অতঃপর পুলিশ

জেমস রহমান
Published : 24 May 2015, 07:37 PM
Updated : 24 May 2015, 07:37 PM

গত সপ্তাহের শুরুতে এক লোক দুই বিদেশি নারীকে নিয়ে যমুনা ফিউচার পার্কের যেখানে তার ছোট বোন কাজ করেন ওই দোকানে যান, কোথায় থাকে, কত বেতন পায়, পরিবারে কে কে আছে জানতে চেয়েছিল লোকটা। মাইক্রোবাসে পাঁচজনের মধ্যে সেই লোকও ছিল। মাইক্রোবাসটি চালানো হচ্ছিল ধীর গতিতে। কুড়িল বিশ্বরোড ও যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের এলাকা দিয়েই গাড়িটি কয়েকবার ঘুরেছে। রাতে ধর্ষণের ঘটনার পর মামলা করার জন্য তাদের তিন থানায় ঘুরে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় বলেও জানান তিনি।

তুরাগ থানা কাছে হয় বলে মামলা করার জন্য রাত ৪টার দিকে মেয়েটিকে নিয়ে তারা সেখানে যান। কিন্তু অন্য এলাকার ঘটনা বলে পুলিশ তাদের ফিরিয়ে দেয়। এরপর ভোর ৫টার দিকে তারা যান গুলশান থানায়। সেখানেও একই উত্তর মেলে। শেষে সাড়ে ৬টার দিকে ভাটারা থানায় গেলে বলা হয়, ওসি নেই, অপেক্ষা করতে হবে। এরপর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ওসি আসেন এবং তাদের কথা শুনে সাড়ে ১২টার দিকে মামলা নথিভুক্ত করা হয় বলে মেয়েটির বড় বোন জানান।
যৌন নিপীড়নের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা সমালোচিত হওয়ার পর দেড় মাস না পেরোতেই ধর্ষণের এই ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কী পদক্ষেপ নিচ্ছে তা জানতে গুলশান বিভাগের উপ কমিশনার লুৎফুল কবীরকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মীর রেজাউল আলম বলেন, 'সন্দেহের ভিত্তিতে আমরা তো কিছু বলতে পারব না। মামলা হয়েছে, এখন তদন্ত হবে। সে অনুযায়ী আমরা কাজ করব।'

একটু খেয়াল করলেই বোঝা যাবে এটি হুট করে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা নয়। ৪ – ৫ দিন সময় নিয়ে পরিকলপনা করা হয়েছিল। মানুষের চোখ এড়বার জন্য মনে হয় কালো মাইক্রোবাস ব্যবহার করা হয়েছিল। কারণ গাড়ির কাঁচ নিশ্চয়ই কালো ছিল, কালো গাড়ি কালো কাচ, চোখে লাগবে না। পুলিশ জানে তো বটেই খোদ ভাটারা থানার ওসি যদি ঐ মাইক্রোবাসের ৫ জনের ১ জন হয়ে থাকেন তাহলেও অবাক হবার কিছু নেই। কারণ সময়গুলো যদি আমরা ঘাঁটি তাহলে কিনতু সহজেই মিলে যাবে। পোনে এগারটা্য় মিশন শেষ। সাড়ে এগারটা বা পোনে বারটায় বাসায় যাওয়া। পরদিন সাড়ে নয়টায় থানায় এসে কোন কিছু না জানার ভান করে সাড়ে ১২টার দিকে মামলা নথিভুক্ত করা- চমতকারভাবে মিলে যায়। ওসি যদি সবার আগে কাজ সেরে বাকি সময়টা পাহাড়া দিয়ে থাকেন তাও ঘটনার সাথে বেমানান নয়; পরিপূরক।

যে লোকটা প্রথমে দোকানে এসেছিলেন তিনি বারিধারা এলাকার কোন Buying House এর Merchandising Manager টাইপ কিছু হতে পারেন। কারণ, তার সাথে দুই বিদেশি নারী ছিলেন। বারিধারা এলাকাটি খুব বেশি বড় নয়। ছবি নিয়ে খোঁজ করলে পাওয়া যেতেও পারে।