একাত্তরে নিজামীদের যুদ্ধাপরাধ ও বিচার বানচালের পাকিস্তানি চক্রান্ত

হাসিবুল হক
Published : 5 Dec 2015, 05:24 PM
Updated : 5 Dec 2015, 05:24 PM

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালিন নয় মাস উস্কানিমূলক বিবৃতি,প্রচারণা চালিয়ে মতিউর রহমান নিজামীরা অপরাধজনক ঘৃণ্য আচরণ বাংলাদেশের মুক্তিকামী জনগণের সাথে করেছে। পাকহানাদাররা ২৫ মার্চ ঢাকা শহরকে আগুনে জ্বালিয়ে ভুতুড়ে নগরীতে পরিণত করেছে,গণহত্যা চালিয়েছে অথচ এই নৃশংস গণহত্যাকে বৈধতা দিতে নিজামীদের মুখপত্র 'দৈনিক সংগ্রাম' ৮মে তারিখের সংখ্যায় বলে- শেখ মুজিব ২৬মার্চ সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলা কায়েমের পরিকল্পনা এঁটেছিলেন।সেনাবাহিনী তা জানতে পেয়ে ২৫ মার্চ হঠাৎ আক্রমণ চালিয়ে এই পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়ে আমাদের পাকিস্তানকে বাঁচিয়েছে।

২৫ মার্চের গণহত্যাকে সমর্থন দিতে গোলাম আযম ৬ এপ্রিল,১৯৭১ টিক্কা খানের সাথে সাক্ষাৎ করে পাকিস্তানি সৈন্যদের এই 'পদক্ষেপের' প্রতি নিঃশর্ত সমর্থন জ্ঞাপন করেন (দৈনিক সংগ্রাম,৭ এপ্রিল,১৯৭১)। ১৫ জুন দৈনিক সংগ্রাম মুক্তিবাহিনীকে খতম করার জন্যে শুধুমাত্র সেনাবাহিনীর দিকে তাকিয়ে না থেকে পাকিস্তানপন্হীদের পথ বেছে নিতে বলে। ১৬ জুলাই দৈনিক সংগ্রাম এবং জামায়াত নেতারা ভাষা আন্দোলনের স্বরণে নির্মিত ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পাকহানাদার বাহিনী ভেঙে ফেলায় অভিনন্দন জানায়। একই দিন দৈনিক সংগ্রাম বলে, যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে পাকিস্তানপণ্হীরা তাদের কোনোদিনই ক্ষমা করবে না।

ইসলামী ছাত্রসংঘের পরিচালনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে অস্ত্রের সাহায্যে রাজাকারদের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী লড়াইয়ের প্রশিক্ষণ শুরু হয় (দৈনিক সংগ্রাম,৪ জুলাই,১৯৭১)। ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতা মতিউর রহমান নিজামী বলেন, মুক্তিবাহিনী পাঁচগুন বেশি শক্তিশালী হওয়া সত্ত্বেও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে পরাজিত হবে। তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে তাদের 'ভাই' আখ্যায়িত করায় ৩ আগস্ট দৈনিক সংগ্রাম মন্তব্য করে, জনাব নিজামী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে 'ভাই' বলে যথার্থই করেছেন, সেনাবাহিনীর সাথে একাত্ম হয়ে শত্রুর(মুক্তিবাহিনীর) মোকাবেলা করতে হবে।

২২ আগস্ট মতিউর রহমান নিজামী এক অনুষ্ঠানে বলেন,পাকিস্তান যারা চায় না,তারা ইসলাম চায় না (দৈনিক সংগ্রাম,২৩ আগস্ট,১৯৭১)। ৪ সেপ্টেম্বর জামায়াতের অঙ্গ সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতা নিজামী বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানকে ভারতের এজেন্ট ও দুষ্কৃতকারী বলে বিবৃতি দেন।মতিউর রহমান নিজামী বলেন, ছাত্রসংঘ কর্মীরা রক্ত দিয়ে পাকিস্তানের প্রতি ইঞ্চি জমি রক্ষা করবে (দৈনিক সংগ্রাম,৮ সেপ্টেম্বর,১৯৭১)। ১৩ সেপ্টেম্বর গোলাম আযম মুক্তিবাহিনীকে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করার আহ্বান জানান (দৈনিক সংগ্রাম,১৩ সেপ্টেম্বর,১৯৭১)। ১৪ সেপ্টেম্বরে গোলাম আযম শুধু মুক্তিযোদ্ধাই নয়, তাদের সমর্থক যে কোনো ব্যক্তিকে তালাশ করে বের করে শায়েস্তা করার আহ্বান জানান (দৈনিক সংগ্রাম,১৪ সেপ্টেম্বর,১৯৭১)। ১৪ সেপ্টেম্বর যশোরে মতিউর রহমান নিজামী সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের খতম করার আহ্বান জানান (দৈনিক সংগ্রাম,১৫ সেপ্টেম্বর,১৯৭১)। ১৬ সেপ্টেম্বর নিজামী বলেন,দুনিয়ার কোনো শক্তিই পাকিস্তানকে ধ্বংস করতে পারবে না।

