ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার মূলধন সংস্থান- কর্মকৌশল প্রণয়নে BDYEN এর অগ্রযাত্রা শুরু

আজমান আন্দালিব
Published : 7 July 2012, 07:16 AM
Updated : 7 July 2012, 07:16 AM

ক্ষুদ্র উদ্যেক্তাদের মূলধন সংস্থান-সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে ব্লগ বৈঠক-১ এ গঠনমূলক অনেক আলোচনা এসেছে। আমাদের চারিদিকে অনেক অর্থনৈতিক সম্ভাবনা আছে। এ সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগানোর দূরদৃষ্টি নিয়েই একজন উদ্যোক্তা এগিয়ে যায়। 'ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মূলধন সংস্থান' কর্মকৌশল নির্ধারণ সংক্রান্ত কর্মশালায় ব্লগের বিজ্ঞ উদ্যোক্তাদের অভিজ্ঞতালব্ধ যে দিক নির্দেশনা পেয়েছি তাতে আমাদের কর্মশালা অনেক সমৃদ্ধ হয়েছে। যে লেখা দিয়ে আমাদের এই অগ্রযাত্রার শুরু-ক্ষুদ্রঋণ নয় ক্ষুদ্র মূলধন দিন, ঋণগ্রহীতা নয় উদ্যোক্তা বাড়ান

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে মূল্যবান আলোচনা এবং দিক নির্দেশনার জন্য সামহোয়্যারইনব্লগ, বিডিনিউজ২৪ ব্লগ এবং শব্দনীড় ব্লগের বন্ধুদের কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। অনেকের বাস্তব অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান থেকে আমাদের পরবর্তী করণীয় কি তার উপায় বাতলে দিয়েছেন। আমরা সে লক্ষ্যে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি।

ব্লগ বৈঠক দুটোর মতামত বিশ্লেষণ করে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে, আমাদের দেশে উদ্যোক্তা হওয়ার প্রধান অন্তরায় হচ্ছে- উদ্যোক্তাদের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক কোনো প্রণোদনা নেই। কেউ আত্মকর্মসংস্থানে উদ্বুদ্ধ হতে চাইলে তাকে সহায়তা করবে এরকম কোনো কর্মসূচি নেই। বিশেষায়িত কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। একজনকে উদ্যোক্তা হতে চাইলে অন্ধকারেই হাতড়ে হাতড়ে এগুতে হয়। পদে পদে দুর্ভোগ পোহাতে হয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে গিয়ে।

একজন উদ্যোক্তার অনেক ধরনের কাজ থাকে। একটা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য মূলধন সংস্থান থেকে শুরু করে পণ্য ভোক্তার কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত অনেক কাজ। প্রকল্প বাজেট প্রস্তুত, সংগঠিত হওয়া, উপযুক্ত কর্মী নিয়োগ, তাদের দক্ষ হাতে পরিচালনা ইত্যাদি ইত্যাদি। বাস্তব কাজগুলো হচ্ছে ব্যবসায়ের জন্য পণ্য নির্বাচন, ব্যবসায়ের রেজিস্ট্রেশন, ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ, ব্যবসায়ের স্থান নির্বাচন, পণ্য বা সেবার ক্ষেত্রে বিএসটিআই এর অনুমোদন, অন্যান্য ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমোদন।

একটি ব্যবসায় স্থাপনের শুরুতে যে জটিলতা একজন উদ্যোক্তাকে ঘিরে ধরে তাতে তার উদ্যম অনেকটা মরে যায়। মূলধন সংস্থানের জটিলতা তো আছেই। সাথে আছে ব্যবসায়ের সুনির্দিষ্ট রূপরেখা দাঁড় করানোর অনভিজ্ঞতা। অনভিজ্ঞ এই উদ্যোক্তারা অংশীদার হয়ে কারও সাথে ব্যবসায়ে নেমে অনেকসময় প্রতারিত হয়। ব্যবসায়কে সুরক্ষিত রাখার জন্য অনেক আইন-কানুন আছে। নবীন উদ্যোক্তারা এই বিষয়গুলো বুঝে উঠতে পারে না। দক্ষ উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য সুনির্দিষ্ট প্রশিক্ষণ কিংবা শিক্ষা ভিত্তিক কোনো ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি আমাদের দেশে।

এত অনিশ্চয়তার মাঝে তাই কেউ উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে না। শিক্ষাজীবন শেষে চাকুরি পাওয়ার জন্য যেভাবে উদগ্রীব থাকে উদ্যোক্তা হওয়ার কথা কেউ ভুলেও মনে হয় ভাবে না। আমাদের দেশে প্রতিবছর ২৭ লক্ষ শ্রমশক্তি শ্রমবাজারে প্রবেশ করে। সরকারি বেসরকারি চাকরি মিলিয়ে সর্বোচ্চ ৭ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান হয়। প্রায় ২০ লক্ষ বেকার থাকে। কেউ কেউ ধার-কর্জ করে ব্যবসা-বাণিজ্যে নামার চেষ্টা করে। তাদের অনেকেই ২/৪ লাখ টাকা খরচ করে মধ্যপ্রাচ্য বা আফ্রিকায় এবং ৭/৮ লাখ টাকা খরচ করে ইউরোপ আমেরিকায় শ্রম বিক্রি করতে গিয়ে সর্বস্ব হারায়। কিছুই করতে না পেরে অনেকে চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজিতে জড়িয়ে অপরাধ জগতে নাম লেখায়।

আমাদের করণীয়ঃ

কর্মক্ষম এবং তরুণ এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে নিয়ে সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনা করতে হবে। তাদের জন্য প্রয়োজন বিভিন্ন প্রণোদনা, প্রশিক্ষণ, পৃষ্ঠপোষকতা। উদ্যোক্তাকে একটি সম্মানজনক পেশা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করতে চাই। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম উদ্যোক্তা হয়ে গড়ে উঠতে পারলে আমাদের অর্থনৈতিক সমস্যার অনেক সমাধান হবে। একজন উদ্যোক্তা দশজন লোকের অর্থনৈতিক নেতা হয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। সেই হিসেবে আমাদের শত শত অর্থনৈতিক নেতা প্রয়োজন।

তাই আসুন, প্রথমে আমরা সংগঠিত হই এই ফেসবুক গ্রুপ এবং পেজের মাধ্যমে। আমরা আমাদের কাজ করে যাবো সম্মিলিতভাবে। আমরা সংগঠিত হওয়ার পর একটি সুনির্দিষ্ট 'টাইম বাউন্ড অ্যাকশন প্ল্যান' নিয়ে এগুবো। আমাদের গ্রুপে কিংবা পেজে আলোচনা করেই আমরা এগুবো আমাদের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে। আমাদের আদর্শ, উদ্দেশ্য, মিশন, ভিশন আমরাই ঠিক করে নেবো দ্রুত। এখন প্রয়োজন সংগঠিত হওয়া। তাই আপনারা Bangladesh Young Entrepreneurs Network এ যোগ দিন সংগঠিত হওয়ার মানসে।

আপনাদের সবাইকে শুভেচ্ছা।

Bangladesh Young Entrepreneurs Network

Turn Your Dreaming Into Doing"– BDYEN

ফেসবুক গ্রুপ পেজ-ফেসবুক গ্রুপ পেজ
ফেসবুক ফ্যান পেজ- ফেসবুক ফ্যান পেজ