হাত বাড়িয়ে দিন: কাব্যের গল্পটা শুরুর আগেই যেন না ফুরায়

আইরিন সুলতানাআইরিন সুলতানা
Published : 25 August 2011, 10:17 AM
Updated : 25 August 2011, 10:17 AM

কিনাদি'র (ব্লগার কি নাম দিব, সংক্ষেপে হয়ে গেছে কিনাদি। কেউ কেউ কিনাপু -ও বলে) পোস্ট পড়েছিলাম বটে, তবে আন্তরিক যোগাযোগ হলো সামহোয়্যার ইন ব্লগের ব্লগারদের উদ্যোগ- ইভ টিজিং বিরোধী ক্যাম্পেইন করতে গিয়ে। ইভ টিজিং বিরোধী পোস্টার করা হয়েছিল। সেগুলো ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ছাড়িয়ে ঢাকার বাইরেও সাঁটানো হয়েছিল। ব্লগারদের কুরিয়ার করে পাঠানো হয়েছিল প্রয়োজন মত পোস্টার। সেই সুবাদেই কিনাদি'র সাথে কথাবার্তা। মানে ই-মেইল, ফেসবুক বার্তার নিয়মিত আদান-প্রদান। নিয়মিত বললে ভুল হবে, একেবারে ঘন ঘন। পোস্টার সাঁটানো নিয়ে কত রকম প্রশ্ন যে ছিল কিনাদি'র! সাথে থাকতো বাসায় বকল কি না, বন্ধুরা কে সাথে থাকবে, কে থাকবে না এইসব আলাপ। খুব বুঝতে পারছিলাম, মেয়েটা উচ্ছল, সরল আর প্রাণবন্ত।

পোস্টার কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর ওই নিয়মিত আলাপটা কমে এলো। মাঝেসাঝে ফেসবুকে লাইক আর ব্লগে মন্তব্য -এমনটাই দাঁড়ালো পরিস্থিতি। আমারো আর এর বেশি খোঁজ নেয়া হয় না বিশেষ। ফেসবুকে চ্যাটিংয়ে অনিয়মিত থাকি বলে। ক'দিন আগে অবশ্য একটুক্ষণের জন্য অনলাইন হওয়াতে কিনাদি'কে চ্যাটে হাই-হ্যালো দিলাম। কেমন আছো জানতে চাইলাম। ফেসবুক বার্তা মাঝে মাঝে ঝামেলা করে। সময় মত কথা পৌঁছে না। কিনাদি'র তাৎক্ষণিক বার্তা না পেয়ে আমি লগআউট করলাম। কিন্তু পরে অফ-লাইন ফেসবুক বার্তা পেলাম। কিনাদি বলল, তার মন খারাপ। সাথে একটা লিংক দিল। সংক্ষেপে জানালো তার বন্ধুর বাচ্চা অসুস্থ। বললো, আপু কিছু করতে পারা যায় কি? লিংকে গিয়ে বিস্তারিত জানলাম । Mehfuj Al Fahad এর ফেসবুক নোট পড়ে কিনাদি'র বিষন্নতা আমাকেও গ্রাস করল। ব্লগার বন্ধুদের জন্য নোটটা উল্লেখ করছি ।

'কাব্য'র গদ্য !

ছোট্ট একটা জীবনে অনেক নিষ্ঠুর একটা পৃথিবী দেখছে একটি শিশু। নিষ্ঠুর এই কথাটাও বোধহয় ওর জন্য কম কম হয়ে যায়। ওর জীবনের কবিতা বা গল্প যাই বলি অনেক বেশিই করুণ শোনায়। গল্পের খাতিরে কত গল্পই ত গল্পকাররা লেখেন,আমরাও ত পড়ি। কিন্তু জীবনে সত্য হওয়ার কথা কি ভেবেছি কোনদিন? কাব্যর বেলায় তাই যে হল! আজকেও একটা গল্প বলি। গল্পের নায়ক এক্কেবারেই ছোট্ট একজন। বাজি ধরে বলতে পারি ও আর দশটা 'lil angel' এর মত দুরন্ত না! দুরন্ত হতে হোলে দুষ্টুমি জানতে হয়, চিৎকার করে কাঁদতে হয়, অযথাই এটা ওটা ছুঁড়ে ফেলতে হয়! ওর ত ঐ সময়ই নেই! দিনের বেশীর ভাগ সময় কাটে ওর অচেতন থেকে! কি আশ্চর্য বৈপরীত্য শৈশবের না?

