‘জয়-যাত্রা’ হোক তৃণমূল থেকে

আইরিন সুলতানাআইরিন সুলতানা
Published : 7 May 2014, 06:24 PM
Updated : 7 May 2014, 06:24 PM

যে ডাইনেস্টি ভেঙে টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ রাজনীতির প্রতিটি ধাপে আপন যোগ্যতার নিরিখে জনসমর্থন গড়ে তুলছেন, সেই ডাইনেস্টি বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি অমোঘ ভাগ্যলিপি। বাংলাদেশের রাজনীতি পরিবারতন্ত্রের চক্র থেকে বেরোতে পারবে না এই সত্যটা রাজনীতিবিদ আর জনগণ– দুপক্ষই জানে।

প্রধান দুটি দলের মূল অবকাঠামো আর জনসমর্থন টিকিয়ে রাখতে দল পরিচালনায় উত্তরাধিকারের রাজনীতি ভিন্ন বিকল্প পন্থা দল দুটির জন্য আত্মঘাতী। জনতা দুটি দলের শাসনামলের অভিজ্ঞতা থেকে একে আস্থা হারিয়ে অপরকে বেছে নিয়েছে। দল থেকে জ্যেষ্ঠ নেতারা চলে গিয়ে নতুন দল গঠন করে ভিন্নধারার রাজনীতির আশ্বাস দিলেও সে কেবল সাময়িক সাড়া জুগিয়েছে।

এরপর এ দলগুলোকে মূল দলের সঙ্গে জোট-জোট আলাপে আসতে হয়েছে। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জয়জয়কারও উল্লেখ করার মতো নয়। মোদ্দা কথা, আওয়ামী লীগের ব্যর্থতা পরবর্তী নির্বাচনে বিএনপির সাফল্যের আভাস দেয়। আর বিএনপির ব্যর্থতা আওয়ামী লীগের ভোট নিশ্চিত করে। বাংলাদেশের রাজনীতি এই দ্বিচক্রযানে ভর করেই চলছে।

তবে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগকে জনতা এর মধ্যে দুদফা সমান সুযোগ দিয়ে পরখে নিয়েছে। ফলে এবারের জাতীয় নির্বাচন আ্ওয়ামী লীগ–বিএনপি তো বটেই, জনতার জন্যও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া জারি রাখা এবং বিচারের রায় বাস্তবায়নে বিএনপি জনতার আস্থা অর্জনে অসফল, ফলশ্রুতিতে জনতাকে ভাবতে হয় আওয়ামী লীগের ক্ষমতা পুনর্বহালের কথা। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না এলে মানবাধিকারবিরোধী অপরাধের বিচারে যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে যারা সাক্ষ্য দিয়েছেন, তারা কতটুকু নিরাপদ থাকবেন, এই আশঙ্কাও করছেন অনেক মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবার।

বিরোধী দলীয় নেত্রীর শারীরিক সমস্যা, তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা ও তার দীর্ঘ প্রবাসজীবন বিএনপিকে যথেষ্ট নাজুক অবস্থানে রেখেছে। যদি্ও মির্জা আলমগীর-মওদুদ-রিজভি-পাপিয়া প্রমুখ নেতারা বিএনপিকে নানাভাবে চাঙ্গা রাখতে নিজ নিজ সক্রিয়তা বজায় রেখেছেন নিয়মিতই। তবে বিএনপিতে দল পরিচালনায় তারেক জিয়ার সরাসরি সম্পৃক্ততা নতুন খবর নয়। বিএনপির দলীয় গোলটেবিল আলোচনা কক্ষের দেয়ালে জিয়া-খালেদা জিয়ার পর তারেক জিয়ার বাঁধানো প্রোফাইল ছবিটি স্পষ্ট করে বিএনপির আগামী নেতৃত্বের।

প্রবাসজীবনে তারেক জিয়া দীর্ঘ সময় রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে নিজেকে আড়াল রেখেছিলেন। সে আড়াল ভাঙলেন কিছুদিন পূর্বে লন্ডনে এক সভায় রাজনৈতিক বক্তৃতা প্রদানের মধ্য দিয়ে। এমনকি তারেক জিয়া শিগগির দেশে ফিরছেন, এমন প্রচ্ছন্ন আভাসও ছিল খোদ তার এবং দলীয় নেতাদের বিবৃতিতে।

বিএনপিতে তারেক জিয়া যতটা প্রকাশ্য আর অবশ্যম্ভাবী ছিলেন এবং আছেন, আওয়ামী লীগে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সংযুক্তি ততটাই আড়ালে। প্রযুক্তিগত বিষয়ে সরকারি ক্ষেত্রেও জয় পেছন থেকেই পরামর্শক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন দীর্ঘদিন। দলীয় পর্যায়ে থেকেও আড়াল রাখায় জয়কে দলীয় নেতৃত্বে কল্পনা করার বিষয়টি ক্রমেই সকলের ভাবনা থেকে বিলুপ্ত হচ্ছিল।

