প্রশ্ন আর উত্তরে নারী অধিকার ও পর্দা

আতাস্বপন
Published : 26 March 2016, 10:54 AM
Updated : 26 March 2016, 10:54 AM

কিছু সুবিদাবাদীির মধ্যে ইদানিং নারীর অধিকার নিয়ে বেশী বেশী চুলকানী। অথচ তারাই নারীর অধিকার বেশী লংঘন করছে। নারী স্বাধীনতার কথা বলে তাদের কৌশলে ভোগ করছে। কৌশলে তাদের বস্র হরন করে উলংগ করছে মায়ের জাতিকে। তাদের বাজেরের পন্য বানিয়ে ছেরেছে।

আমার এক নাস্তিক টাইপ বন্ধু সেদিন বলল, বিশ্বে ধর্মের সৃষ্টি হয়েছে নারীকে শোষনের জন্য। এমন কোন ধর্ম দেখলাম না যেখানে নারীর তার যোগ্য সম্মান পেয়েছে। তুই এই যে বিয়ে করে বৌ কে ঘরে আনলি তারপর থেকে শুরু করলি তোর খবরদারি। এই সংসার কে আপন করে নাও। হাদিস শোনাস, স্বামীর আনুগত্য যে করে সে জান্নাত পাইবো। এইসব। স্বামীর আনুগত্য কেন তাকে করতে হবে? তার কি কোন স্বাধীনতা নাই? তার পার্সোনালিটি তে কেন আঘাত করতে হবে? তার কি কোন প্রাইভেসী থাকবে না। পুরুষ কে বৌএর আনুগত্য করতে হবে এমন হাদিস নাই কেন? পুরুষ আর নারী সবারই দুই হাত দুই পা । নাক মুখ চোখও একরকম। তবে নারীকে পুরুষের কেন আনুগত্য করতে হবে? আমারে বলতে পারবি নারীরে ইসলাম ধর্ম কেমনে সমান অধিকার দিল?
আছা আমাদের হাততো দুইটি! নাকি?
দুইটিই তো।
ঠিক কথা! একটা ডান হাত। একটা বাম হাত। দুই হাতরে কাজ কি এক?
না!
ভালো কথা! ডান হাত দিয়া করি?
কেন! ভাত খাই। বেশীর ভাগ লোক ডান হাতে লেখে।
ঠিক বলেছিস। এগুলোতো করে প্রায় সবাই। কিন্তু মুসলমানরা ডান হাত দিয়ে সকল ভাল কাজ করে। ডান হাতে দান করে। ডান হাতকে শুদ্ধ কাজের ক্ষেত্রে অগ্রগন্য করে। আর আল্লাহ ভালো লোকদের ডান হাতেই আমল নামা দেবেন। এবার বলতো বাম হাত দিয়া কি করি?
এই তুই কি হাতের উপর পিএইডি করবি নাকি? কি শুরু করলি?
আরে বাবা বল না? বাম হাত দিয়া কি করি?
যত খারাপ কিছু ধরি। ওয়াশরুমেতো এই হাতই কাজে লাগে। নোংরা আবর্জনা ধরি।
তাইতো! এই বার বলতো আমি যদি তোকে ডান হাত দিয়ে বাম হাতের কাজ করতে বলি তুই কি তা করবি?
ছি: ছি: মাথা খারাপ! যেই হাতে খাই ওই হাতে এই কাজ কবর কিভাবে। ঘৃন লাগবে না।
বাহ! নিজের বুজ পাগলেও বুঝে। তাইলে এইবার ভাব ডান হাত দেখতে হুবহু বাম হাতের মত । পাঁচটি আংগুল। অথচ কাজ ভিন্ন। ডান হাত ইচ্ছে করলে বাম হাতের কাজ করতে পারে? কি বলিসি? পারে না?
তা পারে। কিন্তু………….
কিন্তু কি? এইটা বলবিতো এই সব নোংরা কাজ ডান হাত দিয়ে পারতো পক্ষে না করাই ভাল। মহান আল্লাহ নারীকে সুন্দর আর কোমল করে গঠন প্রকৃতি দিয়েছেন। যা সবাইকে আকৃষ্ট করে। তার গঠন প্রকৃতি অনুযায়ী তাকে কাজও দিয়েছেন। এই কাজের মান ১০০। আবার পুরুষ কে দিয়েছেন তার গঠন প্রকৃতি অনুযায়ী কাজ । এর মানও ১০০। উভয়ই তাদের কাজের ক্ষেত্রে ১০০ মার্ক এর হকদার। পুরুষ আর নারী একই রকম কাজ করলেতো মানে ব্যালেন্স হয়তো আসতো কিন্তু দুনিয়ার নিয়মনীতি হত ব্যালেন্স ছাড়া। এতে নারী পুরুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য ব্যহত হত। তাই আল্লাহ ভিন্ন ভিন্ন দায় দায়িত্বে মান সমান করেছেন। কোথাও একটি কাজে পুরুষ মানে এগিয়ে আবার কোথাও নারী একটি কাজে মানে এগিয়ে। ডান হাত বাম হাতের কাজ করতে পারে ঠিকই কিন্তু করলে যেমন ঘৃন ঘৃন লাগে, দৃষ্টিকুটু লাগে। তেমনি নারী পুরুষের কাজ করতে পারে ঠিকই করলে ঘৃন ঘৃন লাগে। দৃষ্টিকুটু লাগে। সমাজ ব্যলেন্স ছাড়া হয়ে পড়ে। তাই তাকে তার বৈশিষ্ট্যমত কাজ দেযা হয়েছে। আর তাতে সেই শ্রেষ্ঠ। পুরুষ হাজারো চেষ্টা করলে মা হতে পারবে কি? মাযের পায়ের নিচে বেহেশত। পুরুষের কি সে যৌগ্যতা আছে?

