দগ্ধ অপর ৩ জন ও পরিবারের জন্য কিছু করাটা জরুরি

আইরিন সুলতানাআইরিন সুলতানা
Published : 26 May 2017, 09:59 PM
Updated : 26 May 2017, 09:59 PM

৩০ তারিখ অশুভ এমন ভাবনায় আটকে থাকাটা আবেগতাড়িত হলেও সত্যি যে ৩০ এপ্রিলে ওই বিশেষ মুহূর্তটা শুভ ছিল না ৪ জনের জন্য। এই ৪ জনের একজন আমাদের ‍উৎপল দা – উৎপল চক্রবর্তী। ৩০ এপ্রিল  গড়িয়ে  ১ মে হতে হতে স্বজনদের উৎকণ্ঠাও ছিল নির্ঘুম, যে কোন সময় যে কোনো কিছু ঘটে যেতে পারে। উৎপল দার জন্য আমরাও চিন্তায় অস্থির ছিলাম। আমাদের আশংকা,  প্রার্থনা আর সাথে ডাক্তারদের ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণ। তারপর আমরা উৎপল দাকে নিয়ে আশাবাদি হয়ে উঠেছিলাম। অথবা উৎপল দা হয়ত আইসিইউ থেকে নিজের চেয়ে আমাদের জন্য চিন্তিত হয়ে নিজের প্রকৃত কষ্ট লুকাতে ভাল হয়ে ওঠার সংকেত দিয়ে যাচ্ছিলেন। এবং তা এমন ভাবে যে, ২০ দিন ছুঁতে  ছুঁতে আমরা দুর্ঘটনার উত্তাপ ভুলতে থাকি। নির্ভার হতে থাকি।  এই তো কিছুদিন আর …। তারপর উৎপল দা  আইসিইউ থেকে কেবিনে ফিরবেন, তখন হয়ত তার সাথে মাঝেমাঝে একটুআধটু দেখা করা যাবে। কথা বলা যাবে। আমরা আচমকা ভুল হয়ে উঠলাম, ২০ দিনের মাথায়। কিছু বুঝে ওঠার আগে উৎপল দা লাইফ সাপোর্টে। আরো কিছু ভেবে ওঠার আগেই উৎপল দা নেই!

৩০ এপ্রিলের দুর্ঘটনার ৪ জনের ৩ জন একই পরিণতি বরণ করেছেন ইতিমধ্যে। যেহেতু দুর্ঘটনায় অপরাপর ব্যক্তিরা আমাদের চেনা নয়, তাই তাদের খোঁজ সামান্য চোখের অগোচরে ছিল। ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোনায়েম হোসেন (৩৮) মারা যান সম্ভবত রবিবার ৭ মে ২০১৭ তারিখে।  মোনায়েম পেশায় ছিলেন রঙ মিস্ত্রি। বাড়ি ছিল গোপালগঞ্জ জেলায়। পরিবারে তার দেড় বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান এবং ছয় বছর বয়সী এক পুত্র সন্তান।

এই মৃত্যু উৎপল দার স্বজনদের ব্যথিত করে। উৎপল দার পরিবার ও বন্ধুরা উৎপল দার জন্য ব্যতিব্যস্ততেও ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন থাকাদের জন্যও উদ্বিগ্ন হয়ে এই পরিস্থিতিতেও যতটা সম্ভব খোঁজখবর রাখতে থাকলো। তবুও সময় কেন যেন হাত গলে বেরিয়ে যেয়ে আমাদের অসহায় করে দিচ্ছিল। সোহেল হোসেন (২৮) মারা গেলেন বুধবার ১৭ মে ২০১৭। সোহেলের সন্তানও শিশু। আলী রেজা (৩০) এখনো চিকিৎসাধীন। তাকে সম্প্রতি কেবিনে রাখা হয়েছে। প্রতিদিন তার জন্য খরচ হচ্ছে কমবেশি ৬০০০ টাকা। উৎপল দার স্বজনেরা এই দু:সময়েও চেষ্টা করছে কিছু না কিছু সহযোগিতার।

মোনায়েম অথবা সোহেল অথবা আলী রেজা – এরা অথবা এদের পরিবার আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল নয়। বলতে গেলে উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তারাই। মোনায়েম ও সোহেলে উভয়েরই দুটি করে সন্তান রয়েছে। এদের বয়স ১ থেকে ৬ বছরের মধ্যে। এখন এদের ভবিষ্যৎ কী হবে? আলী রেজার পরিবারেরও প্রতিদিন ৬০০০ টাকা করে খরচ করার  সামর্থ কোনোভাবেই নেই।  তাহলে এদের পরিবারের ভবিষ্যৎ কী? আলী রেজার চিকিৎসা কি অর্থ সংকটে বাধাপ্রাপ্ত হবে?

উৎপল দার স্বজন-বন্ধুরা এই ৩ জনের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন ও করছেন। কিন্তু উৎপল দার পরিবারকেও তো এখন গোছাতে হবে। এই সময় তাদের উপর এত চাপ সকলকেই দিশেহারা করতে পারে। তাই এই সময় আমরা এগিয়ে আসতে পারি। ৪ জনের ভবিষ্যৎ ৩০ এপ্রিলের ওই দুর্ঘটনা থেকে পালটে গেছে। এমন ভাবে পালটেছে যা অনাকাঙ্খিত। এখন এদের পাশে মানসিকভাবে দাঁড়াতে হবে কারো। এবং বাস্তবতা প্রেক্ষিতে আর্থিকভাবেও সহযোগীতার কথা ভাবতে হবে। তাই মৃত মোনায়েম ও সোহেলের পরিবারের জন্য এবং আলী রেজার চিকিৎসার জন্য যতটা সম্ভব  অর্থ একত্রিত করতে পারলে খুব ভাল হয়।  এটা দ্রুতই করা দরকার। সংগৃহিত অর্থের পরিমাণের উপর তা মোনায়েম ও সোহেলের পরিবারকে দেয়া হবে অথবা আলী রেজার চিকিৎসায় ব্যয় হবে।

আপনাদের সবার কাছে অনুরোধ, যতটা সম্ভব সহযোগিতা করুন। এবং দ্রুত করুন। অনুরোধ করছি বরাবরের মত, কে কত দিচ্ছে, অন্যের চেয়ে অর্থ সাহায্য পরিমাণ কম হয়ে গেল কিনা এসব ভাবনাচিন্তায় সময়ক্ষেপন না করে, খুব দ্রুত সাড়া দিন। এই আহবানটি আপনার সহ-ব্লগারের সাথে শেয়ার করুন বিভিন্ন পোস্টে। আপনি সাড়া না দিলে এই আহবান সফল হবে না।

*********************************************************************

অর্থ প্রেরনের মাধ্যম:
সুন্দরবন কুরিয়ার (————–, জসিমউদ্দীন রোড, উত্তরার নিকটবর্তী শাখা)

*********************************************************************

বি.দ্র.

১. অর্থ প্রেরণের পর অবশ্য এই পোস্টে মন্তব্য করে জানাবেন। স্বচ্ছতা রক্ষায় প্রাপ্ত অর্থের সর্বমোর্ট আপডেট নিয়মিতভাবে মন্তব্যের মাধ্যমে জানানো হবে।
২. আপনার নিকটস্থ যে কোনো সুন্দরবন কুরিয়ার থেকে পোস্টে উল্লেখিত সুন্দরবন কুরিয়ারে অর্থ প্রেরণ করতে হবে।
৩. প্রদত্ত নম্বরটি বিকাশ নয়। তাই অনুগ্রহ করে বিকাশ করবেন না।