তাই ১৬ জুলাই জয় যখন সস্ত্রীক দেশে এলেন, তখন এই ফেরার রাজনৈতিক তাৎপর্য জনতা গণমাধ্যম কিংবা প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও বুঝতে অপারগ ছিল। জয় তার বিয়াল্লিশতম জন্মদিনে যখন ফেসবুক ফ্যানপাতা খুলে অল্প কিছু অনুসারী দিয়ে শুরু করলেন, তখনও এর জনপ্রিয়তার কম্পন কেউ অনুধাবন করতে পারেননি। তারপরও জয়ের রাজনৈতিক অঙ্গনে আনুষ্ঠানিক অভিষেক ঘটে গেল যেন এই ফেসবুক ফ্যানপাতা দিয়েই। ফ্যানপাতার অনুসারী সংখ্যা দ্রুত থেকে দ্রুততর বাড়তে লাগল।

জয় একটা পারিবারিক আবহও তৈরি করলেন নিজ জন্মদিনে তার মা শেখ হাসিনা কর্তৃক মোরগ-পোলাও রান্নার 'এক্সক্লুসিভ' ছবি প্রকাশ করে। এই ছবিটি 'টক অব দ্য কান্ট্রিতে' পরিণত হয়।বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে এই সংবাদটি সর্বাধিক পঠিত তালিকায় উঠে এসেছিল।

এরপর একাত্তর চ্যানেলে জয়ের একটি সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেও আলাপ প্রসঙ্গে সন্তানের জন্মদিনে শেখ হাসিনার মোরগ-পোলাও রান্না নিয়ে কথা হয়। এরই মাঝে জয়ের রংপুর আসন থেকে নির্বাচন প্রার্থী হওয়ার জোর আভাসও পাওয়া গেছে।

বস্তুত সজীব ওয়াজেদ জয় এখন আলোচিত। তার বক্তব্য বিরোধী মহলে সমালোচিতও। এটা অনস্বীকার্য যে, সবাই আসলে জয়ের পরিকল্পনা জানতে আগ্রহী। তার দক্ষতা মাপতে উৎসুক। তাবত্ আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে বিরোধী দল-জনতা-মিডিয়ার পক্ষ থেকে এক প্রকার স্বাগত বার্তাই পাচ্ছেন জয়।

জয়ের পারিবারিক পরিচিতি রাজনীতি ও শিক্ষায় সম্ভ্রান্ত। তার সামনে অসংখ্য দৃষ্টান্ত। কখনও নানা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান, কখনও মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কখনও বাবা খ্যাতনামা পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া। জয়ের সহোদরা পুতুল বিশ্বে তার অটিমজ সংক্রান্ত উদ্যোগের জন্য প্রশংসিত। খালাতো বোন টিউলিপ ব্রিটিশ রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।

দেখা যাচ্ছে, পত্রিকা হোক কিংবা টিভি চ্যানেল, জয়ের নামের আগে অনেক পরিচিতিমূলক বিশেষণ যুক্ত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীপুত্র, বঙ্গবন্ধুর নাতি এ রকম পরিচিতি ছাড়া কেবলমাত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর করে দিয়েছে গণমাধ্যম। অথচ তাকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে টিকে থাকতে হবে নিজ দক্ষতায়। গড়ে তুলতে হবে নিজ পরিচিতি। তার ধমনীতে যে পারিবারিক রাজনৈতিক ধারা প্রবহমান, সে ধারা তাকে হয়তো তার অজান্তেই আত্মবিশ্বাস দেবে।

উত্তরাধিকারের রাজনীতি চর্চায় জয় অবধারিতভাবে দলীয় নেতৃত্বস্থানীয় পদমর্যাদা পাবেন। এসব অনেক বিষয় এড়ানো অসম্ভবপর হওয়ার পরও জয়কে 'নেতা' হয়ে উঠতে হবে আপন কর্মে। প্রশ্ন হল, তিনি এভাবে ভাবেন কি? তিনি কীভাবে এগুচ্ছেন আগামীর নেতা হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার এই রাজনৈতিক 'জয়-যাত্রায়'?

