গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকার সাঁওতাল অধ্যুষিত মাদারপুর ও জয়পুর গ্রামে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার প্রত্যক্ষ ইন্ধনে পুলিশ ও স্থানীয় সন্ত্রাসী কর্তৃক আদিবাসী কৃষককে গুলি করে হত্যা, বাড়িঘরে লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ ও বসতবাড়ী থেকে জোড়পূর্বক উচ্ছেদের ঘটনার ১ মাস ৬ দিন পর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক মহোদয় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করে আদিবাসীদের ওপর অন্যায় হয়েছে বলে তিনি দেখতে পেয়েছেন।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মহোদয়ের ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থ আদিবাসীদের সাথে কথা বলা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু গত ৬ নভেম্বর ২০১৬ ইং তারিখে ঘটনা সংঘটিত হওয়ার ১মাস ৬ দিন পর আজ ১২ ডিসেম্বর ২০১৬ ইং তারিখে চেয়ারম্যান মহোদয় ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় পেল? আর সেসময় তিনি আদিবাসীদের বিরুদ্ধে অন্যায় হয়েছে বলে অনুধাবন করতে পেরেছে!
এতদিন এত আন্দোলন, মূলধারার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমসহ সোস্যাল মিডিয়ায় এত প্রতিবেদন প্রকাশ তারপরও আমাদের চেয়ারম্যান মহোদয় এতদিন ঘটনার বিশ্বাসযোগ্যতা খুঁজে পায়নি, অবশেষে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ঘটনাটির বিশ্বাসযোগ্যতা খুঁজে পেল! এতদিনে আমাদের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মহোদয়ের ঘুম ভাঙ্গল! এখন দেখার সময় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ক্ষতিগ্রস্থদের পূনর্বাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতে কি পদক্ষেপ নেয়।
একই সময় ক্ষতিগ্রস্থ আদিবাসীদের উদ্দেশ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উদ্যোগে আয়োজিত এক সমাবেশে আদিবাসীরা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য তীর, ধনুক, লাঠি সহকারে যোগ দেয়ায় চেয়ারম্যান মহোদয় বিষয়টিকে লজ্জার বলে উল্লেখ করেছেন। একটু ভাবার বিষয়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মহোদয়ের সমাবেশে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য গাইবান্ধার উচ্ছেদকৃত আদিবাসী কৃষকদের তীর, ধনুক, লাঠি সহকারে যোগ দেয়া বেশি লজ্জার, নাকি-স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার প্রত্যক্ষ ইন্ধনে গাইবান্ধার আদিবাসী কৃষককে গুলি করে হত্যা, বাড়িঘরে লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ ও বসতবাড়ী থেকে জোড়পূর্বক উচ্ছেদের ঘটনার এতদিনেও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসন ও ন্যাবিচার নিশ্চিতের জন্য কোন পদক্ষেপ নেয়া বা কমিশনের চেয়ারম্যানের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার এতদিন পর উক্ত এলাকা পরিদর্শনে যাওয়া বেশি লজ্জার?