ভারত – পাকিস্তান সামরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা

ফাহিম ইবনে সারওয়ার
Published : 18 March 2011, 09:49 AM
Updated : 18 March 2011, 09:49 AM

ভারত ও পাকিস্তান প্রায় একই সঙ্গে গত ১১ মার্চ ব্যালিস্টিক মিসাইল পরীক্ষা করেছে. ভারত করেছে "পৃত্থী দুই" ও তার জাহাজের উপর থেকে ছোঁড়া "ধনুষ" ধরনের মিসাইলের পরীক্ষা, আর পাকিস্তান করেছে ব্যালিস্টিক মিসাইল "হাতফ – দুই "আবদালি"" ও এর ঠিক এক মাস আগেই করেছে ডানা ওয়ালা রকেট "হাতফ – সাত "বাবর"" এর পরীক্ষা.

পাকিস্তান ও ভারতের এই সব ধরনের রকেটই যেমন সাধারন বিস্ফোরক সহ আঘাত করতে পারে, তেমনই পারে আণবিক বিস্ফোরক সহ. সেগুলি যে দূরত্ব অতিক্রম করার জন্য তৈরী তা ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশেরই যে কোন জায়গায় পৌঁছতে সক্ষম।

ভারত ও পাকিস্তানের বর্তমানে রকেট ও পারমানবিক অস্ত্রের বিষয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধাচরণ শুরু হয়েছে ১৯৯৮ সালে দুই দেশের পারমানবিক অস্ত্র পরীক্ষার পর থেকেই. এই সময়ের মধ্যে যেমন ভারত, তেমনই পাকিস্তান এই ধরনের অস্ত্রের যথেষ্ট বড় সম্ভার তৈরী করে ফেলেছে. "ওয়াশিংটন পোস্ট" সংবাদপত্র বিভিন্ন বেসরকারি অনুসন্ধান কেন্দ্রের উত্স থেকে পাওয়া খবর হিসাবে জানিয়েছে যে, পাকিস্তানে বর্তমানে এই ধরনের ১১০টি বোমা রয়েছে, মাত্র চার বছর আগেও এর পরিমান ছিল ৩০ থেকে ৬০টি. ভারতেও এই ধরনের বোমা রয়েছে প্রায় ১০০টি. পাকিস্তান এই দিক থেকে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের একেবারে কাছে পৌঁছে গিয়েছে. ভারতও খুব দূরে নেই.

এর মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার পর থেকে প্রায় বন্ধ হয়ে আছে, চেষ্টা চললেও দুই দেশের মধ্যে শান্তি আলোচনা বন্ধ ও তা এখনও শুরু হয় নি. সীমান্ত সংঘর্ষ চলছেই.

অন্য একটি বিপদ হল, যথেষ্ট রকম ভাবে দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদ চলার সময়ে এই পারমানবিক অস্ত্র চরমপন্থীদের হাতে পড়তেও পারে, যারা আজ বহু ভাবে পাকিস্তানে সক্রিয়. এখানে আগে বলা যেতে পারে যে, পারমানবিক কেন্দ্রের কর্মীদের সঙ্গে কোন রকমের বাইরের চরমপন্থীদের একটা যোগসাজসের ফলে কিছু আণবিক পদার্থ একবার তাদের হাতে পৌঁছলে, অথবা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গাতে নিয়ে যাওয়ার সময়ে কিছু চুরি হয়ে গেলে, তা তারা যখন খুশী ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারে ও তার ফলে এই এলাকায় দুই দেশের মধ্যে পারমানবিক বিবাদ শুরু হতে পারে".

যদি হঠাৎ করে এই রকম কোন ঘটনা ঘটে যায়, তবে তার ফল হতে পারে দুই দেশের জন্যই অপরিবর্তনীয়. বিপদ কমাতে পারতো যদি দুই দেশই পারমানবিক নিরস্ত্রীকরণ ও প্রসার রোধ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে যোগ দিত. কিন্তু ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই এখনও তা করে নি.

—————————–
সূত্র: রেডিও রাশিয়া