অপরিচ্ছন্ন বাতাস হচ্ছে দূষণের সবচেয়ে মারাত্মক উপায়

ফকির সেলিম
Published : 12 Nov 2016, 08:52 PM
Updated : 12 Nov 2016, 08:52 PM

নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে অপরিচ্ছন্ন বাতাস হচ্ছে দুষণের সবচেয়ে মারাত্মক উপায়। অপরিণত সময় মৃত্যুর চতুর্থ প্রধান কারন এটি। এ ফলে বছরে বিশ্বের অর্থনীতিতে হাজার হাজার কোটি ডলার ব্যায় হয়।

বিশ্ব ব্যাংক এবং Institute for Health Metrics and Evaluation এর উদ্যোগে করা The Cost of Air Pollution: Strengthening the economic case for action শিরোনামের গবেষণার ফলাফল সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র পরিবেশ বিষয়ক অর্থনীতিবিদ উর্বশী নারায়ন বললেন এতে বাতাস দূষণকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

"এর প্রধান লক্ষ্য বাতাস দূষনের চ্যালেঞ্জকে তুলে ধরা। কতো মারাত্মক আকারে তা হচ্ছে সেটি বোঝানো। তাছাড়া এর অর্থনৈতিক দিকগুলো ষ্পষ্ট করা, অর্থাৎ এর ফলে অর্থনৈতিকভাবে আমরা কতোটা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি তা বের করা। কোনো দেশেরই এই বিষয়টি উপেক্ষা করার উপায় নেই। এ নিয়ে ভাবতে হবে এবং কাজে লাগতে হবে"।

গবেষণার ফলাফলে বলা হয় নিম্ন মধ্যবিত্ত দেশগুলোর প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ ambient air pollution বা তাদের আশেপাশের স্থানের বায়ু দুষণের কারনে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ।

"ambient air pollution মানে হচ্ছে আমাদের চারপাশের অতি সুক্ষ, ক্ষুদ্র বস্তুকনা যা শ্বাস প্রশ্বাসের সঙ্গে আমাদের শরীরের ভেতরে ঢুকছে। নানাভাবে তা আমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্থ করছে। এগুলো অত্যন্ত ক্ষুদ্র; একটি চুলের ১৩ ভাগের একভাগ"।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে ওইসব ছোট বস্তুকনা পোড়া জ্বালানী, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বা পাওয়ার প্লান্ট, গাড়ী, ট্রাক, রান্নার চুলা, এসব থেকে উৎপন্ন হয়। গবেষনার ফলাফল বলছে এই সংক্রান্ত নানাবিধ অসুখে ২০১৩ সালে সারা বিশ্বে ৫০ লক্ষ লোক মারা যায়।

ফুসফুসের ক্যান্সার, এ্যাজমা, শ্বাসকষ্টসহ নানা জটিল রোগ হয় এতে। হৃদরোগেরও অন্যতম প্রধান কারন এই বায়ু দুষণ। রোগ প্রতিরোধ ও ফুসফুস দুর্বল থাকায় শিশুদের জন্য বায়ু দুষণের মারাত্মক প্রভাব ঘটতে পারে।

"গবেষণায় আমরা যেটি বের করতে চাচ্ছি তা হচ্ছে; এটি নিশ্চিত হওয়া যে একটি স্বাস্থ্য ঝুঁকি; এবং এর ফলে উন্নয়ন প্রয়াস ব্যাহত হয়। আমাদের রিপোর্ট অনুসারে বায়ু দুষণের কারনে নানা রোগ মৃত্যু ও আয় কমে যাওয়ায় বৈশ্বিকভাবে ২৫ হাজার কোটি ডলারেরও বেশী ক্ষতি হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ বলেন এই নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোর উচিৎ তাদের উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসাবে নিয়ে বায়ু দুষণ সমস্যার সমাধান করা। এক এক অঞ্চলের বায়ু দুষণ একেক রকমের।

"বায়ু দুষণের কারনে দক্ষিন এশিয়া এবং পূর্ব এশিয়ায় মৃত্যু ঘটেছে সবচেয়ে বেশী। এর কারন অবশ্য ঐসব অঞ্চলের জনসংখ্যার আধিক্য"।

বিশ্বব্যাংক বায়ু দুষণকে মানুষের মৌলিক অধিকারের প্রতি হুমকী বলে আখ্যা দিয়ে বলেছে, এতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হবে। তবে তা রোধে কি করা দরকার সে সম্পর্কে ঐ রিপোর্ট কিছু উল্লেখ করা হয়নি। দেশসমূহ নিজেরাই এর পথ বের করবে বলে বিষয়টি উন্মুক্ত রেখে বায়ু দুষণ রোথধে সকলকে কাজ করার আহবান জানানো হয়েছে।