আয়োজনে সাধারণ সম্পাদক কে সহায়তা করবেন।

৯) তিনি মাস/বছর শেষে কার্যনির্বাহী সভায় তার কর্মকান্ডের রিপোর্ট প্রদান করবেন এবং উক্ত সভার সিদ্ধান্ত মত পরবর্তী কাজ পরিচালনা করবেন।

সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক: যেহেতু সাংগঠনিক কাজের পরিধি ব্যাপক এবং সাংগঠিনিক সম্পাদকের একার পক্ষে এই কাজ করা খুবই দুরহ হবে তাই এই পদে একাধিক ব্যাক্তিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা সাংগঠনিক সম্পাদককে তার কাজে সর্বাত্তক সহযোগীতা করবে এবং তার অনুপস্থিতিতে তার পক্ষে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

প্রধান নিরাপত্তা সম্পাদক: এই পদে যিনি থাকবেন তিনি এলাকার নিরপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করায় ন্যস্ত থাকবেন। নিম্নে তার দায়-দায়িত্বগুলো ক্রমান্বয়ে উল্লেখ করা হল-
১) এলাকা পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে দিন /রাতে ঝুকিপূর্ন এরিয়াগুলো চিহ্নিত করা। সে মতে সমস্যা সমাধানে সুপারিশ প্রদান করা।
২) সিকিউরিটিদের কাজের সরাসরি তত্বাবধান করা। তাদের তাৎক্ষনিক সমস্যা সমাধান করা। ৩) তাদের সাথে মাঝে মাঝে থেকে তাদের উৎসাহ প্রদান করা।
৪) মাঝে মাঝে কমিটির সকল সদস্যদের নিয়ে রাতে এলাকা টহল দেয়া। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে সাংগঠনিক সম্পাদকের সহযোগীতা নেয়া।
৫) সিকিউরিটিকে তার কাজে কেউ বাধা বা হুমকি প্রদান করলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া।
৬) থানার নিয়োজিত ডিউটি অফিসারদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে প্রয়োজনে তাদের সাহায়্য নেয়া।
৭) কোন বাড়ীতে চুরি ডাকাতি বা অনৈতিক ও বেআইনি কাজ হলে সিকিউরিটি সরাসরি নিরাপত্তা সম্পদককে অবহিত করবে এবং তিনি সাংগঠনিক সম্পাদককে বিষয়টি অবহিত করবেন।
৮) মাস/বছর শেষে কার্যনির্বাহী সভায় তার কর্মকান্ডের রিপোর্ট প্রদান করবেন এবং উক্ত সভার সিদ্ধান্ত মত পরবর্তী কাজ পরিচালনা করবেন।

সহ- নিরাপত্তা সম্পাদক: যেহেতু নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়টি একটু জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ এবং প্রধান নিরাপত্তা সম্পাদকের একার পক্ষে এই কাজ করা খুবই দুরহ হবে তাই এই পদে একাধিক ব্যাক্তিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা প্রধান নিরাপত্তা সম্পাদককে তার কাজে সর্বাত্তক সহযোগীতা করবে এবং তার অনুপস্থিতিতে তার পক্ষে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

প্রচার সম্পাদক: বলা হয় প্রচারে প্রসার। একটি সংগঠনকে সবার কাছে সুন্দর ভাবে উপস্থাপনার দায়িত্ব প্রচার সম্পাদকের। তাই তার প্রচার সংক্রান্ত কর্মকান্ড দায়-দায়িত্বগুলো খুবই গুরত্বপূর্ণ। নিম্নে তা ক্রমান্বয়ে উল্লেখ করা হল-

১) এই পদে যিনি থাকবেন তিনি কমিউনিটি সকল সদস্যদের সাথে এই কমিটির যোগাযোগ রক্ষা করনে চিঠি পত্র, নোটিশ, বিজ্ঞপ্তী ইত্যাদি প্রকাশে ও প্রচারে ভুমিকা রাখবেন।
২) এছাড়া কমিটির সভা, সেমিনার বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আমন্ত্রন সংক্রান্ত কাজ করবেন।
৩) কমিটির বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও মতামত সদস্যদের কাছে পৌছে দিবেন।
৪) জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য দেয়াল লিখন বা অন্য যেকোন প্রকার প্রচার কাজে তার দায়িত্বের অন্তভুক্ত হবে।
৫) মাস/বছর শেষে কার্যনির্বাহী সভায় তার কর্মকান্ডের রিপোর্ট প্রদান করবেন এবং উক্ত সভার সিদ্ধান্ত মত পরবর্তী কাজ পরিচালনা করবেন।

