পদ্মায় ফিরেছে বিশ্ব ব্যাংক

বিডিনিউজ২৪
Published : 20 Sept 2012, 01:56 PM
Updated : 20 Sept 2012, 01:56 PM


ঢাকা, সেপ্টেম্বর ২০ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- বহু জল ঘোলা হওয়ার পর পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংক ফিরে এসেছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদের।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে টেলিফোনে তিনি বলেন, "বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতুতে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাইকা এডিবিসহ অন্য দাতাদের সবাইকে এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে তারা। আশা করছি, আজ রাতেই বিশ্ব ব্যাংক এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে।"

আকরামুল কাদের আরো বলেন, "আজকে সকালেও গওহর রিজভী সাহেবের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আজকেও বিশ্ব ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক আছে তার।"

বিশ্ব ব্যাংক নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে সরকার পক্ষে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী বর্তমানে ওয়াশিংটনে আছেন।

বিশ্ব ব্যাংকের দেয়া চার শর্তের শেষ শর্ত নিয়ে ওয়াশিংটনে আলোচনা হওয়ার পর পদ্মা সেতু প্রকল্পে বহুজাতিক দাতা সংস্থাটির ফিরে আসার পথ তৈরি হয়েছে বলে ঢাকায় জল্পনা চলছিল।

এর আগে দুপুরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বিশ্ব ব্যাংকের ঘোষণা আসছে 'যে কোনো মুহূর্তে'।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুহিত বলেন, "বিশ্ব ব্যাংকের পক্ষ থেকে যে কোনো মুহূর্তে এ ব্যাপারে ঘোষণা আসবে। তারা এ ব্যাপারে ঘোষণা দেয়ার পরই সরকারের পক্ষ থেকে আমরা ঘোষণা দেব।"

বুধবার ওয়াশিংটনে বিশ্ব ব্যাংক সদর দপ্তরে কর্মকর্তাদের সঙ্গে অর্থায়ন নিয়ে বৈঠক করেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা। গওহর রিজভী ও বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি অ্যালেন গোল্ডস্টেইনসহ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা বৈঠকে অংশ নেন।

দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত সেপ্টেম্বরে বিশ্ব ব্যাংক ২৯১ কোটি ডলারের পদ্মা সেতু প্রকল্পে ১২০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার চুক্তি স্থগিত করে। এরপর চারটি শর্ত দিয়ে তা পালিত হয়নি জানিয়ে গত ২৯ জুন ঋণচুক্তি বাতিল করে সংস্থাটি।

এ প্রকল্পের অপর ঋণদাতা এডিবির ৬১ কোটি ৫০ লাখ, জাইকার ৪০ কোটি এবং আইডিবি ১৪ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতিও আটকে যায়। তবে সরকারের অনুরোধে এডিবি ও জাইকা তাদের ঋণচুক্তির মেয়াদ দুই দফা বাড়ায়।

এরই মধ্যে বিশ্ব ব্যাংককে ফেরাতে সরকারের নানা উদ্যোগ চলতে থাকে। বিশ্ব ব্যাংকের শর্ত মেনে তাদের উত্থাপিত দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ করেন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সেতু বিভাগের সচিব মোশাররফ হোসাইন ভূঞা যান ছুটিতে।

শর্ত মেনে প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা এবং পদ্মা প্রকল্পের ইন্টিগ্রিটি অ্যাডভাইজার মসিউর রহমানও ছুটিতে গেছেন বলে সরকারের একাধিক সূত্র গত মঙ্গলবার জানালেও তিনি তা অস্বীকার করে আসছেন।

এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে অর্থমন্ত্রী বলেন, "পদ্মা সেতুসহ সরকারের কোনো আর্থিক বিষয়ে মসিউর রহমানের কোনো সম্পৃক্ততা থাকবে না।"

গত শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দলীয় নেতাদের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, মসিউর সরে গেলে বিশ্ব ব্যাংক সিদ্ধান্ত বদলাবে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এআরএইচ/এসএসজেড/জেকে/এএল/১৯০০ ঘ.