ঝড়-বৃষ্টির দিনে আগডুম-বাগডুম

কাজী শহীদ শওকত
Published : 26 May 2017, 07:26 PM
Updated : 26 May 2017, 07:26 PM

এদিকে আকাশ যখন আঁধার করে দমকা বাতাসে ঠাণ্ডা বয়, তখন দূরে কোথাও ঠিকই বৃষ্টি হয়। এসময় পাখিরা আতঙ্কিত হয়; ওই ভৌতিক আকাশ বেয়ে ছুটে চলে, নীড়ে ফেরে। এখন অনেকের বাসা থেকে বাচ্চাদের পড়ে যাবার ভয় আছে–ওড়তে শেখেনি যে।  এরপর বৃষ্টি নামে। ঝড়ের ঝাপটায় বৃষ্টির ধারা দিগ্বিদিক ছিটকে যায়। গুঁড়ো বৃষ্টির ছাঁট ধোঁয়ার মতো এঁকেবেঁকে চোখ ধাঁধাঁয়। এমন দিনে বাইরে যেতে মানা। রেইন কোট আর ছাতায় আর চলছে না, বজ্রপাতের ভয়টা সবার বেড়েছে ভীষণ। নগরে সতর্কতা বেড়েছে। গ্রামে এসবের বালাই নেই। মানুষ দিব্বি মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। সব চোখে এই অদ্ভুত আকাশ বিশেষ হয়ে ওঠে না। বহুচোখ আজ বুঁজে আছে। বহু চোখ আজ নিম্নমূখী।

বৃষ্টিতে কৃষ্ণচূড়া , সোনালুরা টাউনহল মোড়ে ভিজে ভিজে একাকার। শীতশীত পাঁপড়ির গায়ে জলজ পরশ। পাতারাও খুব কাঁপছে। এই দুই ফুলের ঘ্রাণ চোখ দিয়ে নিতে হয়।

এই যে এতো রোদ গেলো। আরও কতো প্রখরতর রোদের দিন তো আছেই পড়ে। এই সবুজ পাতা, লাল-হলুদ ফুল–কোনোটিই তো জ্বলে গেলো না। গাছেরা মানুষের চেয়ে, পাখিদের চেয়ে সহনশীল হয়।

নদের বুকে ঈষৎ ঢেউয়ের বাঁক। জোর বাতাসে ঘাসগুলো কাঁপে, ওপারে গাছেদের পাতারা কাঁপে। বৃষ্টি হলে নদের বুকে সুখের ছলাৎ জাগে। আকাশ মাতানো জলের প্রতিটি ফোঁটা নদ ও নদীর সন্তান। বারান্দায়, জানলায় বৃষ্টির যতখানি ঝরে পড়ে, তাতে নদের এবং নদীর ঘ্রাণ থাকে।

একদিন এই খাঁ খাঁ নগর ছেড়ে ঘাসের দেশে, গাছের দেশে তল্পিতল্পাসহ চলে যাওয়া যায়। মাঠের কোণে, গুল্মদেয়ালে ঘেরা মাটির একটা ঘরে একটা চিনিগুঁড়ি ধান হয়ে ঘুমিয়ে থাকা যায়। তারপর আরেক দমকা বাতাসে খিড়কি দিয়ে উড়ে গিয়ে মাঠের কোনো গাছের ছায়ায় লুকিয়ে ফেলা যায় নিজেকে। ইচ্ছে মতো কিছু একটা হয়ে জেগে ওঠা যায়।