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার শতেক ব্যস্ততার মধ্যেও সন্তানের প্রতি দায়িত্ব আর রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্বে ভারসাম্য রক্ষায় সচেষ্টতা দেখিয়েছেন। যে শাড়ি পরে তিনি রান্নাঘরে প্রবেশ করেছিলেন, সেই শাড়ি পরেই সেদিন তাকে রাষ্ট্রীয় কার্যপরিচালনায় দেখা গেছে। মুক্তিযোদ্ধা রমা চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাতকালেও শেখ হাসিনার পরনে ছিল সেই সাদামাটা শাড়ি।

যে পারিবারিক ছবিটি জয় ফেসবুক ফ্যানপাতায় প্রকাশ করেছিলেন, সেখানে তিনি লিখেছিলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার জন্য রান্না করছেন'। অথচ চুলার পাড়ে যিনি ছিলেন, তিনি ওই সময় জয়ের জননী শেখ হাসিনাই।

জয়ের মাধ্যমে আমরা হয়তো পারিবারিক আনন্দঘন মূহূর্তের আরও ছবি ফেসবুক ফ্যানপাতায দেখতে পাব। অনেক ধরনের নেতিবাচক মন্তব্য থাকলেও, আমাদের সামাজিক ধ্যান-ধারণায় এর ইতিবাচক এমনকি আবেগঘন প্রভাবই বেশি। জয়ের ফেসবুক-সংযোগ নিয়মিত হলে তরুণ প্রজন্মের মাঝে তার গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে।

ডিজিটাল বাংলাদেশে ই-গভর্ণমেন্টের অন্যতম উদ্দেশ্যই সরকার আর জনতার মধ্যকার যোগাযোগ স্থাপন ও সহজতরকরণ। অথচ আমাদের রাজনৈতিক নেতারা ফেসবুক, ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নাগরিক মিথস্ক্রিয়ায় অংশগ্রহণে বিমুখ বলে প্রযুক্তি-প্রজন্মের একটি অভিযোগ রয়েছে।

তাই এ প্রজন্মের আস্থা অর্জনে জয় কেবল ফেসবুকে সীমিত না থেকে গুগল প্লাস ও টুইটারেও যদি অফিসিয়াল প্রোফাইল পরিচালনা করেন তবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আমাদের দৈনন্দিন রাজনীতি চর্চিত হওয়ার সুযোগ পাবে সহজেই। পাশাপাশি উইকিপিডিয়াতে বাংলা ও ইংরেজিতে নিজ ও দলীয় প্রোফাইল তৈরি ও হালনাগাদের উদ্যোগ নিতে পারেন জয়।

অপর বাস্তবচিত্র হল, দলীয় দায়িত্ব পালনে কিংবা আগামীতে রাষ্ট্রের গুরুভার গ্রহণের যাত্রা কেবলমাত্র ফেসবুকে নিয়মিত হয়ে, কিছু মিডিয়া সাক্ষাৎকার দিয়ে নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। দেশের আনাচে-কানাচে নিজ গ্রহণযোগ্যতা অর্জন যা সময়সাপেক্ষ আর পরিশ্রমলব্ধ, সেটাই করে দেখাতে হবে জয়কে। কেবল রংপুর নয়, জয়কে পৌঁছে যেতে হবে বাংলাদেশের ৭টি বিভাগের ৬৪ জেলায় বসবাসরত মানুষের দ্বারে। ভাষণে-বিবৃতিতে-সাক্ষাৎকারে সঠিক শব্দ নির্বাচনে তাকে হতে হবে সুচিন্তিত ও চৌকস।

একাত্তর চ্যানেলের সাক্ষ্যাৎকারে জয় অনেকবারই বিরোধী দলের সমালোচনা করেছেন। ওই বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে, তাকে এই পাঠ দল থেকে শেখানো হয়েছে। একই ধরনের বক্তব্য আওয়ামী লীগের নেতারা অহরহই দেন। জয়কে এই গতানুগতিক ধারার বক্তব্য প্রদান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

অন্যদিকে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন আয়োজিত 'লেটস টক' অনুষ্ঠানে বরং জয়কে প্রচণ্ড সাবলীল আর আত্মবিশ্বাসী দেখা গেছে। সরাসরি প্রশ্নবাণের মুখোমুখী হওয়া, উপস্থিত তরুণ দর্শকদের মাঝে মাইক হাতে সহজ পদচারণা জয়ের অনেকদূর এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দিচ্ছে।

আওয়ামী লীগের দলীয় রাজনীতির অতীত-বর্তমান পাঠ সজীব ওয়াজেদ জয়কে পড়াতেই পারে। তবে এর উপস্থাপন ভার তার উপরে ছেড়ে দিলে অন্তত কোনো প্রকার ব্যক্তিত্ব-সংকট গড়ে ওঠার আশঙ্কা থাকে না।

আওয়ামী লীগকে জয়ের ব্যক্তিত্বের ও বুদ্ধিমত্তার শক্তিশালী দিকটিকে চিহ্নিত করে বিকশিত হওয়ার সুযোগ দিতে হবে সঠিক নির্দেশনায়। জয়ের রাজনীতি গতানুগতিক রাজনৈতিক বুলি আওড়ানো আর বিরোধী দলের নিন্দাজ্ঞাপনে সীমাবদ্ধ হলে তরুণ প্রজন্ম কিন্তু দ্রুতই মুখ ফিরিয়ে নেবে।

