সময় এসেছে পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদ বিরোধী লেখা অন্তর্ভূক্ত করার

বাসন্ত বিষুব
Published : 18 Feb 2011, 06:35 PM
Updated : 18 Feb 2011, 06:35 PM

বাংলাদেশ বর্তমানে অন্ধবিশ্বাসের ঘোর কাটিয়ে ইতিবাচকভাবে প্রগতিশীলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের সর্বোচ্চ আইন এখন প্রত্যাশিত ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র অর্জনের প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। সাম্প্রতিক পরিবর্তনে যদিও পূর্ণাঙ্গ ধর্মনিরপেক্ষতা অর্জন করা সম্ভব হয়নি তবুও আশা করা যায় ভবিষ্যতের কোন এক শুভলগ্নে রাষ্ট্রধর্মের খড়গ ঝেড়ে ফেলে আমাদের সংবিধান আদর্শ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের সংবিধানে রূপান্তরিত হবে। আর এই রূপান্তরের ফলে এদেশের প্রতিটি মানুষ, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নিজেদেরকে সমান মর্যাদার নাগরিক ভাবতে শুরু করবে এবং রাষ্ট্র যে তাদের প্রতিপক্ষ নয় তা বিশ্বাস করার যুক্তি খুঁজে পাবে। আর এর ফল খুবই ইতিবাচক- মর্যাদাপূর্ণ সহাবস্থান। হিন্দু মুসলামানের নিচে নয় কিংবা মুসলমান হিন্দুর নিচে নয়। কিংবা কারো মর্যাদাই রাষ্ট্রের কাছে বিশেষ নয়। প্রত্যেকেই অনিবার্য। প্রত্যেকেই রাষ্ট্রীয়, প্রত্যেকেই নাগরিক।

একটি দেশের জন্য এর চেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা আর কি হতে পারে যখন সে দেশের জনগোষ্ঠীর একটি মূল্যবান অংশ মনে করতে বাধ্য হয় যে তাদের মনস্তাত্বিকভাবে পৃথক করে রাখা হয়েছে শুধুমাত্র ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে। বোধকরি আর কিছুই না। আর এই সত্য কথাটাই এদেশের নীতি নির্ধারকগণ বুঝতে শুরু করেছেন এবং কিঞ্চিত হলেও এ সম্পর্কীত কাজ করছেন। কিন্তু শুভ'র পেছনে অশুভ ক্রমধাবমান। তাই রাষ্ট্রের প্রগতিশীলতার দিকে যে অগ্রযাত্রা সূচিত হয়েছে তা স্তব্ধ করার জন্য একটি গোষ্ঠী ঠিক মতই উঠে-পড়ে লেগেছে। তারা তাদের তরুণ অনুসারীদেরও এই উদ্দেশ্য হাসিলে ব্যবহার করছে অনৈতিকভাবে। তারা তরুণদেরকে বাধ্য করছে সাম্প্রদায়িক চিন্তার জটিল ফাঁদে আটকে যেতে। শিশু কিশোরদের মনে বেশ নগ্নভাবে ঠুকিয়ে দিচ্ছে ধর্মীয় প্রতিহিংসার বীজ। তারা জানে একদিন এই বীজ থেকে ফসল হবে আর সেই ফসল তারা ঘরে তুলবে।

তাই আমার মতে এখনই সময় হয়েছে শিশু-কিশোর-তরুণরা যাদে সাম্প্রদায়িক চিন্তা দ্বারা আক্রান্ত হতে না পারে, অন্য ধর্মের প্রতি হীন মানসিকতা পোষন না করে সে লক্ষ্যে পাঠ্য পুস্তকে এ সংক্রান্ত সচেতনতা মূলক প্রবন্ধ/নিবন্ধ/গল্প সংযুক্ত করতে হবে। আর এগুলো হতে হবে আরো বেশি স্বচ্ছ, প্রত্যক্ষ বার্তাসহ। তবেই শিশু ও কিশোররা বুঝতে পারবে তাদের উদ্দেশ্যে ঠিক কী বলা হচ্ছে। এতে তারা তরুণ বয়সে বিভ্রান্তিকর পথ থেকে নিজেদের গুটিয়ে আনার মত জ্ঞান অর্জন করবে। সুতরাং সরকারের নীতি নির্ধারকদের উচিত এ দিকে গভীর ও তড়িৎ সাড়া দেয়া।

——————————————-
ফিচার ছবিঃ ইন্টারনেট