ব্যাংকে একাউন্ট নেই এমন লোক খুঁজে পাওয়া বর্তমানে দুষ্কর। প্রাত্যহিক লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে ব্যাংক এর প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করার উপায় নেই। বর্তমানে এই অতীব জরুরী অর্থনৈতিক ব্যবস্থাটি বাংলাদেশে বড়ই জটিল থেকে জটিলতর হয়ে যাচ্ছে। নানা রকমের নিয়ম-কানুনের ফেকরা। সেরের উপর সোয়াসের হিসেবে যুক্ত হয়েছে জঙ্গি সংক্রান্ত নিরাপত্তা। ফলে করাকরি থেকে আরো করাকরিতে পৌঁছেছে ব্যাংকিং লেনদেন। আর বাড়ছে গ্রাহকদের দুর্ভোগ ক্রমাগত। স্বাভাবিক লেনদেনের জটিলতার কথা পরে আরেকদিন বলা যাবে, আজ বলবো বিশেষ লেনদেন সংক্রান্ত জটিলতার কথা।
আমার বাবা সোনালী ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, মতিঝিল ঢাকাতে প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে দীর্ঘদিন চাকুরী করার পর অবসরে যান ২০০১ সালের জুন মাসে। চাকুরিতে থাকাকালে তিনি উক্ত ব্যাংকের কর্মচারী ঋণ বিভাগ হতে গৃহ নির্মাণ ঋণ গ্রহণ করেন। যার বদৌলতে টঙ্গীর বর্তমান বাড়িটি বাবা আমাদের জন্য গড়েছেন। আমার বাবা ইন্তেকাল করেন ২০০৯ সালের ৪ আগস্ট। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই ঋণটির কিস্তি বাবা পরিশোধ করেছেন। পরে আমরা ওয়ারিশরা এই ঋণ কিস্তি চালিয়ে গত ২৩ শে মার্চ ২০১৭ ই তারিখে পরিপূর্ণ পরিশোধ করি। ঋণ এর বিপরীতে ব্যাংকে আমাদের বাড়ির দলিল ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্র বন্ধকীকরণ করে সংক্ষরণ করা হয়।
ঋণ পরিশোধের পর বন্ধকিকৃত সম্পত্তির সমুদয় দলিলপত্রাদি রিডমশন (অবমুক্তকরণ) দলিল পূর্বক ফেরত চাইলে ব্যাংক ওয়ারিশ সনদ চায়। তখন বর্তমান গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন টঙ্গী অঞ্চল পূর্বে টঙ্গী পৌরসভা হতে তৎকালিন টঙ্গী পৌর চেয়ারম্যান জনাব আজমত উল্রাহ স্বাক্ষরে বাবার মৃত্যু সনদ ও ওয়ারিশ সনদ করিয়ে নেই। ব্যাংককে জানানো হয় যে, আমাদের কাছে পৌর চেয়ারম্যানের ওয়ারিশ সনদ আছে। কিন্তু ব্যাংক সেটাকে এক্ষেত্রে ইনিভেলিড করে দেয়। বলা হয় কোর্টের থেকে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ওয়ারিশ সনক্তকরণ প্রত্যয়ন জমা দিতে হবে। তারপর ব্যাংকের প্রসিডিউর শুরু হবে।
দলিল নিয়ে টঙ্গী সাব রেজিস্ট্রি অফিসে এসে রিডমশন দলিল করে ওয়ারিশকে দলিল বুঝিয়ে দেয়া হবে। কাজটাকে যদিও খুব স্বাভাবিক বা সহজ মনে হচ্ছে, আদতে কিন্তু এটা এতো স্বাভাবিক বা স্মুথ না, খুবই জটিল। উকিল ঠিক করে তার মাধ্যমে কাজটি করতে খরচ যেমন আছে তেমন আছে ক্রমাগত দৌড়ঝাঁপ। কাজকর্ম করে সবাইকে খেতে হয়, এক্সট্রা টাইম কোথায় এই দৌড়ঝাপের জন্য? আমাদের বসরা কি আমাদের সমস্যা বুঝবেন? ওয়ারিশ সনদ জমা হবার পর রিডমশন দলিলের জন্য আবেদন ব্যাংকে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা। আর এ প্রসিডিউরটিও সময়সাপেক্ষ। হুট করে দলিল করে দিবে এমন নয়। তাদেরকে তাগাদা দেয়া লাগে সময়ে সময়ে। এসব করার জন্য ব্যাস্ততম এ নগরীতে আমাদের এক্সট্রা সময় কোথায়? এত ঝামেলা কেন? এর কি কোন সহজ উপায় নেই? কেনই বা পৌর চেয়াম্যানের সনদ গ্রহণ করা যাবে না? সেকি তবে নির্ভরযোগ্য ব্যাক্তি নন? ব্যাংকার কেউ এই ব্লগে থাকলে একটু পরামর্শ দিন। যদিও আমার বাবার কলিগদের সাথে ইতিমধ্যে আলাপ করেছি কিন্তু তারা কোন সদুত্তর দিতে পারে নাই।
কিভাবে সহজে ব্যাংকের কাছ থেকে আমরা ওয়ারিশরা জমির দলিল রিডমশন সহ পেতে পারি? উকিল, ব্যাংকার কেউ কি আছেন? আপনাদের একটু সহযোগিতা চাচ্ছি।