৭ নভেম্বর জামায়াত নেতা আবদুল খালেক বদর দিবসের এক জনসভায় বলেন,বাংলাদেশ আন্দোলনকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিতে হবে।৮ নভেম্বর দৈনিক সংগ্রাম বলে,পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পরই রাজাকারদের স্হান।রাজাকার বাহিনীর দুই শাখা আলবদর ও আলশামস- এর উপরই পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। ছাত্রসংঘের নেতা নিজামী ১৪ নভেম্বর দৈনিক সংগ্রামে এক নিবন্ধে বলেন,পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় বদর বাহিনী গঠিত হয়েছে। সশস্ত্রবাহিনীর পাশে দাঁড়িয়ে আলবদর বাহিনী মুক্তিবাহিনীকে পর্যুদস্ত করবে। একই দিন আলবদর বাহিনী প্রধান নিজামী নিবন্ধে বলেন, পাকিস্তান হচ্ছে আল্লাহর ঘর।

ইসলামের মুখোশধারী মতিউর রহমান নিজামী,মীর কাশেম আলীর মতো দুর্ধর্ষ শক্তিমানদের বাংলার মাটিতে ঘটানো তাদের সকল অপকর্মের দলিল রয়েছে, বিচারে প্রমাণ মিলেছে তবুও এরা এবং এদের দোসরশক্তি এখনও বলে চলেছে আসল যুদ্ধাপরাধীদের নাকি বিচার করা হচ্ছেনা। আসল ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীকে নাকি ছেড়ে দেয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পর এদের কারো নামেই নাকি মামলা ছিল না।

অথচ শত প্রতিকূলতার মাঝেও তৎকালিন সরকার গোলাম আযমসহ ১৫ জন দালাল রাজনীতিককে ২২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। নির্দেশ অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীরা আদালতে হাজির না হওয়ায় গোলাম আযমসহ মোট ৩৯ জনের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়। ১৭ এপ্রিল,১৯৭৩ সালে সরকারের এক হ্যান্ডআউটে বলা হয়, যুদ্ধাপরাধীদের জন্য জেনেভা কনভেনশনের ৩ নং ধারা লঙ্ঘনের দায়ে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হবে। আরও বলা হয়-
*দেশদ্রোহিতা,হত্যা,ধর্ষণ,ডাকাতি,অগ্নিসংযোগের অপরাধী ক্ষমা পাবে না।
*দালালমন্ত্রী,উপদেষ্টা,রাজাকার কমাণ্ডার ক্ষমা পাবে না।
*শান্তি কমিটির নেতা ক্ষমা পাবে না।
*১৮ ধরনের অপরাধী ক্ষমা পাবে না।
( দৈনিক বাংলা,২১এপ্রিল১৯৭৩,২২এপ্রিল১৯৭৩,১৭মে১৯৭৩,৩০আগস্ট১৯৭৩,১ডিসেম্বর১৯৭৩)

মতিউর রহমান নিজামীরা বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অপরাধ করেও দাম্ভিক থেকেছেন সারাজীবন।বাংলাদেশের জনসাধারনের প্রতি এখনো হুমকি হিসেবে রয়ে গেছেন। এই হুমকি থেকে নিষ্কৃতি পেতে সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইনের আশ্রয়ে থাকার অধিকার রয়েছে সকল জনগণের। জনগণের এই সাংবিধানিক অধিকার উপেক্ষিত হয়েছে দশকের পর দশক ধরে। সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের জনগণের এই বিচার পাবার বা করবার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে। সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে-

আইনের আশ্রয়লাভ এবং আইনানুযায়ী ও কেবল আইনানুযায়ী ব্যবহারলাভ যে কোন স্থানে অবস্থানরত প্রত্যেক নাগরিকের এবং সাময়িকভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত অপরাপর ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য অধিকার এবং বিশেষতঃ আইনানুযায়ী ব্যতীত এমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে না, যাহাতে কোন ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটে।