বুঝলাম এই ভাবে বললেতো ঠিকই আছে। তবে নারীকে কেন পর্দা করতে হবে? পুরুষকে নয়?

এইটা একটা ভুল কথা। নারী পুরুষ উভয়েরই পর্দা করতে হবে। শুধু নারীর জন্য পর্দা নয়। তাইতো ইসলামে পুরুষের শরীর ঢাকার বিধান যেমন রয়েছে তেমনি নারীরও রযেছে। যাকে ছতর ঢাকা বলে। পুরুষের ছতর নাভির নীচ থেকে পায়ের টাকনু গীড়ার আগ পর্যন্ত। আর নারীদের মাথার চুল থেকে শুরু করে পাযের পাত পর্যন্ত। অবশ্য প্রয়োজনে মুখ ও হাতের কব্জি দেখানো যাবে। এটাই শরিয়তের বিধান। পর্দা করা উভয়ের জন্যই ফরজ।

দেখ এইখানে পুরষকে বলে নাভিথেকে আর নারীদের বলে পুরো শরীর। কেন বাবা এই বৈষম্য? তাছাড়া নারীকে পর্দা দিয়ে আবদ্ধ করে রাখা কেন?

দেখ বললামইতো নারীর বৈষষ্ট্যাটাই আকর্ষনীয় করে গঠিত। নারী যতই দেখতে কালো বা কুচ্ছিত হোক তার গঠন কিন্তু আকর্ষনীয় সবসময়ই। তাই তার গঠন প্রকৃতি যাতে দুষ্টের (কোরআনের ভাষায় যাদের অন্তরে রোগ আছে) তাদরে বদ নজরে যাতে না পরে তাই মহান সৃস্টিকর্তা আল্লাহ এই বিধান দিয়েছেন। পর্দা নারীর সম্মান রক্ষায়। হেফাজতের জন্য। যেমন ডান হাত দিয়ে যদি কখনো নোংরা কাজ করতেই হয় তখন তাতে গ্লাফস পড়ে নিলে জিবাণু আক্রমন করবে না। হাতটি হেফাজতে থাকবে। ঠিক তেমনই নারী যদি পুরুষের সমাজে বাধ্যহয়ে চলাফেরা উঠাবসা চাকুরী-বাকরী করতেই হয় এই নোংরা সমাজের জীবাণুগুলো থেকে বাঁচতে তাকেতো গ্লাফস পড়তেই হবে। তাই নয়কি?

