বেহাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দূষিত নগর

কৃষ্ণেন্দু লেনিন
Published : 5 July 2017, 03:31 AM
Updated : 5 July 2017, 03:31 AM

(ছবিটি ঢাকার টিকাটুলি এলাকা থেকে তোলা।)

ঢাকা শহরের প্রধান প্রধান সড়কে প্রতিদিন ফেলা ময়লা-আবর্জনার স্তুপের কারনে রাজধানিবাসী নাজেহাল। রাস্তায় ফেলে রাখা এই সকল ময়লা পচে দূষিত হয় এবং  চিকনগুনিয়া, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, টাইফয়েড, আমাশয়, ডাইরিয়া, যক্ষা, ক্যানসার ইত্যাদি ব্যাধির জীবানু জন্মে ও বাতাসে তা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।

খুব বড় ভিআইপি মানুষ ছাড়া ঢাকায় বসবাসরত ৯৯.৯৯% মানুষেরই নিজ বাসার কাছাকাছি রাস্তায়, প্রয়োজনে অন্য এলাকার রাস্তায় পায়ে হেটে বা রিকশায় যাওয়া লাগে।  ঢাকাতে কতজন মানুষই বা ২৪ ঘন্টা গাড়িতে চলাচল করেন। যারা গাড়িতে চলেন তাদের মধ্যে অনেকেই মহল্লার মধ্যে পায়ে হেঁটে নামাজে বা চায়ের দোকানে যান। তাই হাতে গোনা কয়েকজন মানুষ ছাড়া রাজধানির প্রায় সব মানুষেরই রাস্তায় ফেলে রাখা বিষাক্ত ময়লার জীবানু মিশ্রিত দূষিত বাতাস নি:শ্বাসের মাধ্যমে শরীরের ভিতরে ঢোকে।

স্কুলগামী শিশুদের রাস্তায় ফেলে রাখা দূষিত ময়লার বিষাক্ত গন্ধে সর্দি কাশি জ্বরসহ অনেক ধরনের জটিল রোগ হচ্ছে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এ বিষয়টি সর্বদা নজর এড়িয়ে চলছে। ঢাকার রামপুরা, শান্তিবাগ, মালিবাগ, বাড্ডা, সদরঘাট, যাত্রাবাড়ি, কারওয়ান বাজারসহ  প্রায় সকল প্রধান প্রধান সড়কে রয়েছে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ।

বাংলাদেশে অ্যাসেপটিক বা অপচনশীল বর্জ্যের রিসাইকেল কারখানা থাকলেও  সেপটিক বা পচনশীল বর্জ্যের কোন রিইউজ প্লান্ট নেই। আমরা জানি যে পচনশীল বর্জ্য দ্বারা বায়োগ্যাস ও জৈব সার তৈরি করা যায়।

যদি ঢাকা শহরের প্রতিদিনের পচনশীল বর্জ্যসমূহ রিইউজ বা পুনরায় ব্যবহার করে জৈবসার, বায়োগ্যাস ইত্যাদি তৈরি করা যেত তবে শহরের খোলা রাস্তায় এভাবে ময়লা ফেলে রাখতে হতো না।  পৃথিবীর উন্নত দেশের মত উড়াল সেতু তৈরি করা গেলে, হাতিরঝিল তৈরি করা গেলে, ঢাকা শহরের খোলা রাস্তার সকল  ময়লা-আবর্জনা পরিচ্ছন্ন করতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করা যাবে না কেন?