১৯৭৩ সালের ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার যখন মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের ঘোষণা দিলেন এবং পাকস্তানি অপরাধীদেরকে আন্তর্জাতিক আইন দ্বারা বিচার করা হবে মর্মে ঘোষণা এলো, তার কিছুদিন পরে ১১মে পাকিস্তান সরকার International Court of Justiceএ মামলা দায়ের করেন বাংলাদেশের জনগণের মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করার এই বিচার প্রক্রিয়া বানচাল (forestall) করার জন্য। ঐ আদালতে পাকিস্তান যে অনুরোধ জানায় এরমধ্যে একটি দাবি হলো, " That Pakistan has an exclusive right to exercise jurisdiction over the one hundred and ninety five Pakistani nationals or any other members, now in Indian custody, and accused of committing acts of genocide in Pakistan territory by virtue of the application of the convention on the prevention and punishment of the crime of Genocide of 9 December, 1948 and that no other Government or authority is competent to exercise such jurisdiction." (Pictet,J.Humanitarian Law and the Protection of War Victims,P-16,1975).

এদিকে বাংলাদেশের পার্লামেন্ট ১৯৭৩ সালের জুলাই মাসে International Crimes (Tribunal) Act,1973 আইন পাস করেন। আবার ঐ মাসেই পাকিস্তান সরকার International Court of Justice কে লিখিত অবহিত করে, " asked the Court to postpone further consideration of its request for interim measures in order to facilitate……. negotiations " যা " will take place between Pakistan and India in the near future in which the issues which are the subject of its applications will be under discussion." (I.C.J.Reports,1973,p-330)

এর প্রেক্ষিতে ১৯৭৪ সালের ১৯ এপ্রিল ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর হয়। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক চাপের কারণে ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীর বিচার আইনি কাঠামোর আওতায় স্হগিতে রাজি হয়। চুক্তিতে বলা হয়নি তাদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে না। এই চুক্তি অনুযায়ী পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীদের দায়মুক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এছাড়া পাকিস্তানের তৎকালিন প্রধান বিচারপতি হামুদুর রহমান স্বদেশী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ত্রিপক্ষীয় চুক্তির ত্রয়োদশ প্যারায় উল্লেখ রয়েছে- " The question of 195 Pakistani prisoners of war was discussed by the three Ministers, in the context of the ernest desire of the Governments for reconciliation, peace and friendship in the sub-continent. The Foreign Minister of Bangladesh stated that excesses and manifold crimes commited by these prisoners of war constituted, according to the relevant provisions of the U.N. General Assembly Resolutions and International Law, war crimes, crimes against humanity and genocide, and that there was universal consensus that persons charged with such crimes as the 195 Pakistani prisoners of war should be held to account and subjected to the due process of law. The Minister of State and Defence and Foreign Affairs of the Government of Pakistan said that his Government condemned and deeply regretted any crimes that may have been committed." (Bangladesh Document, Vol-2,No.4, April-June,1974,Published by the Ministry of Foreign Affairs,Govt. of Bangladesh). সূত্র:মুক্তিযুদ্ধ তথ্য ব্যাংক,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

উদ্ধৃত চুক্তির অংশটুকু থেকে প্রমাণ হয় পাকিস্তান সরকার মুক্তিযুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধের ঘটনাকে স্বীকার করে নিয়েছে। অপরাধ স্বীকার করে নিলে বিচারের বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়।কিন্তু পাকিস্তান চরমতম নৃশংস গণহত্যার বিচার না করে প্রতারণা করেছে সারা দুনিয়ার মানুষের সাথে। বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বাংলাদেশের জনগণের সাথে। আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচার আমরা কেন করছি? মুক্তিযুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের যত ঘটনা ঘটেছিল এতোকাল সেই সকল বিষয়ের কোন কিছুরই অবসান হয়নি বলেই তো। পাকিস্তান আবারো আগের মতো ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে।

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নিতে জাতিসংঘে চিঠি লিখেছেন পাকিস্তানের সিনেটর রেহমান মালিক। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির দণ্ডাদেশ কার্যকরের ঘটনায় এই চিঠি লিখেছেন তিনি।একে 'বিচারিক হত্যাকান্ড' বলে অভিহিত করেছেন তিনি। পাকিস্তানের সংবাদপত্র 'দ্য নিউজ'-এ ২ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। 'দ্য নিউজের' প্রতিবেদনে বলা হয়, সিনেটর রেহমান মালিক ওই চিঠিতে বলেছেন, ৪৫ বছর আগে যেসব নেতা তাঁদের তৎকালীর নিজের দেশের (পাকিস্তান) প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেছিলেন এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে চেয়েছিলেন তাদের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনকে রেহমান মালিক আরো লিখেছেন যে, গণহত্যার জন্য পাকিস্তানপন্থী রাজনৈতিক দুই নেতাকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেওয়া সম্পূর্ণ বানানো বিষয় এবং এরা কেউই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বরং ভারতীয় অর্থায়ন ও সমর্থনে গঠিত মুক্তি বাহিনীই এসব ঘটিয়েছে।