যাই বলিস না কেন এতে নারীদের সম্মানের ছুতায় স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হচ্ছে। নারীকি নিজেকে রক্ষা করতে পারে না। পুরুষ থেকে নারীরা এখন অনেক এগিয়ে। শিক্ষা দিক্ষায়।

একদম ঠিক কথা। যদি নারী পুরুষের অবাধ মিলামশার মাধ্যমে সেই শিক্ষাকে কুলষিত করা হয় তার দাম কোথায়? ছেলে মেয়েরা আজ আধুনিক শিক্ষার নামে অবধা মেলামেশা আর নোংরমীতে মক্ত। হায়া বা লজ্জা বলে যে কিছু আছে দুনিয়ায় তা ভুলতে বসেছে। এই শিক্ষার কি মূল্য আছে? ওরাতো শিক্ষিত শয়তান।

তুইতো দেখছি বর্বর জাতির মত কথা বলছিস। শিক্ষাদিক্ষা করতে গেলে একটু আধটুতো মেলামেশা হবেই। তা কি দোষের?

আচ্ছা তোর বোন আছে? মা আছে?

আছে।

ভাল কথা। তোর বোনকে যদি তার বয় ফ্রেন্ড কিস করে আর তুই তা দেখেফেলিস । বা তোর মাকে যদি অন্যপুরষের সাথে দেখিস ঢলাঢলি করতে তখন তুই কি করবি?

ব্যাক্তিগত ভাবে জড়িয়ে প্রশ্ন করছিস কেন? এটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না?

দোস্ত! কুল ডাউন! এটা জাস্ট উদাহরন……….ডোন্ট মাইন্ড প্লিজ। বল তুই কি করবি?

এমন হলে অবশ্যই খুন করব শয়তানের বাচ্চাদের।

বাহ! একটু আগে আমি বর্বর হয়ে গেলাম তাদের যখন শিক্ষিত শয়তান বলেছি। আর তুই এখন তাদের খুন করতে চাচ্ছিস। কেন? নিজের সম্মানের উপরে আঘাত আসলো বলে? কেনরে ভাই দ্বিমুখী নিতী? শুন যারা এসব করছে বা যারা স্বিকার হচ্ছে তারা কারো মা। কারো বোন। কারো স্ত্রী। আমরা অন্যের মা বোন স্ত্রীদের যেভাবে দেখি নিজের বেলায় তা চাই না। আমরা আসলেই ভন্ড। এই আমাদের শিক্ষা। যারে বলে আধুনিক শিক্ষা। পুরুষরা যে নারীদের স্বাধীনতার নামে তাদের ভোগ করছে। তাদের অসম্মান করছে। তাদের বাজারে নামিয়েছে। মডেলিং করছে তাদের নিযে। সুন্দরী প্রতিযোগীতা করছে তাদের শরীর নিযে। তারা তাকে স্বাধীনতা ভাবছে। তারা বুঝতে পারছে না। এ কোন শিক্ষা তারা পেল যা তাদের জ্ঞান না দিয়ে অজ্ঞান করে ফেলল।

তাই বলে কি নারীরা শিক্ষা গ্রহন করবে না? আর তারাতো পোষাক পড়েই। নেংটো হয়েতো যায় না?

