জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে 'ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র' নির্মানের জন্য ৯কোটি টাকার টেন্ডারে পক্ষপাতিত্বের মাধ্যমে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৫৩ লাখ টাকা ক্ষতি হবে বলে জানা গেছে। দরপত্র আহ্বানের পর জমা পড়া দরপত্রের মধ্যে প্রথম দরদাতাকে বাদ দিয়ে দ্বিতীয় দরদ্বাতাকে কাজ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে প্রশাসনিক সুত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩ লাখ টাকা ক্ষতি করে দ্বিতীয় দরদ্বাতাকে কাজ দেয়ার প্রক্রিয়ায় প্রশাসনের সর্বচ্ছো পর্যায়ের একাধিক ব্যক্তি জড়িত বলে বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে।
জানাগেছে, 'ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র' নির্মানের জন্য গত বছরের ডিসেম্বরে দরপত্র আহ্বান করা হয়। জানুয়ারি মাসে সেটি বাতিল করে দিয়ে ফেব্র"য়ারি মাসে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হয়। তখন যেসব প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয় তার মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা 'আরএফএল এন্ড মোনালিসা' ৮কোটি ২৭লাখ টাকা দর দেয়। দ্বিতীয় দরদাতা 'অনিক ট্রেডার্স' ৮কোটি ৮৫লাখ টাকা দর দেয়। দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৩লাখ টাকার ব্যবধান রয়েছে। গত ৬মার্চ টেন্ডার কমিটির মিটিংয়ে দ্বিতীয় দরদাতা (অনিক ট্রেডার্স)কে কাজ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন। দ্বিতীয় দরদাতাকে দিয়ে কাজ করাতে গেলে প্রথম দরদাতার চেয়ে দ্বিতীয় জনকে ৫৩লাখ টাকা বেশি দিয়ে দিতে হবে। এদিকে দ্বিতীয় জনকে কাজ দেয়ার এই প্রক্রিয়ার সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পর্যায়ের একাধিক ব্যক্তি জড়িত বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই সুত্রটি জানিয়েছে, প্রয়োজন না থাকার পরে জমা দেওয়া প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র যাছাই করতে অতিরিক্ত একটি কমিটি করা হয়। ওই কমিটিতে সাঈদুর রহমান নামের একজনকে সদস্য করা হয়েছে যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ নন। তিনি গত ৪মার্চ প্রথম দরদাতাকে বাদ দিয়ে দ্বিতীয় দরদাতাকে কাজ দেয়ার সুপারিশ করে টেন্ডার কমিটর কাছে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। সাঈদুর রহমান উপাচার্যের বন্ধু এবং উপাচার্যের নির্দেশে তাকে কমিটির সদস্য করা হয় বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ার অফিস সুত্রে জানা গেছে।
৭মার্চ টেন্ডার কমিটির মিটিং চলাকালীন সময়ে দুই ইঞ্জিনিয়ারকে মিটিং থেকে বাইরে বের করে দিয়ে ট্রেজারার ও অন্য দুই সদস্য মিলে দ্বিতীয় দরদাতাকে কাজ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন বলে জানা গেছে। পরে দুই ইঞ্জিনিয়ারকে মিটিংয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয় বলে মিটিংয়ের এক সদস্য জানিয়েছে। প্রথম দরদাতাকে বাদ দেয়ার কারণ হিসেবে তার কাগজপত্রে সদস্যার কথা উলে¬খ করা হয়েছে। তবে প্রথম দফায় দরপত্র আহ্বান করলে তখনও ওই প্রতিষ্ঠানটি দরপত্র জমা দিয়েছিল। তখন তাদের কাগজপত্র যাছাই বাছাই করে টেন্ডার কমিটি তাদের সব কাগজপত্র ঠিক আছে বলে প্রতিবেদন দেয়। উল্লেখ্য পূর্বের টেন্ডার কমিটিতে যারা ছিলেন বর্তমান টেন্ডার কমিটির সদস্যও তারাই। একই ব্যক্তিরা একই কাগজপত্র দুই বার দুই রকম বলায় এ নিয়ে ক্যাম্পাসে জোর গুঞ্জন চলছে। এব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক নাসির উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।