কুর্মিটোলায় ভগ্ন ফুটপাতে সৌন্দর্যহানি: মেরামত হবে কবে?

আইরিন সুলতানাআইরিন সুলতানা
Published : 9 June 2017, 07:29 PM
Updated : 9 June 2017, 07:29 PM

উত্তরা-এয়ারপোর্ট রোডে সৌন্দর্য বর্ধন কাজ চলছে। ফুটপাত চলার উপযোগী করা হয়েছে। মনোজ্ঞ সন্ধ্যাবাতি লাগানো হয়েছে। বিশাল বাস স্টপেজ হচ্ছে। আরো হচ্ছে পাবলিক টয়লেট। কাজ সুনির্দিষ্টভাবে কখন শেষ হবে সেটা জানা না গেলেও অনেক অংশে কাজ পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। ফুটপাতে চলতে চলতে বীরশ্রেষ্ঠদের মুর‌্যাল দেখছি থেমে থেমে।  গাছ দেখছি, ঝরনা দেখছি, পাথর দেখছি চলতে চলতে। কিন্তু ফুটপাত পাশে সবুজ বাগানের মাঝে উন্মুক্ত জলাশয়ে বর্ণিল মাছ দেখবো তা ভাবিনি। এতগুলো মাছ দেখতে পেয়ে মনে হলো, মাছ তাহলে চুরি হচ্ছে না! পথচারীদের দায়িত্বশীলতায় মুগ্ধ হলাম।

হোটেল রেডিসনের বিপরীতে তথা কুর্মিটোলা হাসপাতাল সম্মুখে সংস্কারকৃত ও নির্মিত ফুটপাত জনসাধারণের উপভোগ ও ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত বেশ অনেকদিন। ফুটপাতের উপর সীমা নির্ধারণে লোহার ঝালাই করা শেকলসহ খুঁটি বেষ্টনি হিসেবে বসানো হয়েছে। এরই একাংশ ভেঙ্গে-দুমড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। দৃষ্টিনন্দন ফুটপাতের এই অংশের ভগ্নদশা বড্ড বেমানান।

২০১৬ সালে নভেম্বর মাসে মধ্যরাতের দিকে একটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছিল। একটি মাজদা গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফুটপাতের উপর উঠে যায়। ওই ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে দুজন আহত হয়েছিল যাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং ফুটপাতের টাইলস, খুঁটিও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সম্ভবত ক্ষতিপূরণের একটি দাবি উঠেছিল।  তবে এর কতদূর অগ্রগতি হয়েছে কে জানে!

এখন পর্যন্ত ভগ্ন ফুটপাত দেখে মনে হচ্ছে যদি ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তির কোনো সম্ভাবনা থেকে থাকে, তবে হয় তা দাবিই করা হয়নি অথবা ক্ষতিপূরণের বিষয়টি এখনো অমীমাংসিত। তাহলে কতদিন ফুটপাতের এই অংশটি এমন ভগ্নদশায় থাকবে? সৌন্দর্য বর্ধন প্রকল্প 'ডিজিটাল ও সবুজ সড়ক' বিশাল অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পরে প্রতি বছর রক্ষনাবেক্ষনের জন্যও অর্থায়ন নির্ধারিত রয়েছে। তাহলে ফুটপাতের এই অংশ মেরামতে এখনো গড়িমসি কেন  করা হচ্ছে?

ফুটপাতের বিউটিফিকেশনের মাঝে ভাঙ্গা খুঁটি 'বিস্ট' (Beast) এর মত সৌন্দর্যহানি করছে। এত দীর্ঘ সময়েও এই অংশের মেরামত করতে না পারা প্রকল্পের দীর্ঘসূত্রিতা ও সিদ্ধান্তহীনতাকে নির্দেশ করে। ফলে সংশয় জাগে, প্রকল্প শেষ না হতেই যদি এই দশা হয়, তবে প্রকল্প শেষে রক্ষনাবেক্ষণে কতটা পেশাদারিত্ব ও দায়িত্বশীলতা থাকবে? এইসব সংশয় দূর করতে তাই প্রকল্প পরিচালকদের অচিরেই ফুটপাতের এই অংশ মেরামত করে 'ডিজিটাল ও সবুজ সড়ক' প্রকল্পকে জনগণের কাছে নিখুঁত রূপে উপস্থাপন করা উচিৎ।

***
ছবি: ২৬ মে ২০১৭ তারিখ ধারণকৃত।