এদিকে দেশের ভেতরে অসত্য বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভান্ত করার প্রয়াস চালানো হচ্ছে। নিজামী,মুজাহিদ, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীদের মতো বেসামরিক লোক নাকি যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন না। একারণে তারা যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত হতে পারেন না, যুদ্ধ করেছে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী। অথচ International Crimes(Tribunals)Act,1973 আইনে যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধের সংজ্ঞা উল্লেখ করা হয়েছে।এমনটা লেখা নেই শুধুমাত্র সামরিক ব্যক্তিবর্গ এই অপরাধ করতে পারে। এই আইনের আওতায় যেই পড়বে তাকেই বিচারের আওতায় আনা যাবে।International Crimes(Tribunals)Act,1973 আইনে অপরাধগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে-

a. Crimes against Humanity: namely, murder, estermination, enslavement, deportation, imprisonment,abduction,confinement,torture,rape or other inhumane acts,committed against any civilian population or persecutions on political,racial,ethnic or religious grounds,whether or not in violation of the domestic law of the country where perpetrated;

b. Crimes against Peace: namely, planning,preparation,initiation or waging of a war of aggression or a war in violation of international treaties,agreements,or assurances;
c. Genocide: meaning and including any of the following acts committed with intent to destroy, in whole or in part, a national,ethnic,racial,religious or political group,such as:
i. killing members of the group;
ii. causing serious bodily or mentel harm to members of the group
iii. deliberately inflicting on the group conditions of life calculated to bring about its physical destruction in whole or in part;
iv. imposing measures intended to prevent births within the group;
v. forcibly transferring children of the group to another group;

d. War Crimes: namely, violation of laws or customs of war which include but are not limited to murder, ill-treatment or deportation to slave labour or for any other purpose of civilian population in the territory of Bangladesh; murder or ill-treatment of prisoners of war or persons on the seas,killing of hostages and detenues,plunder or public or private property, wanton destruction of cities,towns or villages, or devastation not justified by military necessity;

e. violation of any humanitarian rules applicable in armed conflicts laid down in the Geneva Convention of 1949;
f. any other crimes under international law;
g. attempt,abetment or conspiracy to commit any such crimes;
h. complicity in or failure to prevent commission of any such crimes.

জাতিকে বিভ্রান্তিতে রাখতে এখনও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, মূল যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানি সৈন্যদের ছেড়ে দিয়ে সহযোগীদের বিচার করা হচ্ছে রাজনৈতিক কারণে।অথচ এই আইনে হানাদারদের বিচারের কথাও বলা হয়েছে। যাকে আগে পাওয়া যাবে,যার সাক্ষ্য-প্রমাণ আগে হবে তার বিচার আগে হবে।একজনকে পাওয়া না গেলে আরেকজনের বিচার করা যাবে না-এমন যুক্তি আইনে টেকে না। আন্তর্জাতিক অপরাধ(ট্রাইব্যুনাল)আ্যক্ট,১৯৭৩ এর ৩ নং ধারায় উল্লেখ আছে, ট্রাইব্যুনাল গঠনের আগে কিংবা পরে বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে কোনো ব্যক্তি এই ধরনের অপরাধ করলে ট্রাইব্যুনাল তাকে শাস্তি দিতে পারবে। পাকিস্তান যখন তাদের অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনল না, তখন বাংলাদেশের পাকিস্তানি অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করার সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রাখার সুযোগ নষ্ট হয়ে যায়নি। International Crimes(Tribunals)Act,1973 এর ৩ নং ধারায় বলা হয়েছে-
3.(1) A Tribunal shall have the power to try and punish any individual or group of individuals,or any member of any armed, defence or auxiliary forces, irrespective of his nationality, who commits or has committed,in the territory of Bangladesh, whether before or after the commencement of this Act.

অবশেষে এই বিচার প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের হস্তক্ষেপের সুযোগ আর থাকে না।১৯৭৩ এর মার্চ মাসে জেনেভা শহরে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের ২২৯তম অধিবেশনের কনভেনশনে ঘোষণা দেয়া হয় যে,যেসব ব্যক্তি গণহত্যা,যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ,সুপরিকল্পিত হত্যা,ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগসহ মারাত্মক অপরাধ করেছে বলে প্রমাণ হয়েছে তাদের বিচার করার অধিকার বাংলাদেশের আছে।এই ঘোষণার পর বাংলাদেশ জুলাই মাসে সংশ্লিষ্ট আইনটি প্রণয়ন করে।