এডমোনটনে বৈশাখী মেলা: প্রবাসের আনন্দ উৎসবে ক্ষণিকের ছোট্ট বাংলাদেশ

দেলোয়ার জাহিদ
Published : 5 April 2016, 04:59 PM
Updated : 5 April 2016, 04:59 PM

এডমোনটন, কানাডা: বাংলাদেশ হেরিটেজ এন্ড এথনিক সোসাইটি অব আলবার্টার (বেসা) উদ্যোগে সিটির প্লিসেন্ট ভিউ কমিউনিটি হলে গত ২রা এপ্রিল সন্ধ্যায় বাঙালি জাতিসত্তার স্মারক বাংলা নববর্ষ উৎসব উদযাপিত হয়। এ উপলক্ষে বৈশাখী মেলা ও বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রবাসে আনন্দ উৎসবে এডমোনটনের বৈশাখী মেলা ক্ষণিকের জন্য হয়ে উঠে ছোট্র এক বাংলাদেশ। বাংলাদেশ হেরিটেজ সোসাইটির সভাপতি মাসুদ ভুইয়া অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন।

অনুষ্ঠানে সন্মানিত অতিথি রড লওয়োলা এম এল এ, ডেনিস ওলয়ার্ড এম এল এ, শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। বাঙালির চিরন্তন ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় বর্ষবরণের আনন্দমুখর এ দিনকে সমাগত নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হেরিটেজ সোসাইটির সাবেক সভাপতি, ও বাংলাদেশ প্রেসক্লাব সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার জাহিদ।

সূচনাপর্বে সোসাইটির সভাপতি মাসুদ ভুইয়া এবারকার নবনির্বাচিত (২০১৬) কমিটিকে পরিচয় করিয়ে দেন. সহ-সভাপতি এডওয়ার্ড মন্ডল, সাঃ সম্পাদক ফয়সল ভুইয়া, যুগ্ম সাঃ সম্পাদক সরোয়ার মোঃ আরিফ, কোষাধ্যক্ষ জয়নাল আবেদিন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক খালেদ আশ্রাফি, সোসাল এফেয়ার্স সম্পাদক মুহাম্মদ আলী, যুব সম্পাদক মোঃ হাবিবুর রহমান, এক্স অফিসিও দেলোয়ার জাহিদ মঞ্চে আসেন।

উপদেষ্টা ও পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে নতুন কমিটিকে স্বাগত জানান ভাষা সৈনিক সিদ্দিক হুসাইন, মজিবুর রহমান, ড. হাফিজুর রহমান ও মু. ইসমাইল প্রমুখ। বাংলাদেশ হেরিটেজ সোসাইটির সভাপতি মাসুদ ভুইয়া সন্মানিত অতিথিদের ক্রেষ্ট প্রদান করেন। এছাড়াও প্রতি বছর বাংলাদেশ হেরিটেজ এন্ড এথনিক সোসাইটি অব আলবার্টার পক্ষ থেকে সমাজে সবিশেষ সেবার অবদান রাখার জন্য একুশে হেরিটেজ এওয়ার্ড প্রদান করা হয়।

এবার নববর্ষ উৎসবে ২০১৬তে একুশে হেরিটেজ এওয়ার্ড পদক প্রাপ্তদের সম্ভোর্ধনা দেয়া হয়। পদক প্রাপ্তরা হলেনঃ মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার জাহিদ (সাংবাদিকতা ও কমিউনিটি সেবায়), মোর্শদা বেগম (কমিউনিটি সেবায়) ও সালমা জাহান (শিক্ষায়), মোর্শদা বেগম আজ আনুষ্ঠানিক ভাবে তার পদকটি গ্রহন করেন তার সাথে উপস্থিত ছিলেন স্বামী বিশিষ্ট সমাজকর্মী মুহাম্মদ ইসমাইল।

খালেদ ও লিজার মনোজ্ঞ উপস্থাপনায় নাচে গানে মেতে উঠে বাংলাদেশী শান্তি এবং সহনশীল সংস্কৃতির চর্চার পাদপীঠ এডমোনটন । বিশ্বের বুকে মাথা উচু করে দাড়াবার সময় ও সুযোগ এসেছে বাংলাদেশের, শান্তি-সংস্কৃতি, রক্ষায় বৈশ্বিক আন্দোলনে আমাদের ইতিহাস, ঐতির্য্য ও সমৃদ্ধ সংস্কৃতিকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এ মেলায়।

বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ,পরিবেশিত নাচ, এসো হে বৈশাখ এর গান ও স্থানীয় শিল্পীদের নাচ ও সূরের মূর্ছনায় প্লিসেন্ট ভিউ কমিউনিটি হলে মুখরিত। হয়ে উঠে। অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্বে অংশ নেন সবিতা দেবী, আদিবা, খালিদ, মারিয়া, চাদনী, সোহেল, ইব্রাহিম, জয়নাল, পিটার, এডওয়ার্ড, পিংকী, মেরিলিন, কেরোলিন, সাজিন, অনন্য, নাজিব, আয়ান, রাহাত,.নৃত্যে আদিবা,অর্নি, একক সঙ্গিত-নাতাশা, ছড়া আবৃত্তি-মেরিলিন, একক সঙ্গীত-দেবজানি, ভুপেন হাজারিকার গান –নির্ঝর, কবিতাাঠ- নোভেল, বৈশাখী নাচ-অর্ণি, ভুপেন হাজারিকার গান-চামেলী, দ্বৈত –চামেলী ও নির্ঝর, নাটক-জয়নাল ও ইব্রাহীম, গান আদিবা. একক গান সবিতা, খালেদ প্রমুখ।

গ্রাম বাংলার পোষাকের সাজে-যেমন খুশি সাজো রাহাত, মেরলিন, সাজিন, আয়ান, নাজিব, চামিলী ও আদিবা প্রমুখ অনুষ্ঠানে অন্যানের মাঝে উপস্থিত ছিলেন ভাষা সৈনিক মুহাম্মদ সিদ্দিক হুসেন, ড হাফিজুর রহমান, মজিবুর রহমান, মুহাম্মদ ইসমাইল, নূরে আলম, তাজুল আলী, মুহাম্মদ জাকারিয়া, ড মুসফিকুর রহমান সহ আরো অনেকে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ।

এ উৎসব আনন্দ বাঙালির জীবনে কতটা প্রভাব ফেলে তা সহজেই উপলব্দি করা যায় যখন গভীর রাত পর্যন্ত সূরের মূর্ছনায় দর্শক-শ্রোতারা হারিয়ে যান। অনুষ্ঠান শেষে একটি র‌্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয় যা স্পন্সর করে বাংলা বাজার ও মিলওড ফুডস।