খুন করবো আমি! ফাঁসি দেবে আদালত! মাফ করবেন রাষ্ট্রপতি!

জে জিয়া
Published : 21 July 2011, 06:11 PM
Updated : 21 July 2011, 06:11 PM

রম্য কথা—————————————–
এখন খুন করা কোন ব্যাপারই না। আপনি কি খুন করেছেন ! না করলে এখনই করেন! কারন দেশে প্রতিদিনই খুন হচ্ছে তাদের বিচার আমাদের আদালত করছে আর আমাদের রাষ্ট্রপতি ছোট খাটো কোন দন্ড মওকুফ করেন না! খুনের সব্বোচ্চ শান্তি ফাঁসি আর তিনি ফাঁসির আসামিকে মাফ করেন। অবশ্য আপনাকে খুন করতে হবে বিরোদীদলের লোকজনকে, আর আপনাকে হতে হবে সরকারদলীয় লোক! তাহলে দাড়ালো সাত খুন মাফ! আসুন আমরা সবাই মিলে খুন করি এবং সরকারদলের পক্ষে যোগ দেই।

পিছনের কথা———————————————-
গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০০০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর লক্ষ্মীপুর শহরের বাসা থেকে জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও আইনজীবী নুরুল ইসলামকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। এ ব্যাপারে ২০০৩ সালে নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার বিচারিক আদালত বিপ্লবসহ পাঁচজন আসামীর মৃত্যুদণ্ড এবং নয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেয়।

লক্ষ্মীপুরের পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা আবু তাহেরের ছেলে এ এইচ এম বিপ্লবের ফাঁসির দণ্ডাদেশ রাষ্ট্রপতি মওকুফ করেছেন বলে বুধবার একটি দৈনিকে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

এর আগে সংসদ উপনেতার ছেলেকে পলাতক থাকা অবস্থায় দণ্ড মওকুফ পেতে দেখেছি। আর এবার একটি লোমহর্ষক খুনের দণ্ডিত আসামি ১০ বছরের বেশি সময় পালিয়ে থেকে আদালতে আত্মসমর্পণের চার মাস না যেতেই ক্ষমা লাভের ঘটনা ঘটল।

আসল কথা………………………………………….

আমাদের সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের আওতায় রাষ্ট্রপতিকে এই ক্ষমতার দেওয়া হয়েছে। শুধু আওয়ামীলীগের আমলে এই ফাঁসির দণ্ডাদেশ রাষ্ট্রপতি মওকুফ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি বিএনপি আমলেও ফাঁসির দণ্ডাদেশ রাষ্ট্রপতি মওকুফ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। তাই আমি মনে করি রাষ্ট্রপতির ক্ষমা করার অধিকার কোনো সাধারণ অধিকার নয়। বা এখানে কোন রাজনৈতিক সম্পর্ক আসতে পারে না। প্রকৃত দোষীকে অবশ্যই শাস্তি দেওয়া উচিত। না হলে আমাদের বিচার ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়বে এবং আমিন বাজারের মত ঘটনা ঘটতে থাকবে। একটি পত্রিকা পড়ে জানতে পারলাম ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, দণ্ড মওকুফে 'প্রকৃত যুক্তি' থাকতে হবে। রাষ্ট্রপতির ক্ষমার অপব্যবহার রোধে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট একটি গাইডলাইনও বেঁধে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। তাই বাংলাদেশে ফাঁসির দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামিকে রাষ্ট্রপতি ইচ্ছে করলেও যে দণ্ডাদেশ মওকুফ করতে পারেন বা পারেন না ! এই বিষয়ে একটি জবাবদিহিতার গাইডলাইন বা আইন থাকা আমাদের দেশের জন্য বতর্মানে জরুরি হয়ে পড়েছে।