আন্দোলনে নবধারা যোগ করলো বুয়েট

জুয়েল মিয়া
Published : 3 Sept 2012, 05:06 PM
Updated : 3 Sept 2012, 05:06 PM

মানববন্ধন, অনশন, কুশপুত্তলিকা দাহ, হরতাল, অবরোধ, ঘেরা কর্মসূচি, ভাংচুরসহ নানা ধরণের আন্দোলনমুখী/ধর্মী ধারা আমরা দেখেছি। প্রতীকী রক্তপাত কর্মসূচি বোধ করি আগে কেউ কখনো প্রত্যক্ষ করেনি। এর আগে আমরা রক্তের বন্যা বইতে দেখেছি, কিন্তু প্রতীকী রক্তপাত কর্মসূচি দেখিনি। এবার দেখলাম। বুয়েট শিক্ষার্থীদের চিন্তাবৃত্তির কল্যাণে এ জাতি নয়া ধারা আন্দোলন কর্মসূচির সঙ্গে পরিচিত হলো। আন্দোলন- সংগ্রামে নয়া সংযোজনের জন্য বুয়েট শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানাতেই হয় বৈকি!

বুয়েটের পুরকৌশল ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা জমায়েত হয় রক্ত সংগ্রহের জন্য। শিক্ষার্থীরা সিরিঞ্জ দিয়ে নিজেদের শরীর থেকে রক্ত বের করেন। এই রক্তসহ প্রায় হাজারখানের শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ-মিছিল করেন। মিছিল শেষে বেলা সোয়া ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা ভিসি অফিসের সামনের সিঁড়িতে রক্ত ঢেলে দেন।

হঠাৎ করে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা নতুন মাত্রা সংযোজন করার চিন্তা পেলো কোথায়? অবশ্য সে সুযোগটা করে দিয়েছে ছাত্রলীগ! বুয়েটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ছাত্রলীগের কর্মীদের হামলা খুবই দুঃখজনক।

বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রকাশিত খবর অনুসারে, বুয়েটের শুধু নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগ কর্মীরা শিক্ষার্থীদের উপর চড়াও হয়।

তৃতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী সুব্রত সাহা বলেন, "যেহেতু ভিসি-প্রোভিসি তাদের পালিত গুণ্ডা বাহিনী দিয়ে আমাদের রক্ত প্রবাহিত করতে চাচ্ছেন এজন্য আমরা আগেই রক্ত সংগ্রহ করে তাদের কাছে পাঠাবো। আমরা বুয়েট রক্ষায় রক্ত দিতে প্রস্তুত।" (খবর: বার্তা২৪ডটনেট)

এ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নতুন করে উপচার্য ও উপ- উপাচার্যকে পদত্যাগের আহ্বান জানান তারা। এ কর্মসূচিতে অংশ নিতে এরমধ্যে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বুয়েটের ইএমই ভবনের সামনে জড়ো হতে শুরু করেছেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় ক্যাম্পাসে কোনো মাইক ব্যবহার করতে দেয়া হয়নি।

এদিকে, যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিত এড়াতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের করা হয়েছে।

এর আগে গত রোববার উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে পদত্যাগের জন্য সকাল ১১টা পর্যন্ত আবারো সময় বেঁধে দেন আন্দোলনকারীরা। তারা উপাচার্যের কার্যালয়ের ভিতরে অবস্থান নিয়ে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার ঘোষণা দেন।

তবে মাননীয় উপাচার্য মহোদয় অলরেডি জানিয়ে দিয়েছেন, তার নিয়োগ দাতারা না বললে তিনি পদত্যাগ করছেন না ।

ঘটনা যে দিকে যাক, অন্ততঃ এটা বলা যায় যে, দেশের আন্দোলনের ক্ষেত্রে নয়ামাত্রা যোগ করলো বুয়েটর শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা। বুয়েট শিক্ষার্থীরা সফল হোক বা না হোক আগামীতে এ ধরণের কর্মসূচি পালন করতে পারে আজকের বিরোধীদল কিংবা ক্ষমতার পালাবদল হলে আগামী দিনের বিরোধীদল অথবা বামরা। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংস্কৃতি তথা যে কোনো আন্দোলনের ক্ষেত্রে 'প্রতীকী রক্তপাত' কর্মসূচি বিরাট মাইলফলক হতে পারে!