সহ-প্রচার সম্পাদক: যেহেতু প্রচার সংক্রান্ত বিষয়টি বেশির ভাগ সময় তরিৎ ও স্বল্প সময়ের মধ্যে অনেকের সাথে যোগাযোগ রক্ষার কাজ যা প্রচার সম্পাদকের একার পক্ষে এই কাজ করা খুবই দুরহ হবে তাই এই পদে একাধিক ব্যাক্তিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা প্রচার সম্পাদককে তার কাজে সর্বাত্তক সহযোগীতা করবে এবং তার অনুপস্থিতিতে তার পক্ষে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

দপ্তর সম্পাদক: একটি সংগঠনে দপ্তর না থাকলে তার কাজ করা খুবই দুরহ। আপাতত যদিও কোন দপ্তর নেই তথাপি দপ্তর সম্পাদকের দায় দয়িত্ব এই সিমাবদ্ধতার মধ্যেই পালন করতে হবে। আর তার দায়-দায়িত্বগুলো খুবই গুরত্বপূর্ণ। নিম্নে তা ক্রমান্বয়ে উল্লেখ করা হল-

১) অফিসিয়াল যাবতয়ি চিঠি ও ডুকমেন্ট, নোটিশ ইত্যাদি ডেস্ক সংক্রান্ত কাজ পরিচালনা কববেন।

২) নৈশ পহরীরা তাদের আসা যাওযার/ হাজিরা বিষয়ে তার কাছে রিপোট করবেন। মাস শেষে রিপোর্টটি হিসাব বিভাগে প্রেরন করতে হবে।

৩) এছাড়া এ কার্যক্রম চালাতে যা দরকার যেমন লাঠি, বাশি, ড্রেস, লাইট, জুতা ইত্যাদি বিষয়ে সময়ে সময়ে কমিটিকে জানাবেন এবং যা যা দরকার সেগুলোর জন্য নোট উপস্থাপন করে প্রচার সম্পাদকের কাছে প্রেরন করবেন।

৪) সংগঠনের বর্তমানে কোন নির্দিষ্ট কার্যলয় নাই। তাই অফিসিয়াল কার্যক্রম নিজ দায়িত্বে সুবিধা মত করতে পারবেন। এবং সংগঠনের অফিস ঘর ব্যবস্থাপনা ও অফিস বিষয়ক নানা মুখি সমস্যা সমাধানে সময় সময়ে সাধারন সম্পাদককে অবহিত করবেন।

৫) বেতন ভাতা বা রিপোট সীট তৈরিতে হিসাব বিভাগকে সহায়তা করবেন।

৬) সকল প্রকার নথি পত্র ও ওয়াসটেজ দপ্তরে সংরক্ষন করবেন।

৭) মাস/বছর শেষে কার্যনির্বাহী সভায় তার কর্মকান্ডের রিপোর্ট প্রদান করবেন এবং উক্ত সভার সিদ্ধান্ত মত পরবর্তী কাজ পরিচালনা করবেন।

সহ- দপ্তর সম্পাদক: এই পদে যিনি থাকবেন দপ্তর সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে তিনি তার যাবতীয় দায় দায়িত্ব পালন করার পাসাপাসি তার নিয়মিত কাজে সার্বিক সহযোগীতা করবেন।

সংস্কৃতিক সম্পাদক: এই পদে যিনি থাকবেন তিনি কমিউনিটি পুলিশ কার্যক্রমের বিনোদন সংক্রান্ত কর্মকান্ড পরিচালনা করবেন। এই সংগঠনের উদ্যোগে বিভিন্ন প্রকার খেলাধুলা, নাটক, মেলা, দেয়ালিকা, বা ম্যাগাজিন প্রকাশ ইত্যাদি কাজ করবেন।

কার্যনির্বাহী সদস্য: এ কমিটিতে একাধিক কার্য নির্বাহী সদস্য রাখা হয়েছে। যারা কার্যনির্বাহী কমিটির সকল পদের দায়িত্বপ্রাপ্তাদের তাদের চাহিদার আলোকে সহযোগীতা করবেন। এই সদস্য প্রয়োজনে হ্রাস -বৃদ্ধি হতে পারে।

সাতাইশ কমিউনিটি পুলিশের কার্যনির্বাহী কমিটির উদ্যোগে বাড়ির নাম্বার প্লেট লাগানো কার্যক্রমের  কিছু ছবি ………