কেবল যে আমাদের দেশেই উত্তরাধিকার রাজনীতি চর্চিত হয় তা নয়। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে জওহরলাল নেহেরু থেকে তরুণ রাহুল গান্ধী উত্তরাধিকারের রাজনীতির দৃষ্টান্ত। তবে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর স্ত্রী সোনিয়া গান্ধী ২০০৪ সালে যে বিচক্ষণতার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার দৃঢ়তা দেখিয়েছেন তা বিরল।

রাজীব হত্যাকাণ্ডের পর রাহুল আর প্রিয়াংকার দিকেই ছিল বিশ্বদৃষ্টি। রাহুলের রাজনীতিতে প্রবেশ ঘটে লেখাপড়ার পাঠ চুকিয়ে, ২০০৪ সালে। উইকিলিকস সাঈদ নাকভির বক্তব্য উদ্ধৃত করেছিল, যেখানে বলা ছিল রাহুল কোনোদিনই প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না; কারণ তার ব্যক্তিত্বের আবেগি দিকটি তার প্রধানমন্ত্রীত্ব লাভে অন্তরায়।

তথাপি, একথা সত্য যে রাহুল গান্ধীকে 'ইয়ং আইকন' হিসেবে মানা হয়। তিনি যেভাবে দলিত সমাজের সঙ্গে নিজেকে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে নিতে পেরেছেন, তা এই তরুণ রাজনীতিবিদের তৃণমূল-সম্পৃক্ততা জোরালোভাবে জানান দেয়।

জয়কে রাহুল গান্ধীর পথে হাঁটতে হবে এমনটা প্রত্যাশা নয়। তাকে তারেক জিয়ার চেয়ে এগিয়ে থাকতে হবে, এমন প্রতিযোগিতাতে নামাও অবান্তর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন অভিজ্ঞতালব্ধ। বঙ্গবন্ধু একদিনে বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠেননি, রাজনৈতিক জীবনে ধাপে ধাপে তিনি একজন তরুণ ছাত্রনেতা থেকে জাতির জনক হিসেবে অপরিহার্য হয়ে উঠেছিলেন।

তাই আবশ্যক হল জয় নিজ দক্ষতা, যোগ্যতাবলে অবস্থান গড়ে তোলার পথেই হাঁটবেন। তাকে জানান দিতে হবে 'স্বপ্ন-সম্ভাবনা-সমাধান-সাফল্যের' কথা। কেবল শহুরে-শিক্ষিত-ধনীক শ্রেণির জন্য রাজনীতি নয়, গ্রামাঞ্চলের-অশিক্ষিত-দরিদ্র শ্রেণির কাছে আস্থা অর্জন করে এমন রাজনীতিই করুন সজীব ওয়াজেদ জয়।

জয়কে ঘিরে সাফল্যের আশা আছে, আবার ব্যর্থতার আশঙ্কাও আছে। অপরাজনীতির চর্চাকারীদের ঈর্ষাকাতরতাও আছে। সে কারণেই হুমকিসূচক বার্তা পেয়েছেন তিনি ইতোমধ্যে। জয়ের আমেরিকা চলে যাওয়া নিয়ে নেতিবাচক প্রচার চালানোর অপচেষ্টা আছে। তার প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি পদক্ষেপই সমর্থনকারী আর সমালোচনাকারীদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া আর অপপ্রচারের অতিউৎসুক ক্ষেত্র করেছে।

জয় গত কদিনে যে তারুণ্যদীপ্ত 'ভাইব্রেশন' জাগাতে সমর্থ হয়েছেন তা ধরে রাখতে, আমাদের রাজনৈতিক ধারা, আমাদের রাজনৈতিকমনষ্কতা বুঝতে আমাদের দেশীয় রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে প্রচুর সময় ও শ্রম দিতে হবে তাকে। জয়ের ভাষ্যমতে, ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার অর্ধেক পথ অতিক্রম হয়েছে, আর অর্ধেক বাকি।

কিন্তু তার জয়যাত্রার পুরো পথটিই এখনও বাকি। এই পথচলার সুস্থ-সুন্দর-নিরাপদ সূচনা ঘুটক একেবারে তৃণমূল থেকেই। প্রধানমন্ত্রীপুত্র কিংবা বঙ্গবন্ধুর নাতি হিসেবে নয়, জয়ের রাজনৈতিক পরিচিতি গড়ে উঠুক আমজনতার 'আইকন' হিসেবে, আপন সততায় আর দৃঢ়তায়।

——————

http://opinion.bdnews24.com