ইসলাম নারী পুরুষ উভয়কেই শিক্ষায় উৎসাহিত করে আর তা হল নৈতিক শিক্ষা। যা মানুষকে নম্র ও ভদ্র করে। মানুষকে মানুষ হিসেবে চলতে শিখায়। পুশু হিসেবে নয়। নারী ও পুরুষ উভয়েরই পর্দা মানতে হবে। পোষাক পড়ার পরও যদি নিজেকে ঢেকে রাখা না যায় সে পোষাক পড়ার দরকার কি? টাইটফিট পোষাক ছেলেমেয়ে উভয়এর জন্যই নিষিদ্ধ। এতে শরিরের গঠন বুঝা যায়। ইসলাম মতে মোটা আর ঢিলাঢালা পোষাক পড়তে বলে। ইসলামি শরিয়ত মানলে নারী হবে ঘরের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। বাজেরর পন্য নয়। আমি বুঝি না তারা কি শিক্ষা পেল যে কোনটা ভাল আর কোনটা মন্দ তা এখনো বুঝতে শিখল না। বড়ই আফসোস। বেকুবে দুনিয়া আজ সয়লাব।

নারীকে সম্পদ বলা হচ্ছে কেন?

নারীকে এখানে জড় পদার্থ টাইপ কোন সম্পদ বলা হয়নি। এখানে মহা মূল্যবান টাইপ কিছু, এটাই বুঝানো হয়েছে। আচ্ছা আমরা যদি বলতে পারি তুমি চাদের চেয়েও সুন্দর। যদি বলতে পারি ফুলের চেয়েও কোমল। শ্রেষ্ঠ সম্পদ বললেই দোষ না।

ঠিক আছে মানলাম সব। তবে এভাবে পুরোপুরি ঢাকার দরকার কি? একটু বেশী বেশী বারাবাড়ি না? তাদের কি মনে হতে পারে না পোষাকটা একটা কাড়াগার?

আধুনীক শিক্ষার নামে নারীরা ইভটিজিং এর স্বীকার হচ্ছে। কিন্তু নারীরা তা বুঝতে পারছে না। ভাবছে তাদের স্বাধীনতা হরন করে তাদের পোষাকের কাড়াগারে বন্দি করা হচ্ছে। আচ্ছা মহশুণ্যে যখন মানুষ যায় তখন একটা মোটা পোষাকের ভিতর বন্দি হতে হয়। কেন? মহাশুন্যের জন্য ওটা উপযুক্ত পোষাক । কেউ আমার অস্বস্থি লাগছে বলে তা খুলে ফেলে না। কিংবা সাগরে ডুবুরিরা যখন নামে তাদেরও পোষাকে বন্দি হতে হয। কেন? সাগরে ঐ টাইপের পোষাক পরলেই সহজে সাতার কাটা যাবে। কই কেউতো বলে না আমাকে পোষাকের কাড়াগার থেকে মুক্ত করে দাও। কেন বলে না? বলতো?

কেন আবার ! ওটাতো ওদের সুরক্ষার জন্যই তৈরি করা হয়েছে। মহাশূন্য আর সাগরে তাদের নির্বিঘ্নে চলাচলে জন্য এই ব্যবস্থা। পোষাক না থাকলেতো তারা সমস্যায় পড়বে। মৃত্যু ঝুকিতে পড়বে।

আমিতো তাই বলছি। মহাশুন্যে সাগরে যেমন পোষাক আছে । দুনিয়াতেও নারী পুরুষ উভয়্কেই তাদের নিরাপত্তার জন্য পোষাক দিয়েছে ইসলাম। আজ পোষাক হয়েছে ফ্যাশন। হয়েছে আধুনিকতার নগ্ন মাপকাঠি। আসলে যাদের অন্তরে ইসলামের জ্ঞান আল্লাহ দিতে চান না না তারা তা পায় না। পবিত্র আল কোরআনইতো বলেছে সুরা বাকারায়- এই সেই কিতাব! যাতে বিন্দু মাত্র সন্দেহ নেই । আর এটা মোত্তাকী (খোদাভীরু)দের জন্য পথ প্রদর্শক। অর্থাৎ আল্লাহকে যারা ভয় পায় তারাই এর জ্ঞান বুঝা ও মানার সৌভাগ্য অর্জন করবে। জ্ঞান পাপীরা নয়।