আমাদের গল্পের ছোট মানুষটার অনেক বড় একটা রোগ আছে।ওর বুকে। Complex Pediatric Heart Disease এ ভুগছে! ওর হৃদপিণ্ডে'র দুইটি vain এর মুখ একটি!! ঐ মুখটিও ওর বন্ধ! এর কারনে laungs এ রক্ত চলাচল প্রায় ই বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের গল্পের নায়কের বুকে শুদ্ধ র দূষিত রক্ত গুলো মিলেমিশে একাকার! ছোট্ট মানুষটা ভাল থাকবে কি করে? ওর বাবা মা নিয়ে গেল ডাক্তার এর কাছে, অনেক অনেক বড় ডাক্তার রা দেখলেন,সময় নিলেন।ভাবলেন, চিন্তা করলেন এরপর বললেন আমাদের দেশে ওর ত চিকিৎসা হবে না, নিয়ে যান BANGALORE এ। ওর বাবা মা অকূল সমদ্রে পড়ল! ওদের মাথায় ৫ লক্ষ টাকার বোঝা ! কিন্তু আমাদের গল্পের নায়ক কে যে বাঁচতেই হবে! ওর জীবন এর দাম তো ৫ লক্ষের চেয়ে বেশি,তাই না? এই স্বপ্ন দেখছে ওর বাবা মা।।টাকা যোগাড় ও হচ্ছেনা ! ধিরে ধিরে প্রাণ প্রদীপ নিভতে থাকা আমার গল্পের নায়কের নাম 'কাব্য'। আমার নায়ক কে বাচতেই হবে! পারবে না ও?

reality show র মত বলছি আমার গল্পের 'কাব্য'র জীবন এখন অনেকটা আমার হাতে,অনেকটা আপনাদের হাতে ! আর সর্বশক্তিমান আমাদের চেষ্টা দেখে ওর গল্প লিখবে এটাই আমার আশা ! চলুন সবাই আবার হাতে হাত রেখে চেষ্টা করি নিভতে থাকা একটা প্রদীপ জ্বালাতে। আমি অসীম আশা নিয়ে এই গল্পের শেষ দেখার স্বপ্নে আছি!

সে সময় চটজলদি নোটটা ফেসবুকে শেয়ার দিয়েছিলাম। আশা করি ফেসবুক বন্ধুদের কারো কারো নজরে পড়েছে। কিনাদি'ও চেষ্টা করছে প্রাণান্ত , যতটুকু সম্ভব আর্থিক সহায়তা করার একটা সম্মিলিত উদ্যোগ নেয়ার [কিনাদি'র পোস্ট: কাব্য'র গল্পকে নতুন করে সাজাতে হাত বাড়িয়ে দিন। ( একটি মানবিক আবেদন)]।

সুসংবাদ শেয়ার করার আনন্দ অন্যরকম। দু:সংবাদ শেয়ার করার চাপ বহন করা আরো কষ্টকর। অথচ এই খবরটা শেয়ার করা জরুরী । আমাদের একজনের পক্ষে এতো বড় অর্থ সহায়তা প্রদান সম্ভব নয়। কিন্তু দুই-তিন-চার-পাঁচ জনে মিলে একটা বড় অংক যোগ করা যায়। এই পাঁচ জন থেকে আরো পাঁচ জন। আমরা জানি, বিন্দু থেকে সিন্ধু হয় এভাবেই। ব্লগাররা এমন মানবিক ডাকে সাড়া দিয়েছে বহুবার। এমনকি অর্থ সংগ্রহে শপিং মলেও দল বেঁধে দাঁড়িয়েছিল ব্লগাররা কখনো কখনো, চেনা-অচেনা কারো জন্য। কেবলমাত্র পাঁচ লাখ নয়, এর চেয়ে বেশি অর্থ সংগ্রহ সম্ভব হয়েছিল অনেক ক্ষেত্রেই, সবটাই হয়েছিল দেশে থাকা ও প্রবাসে থাকা ব্লগারদের মিলিত, অক্লান্ত, আন্তরিক প্রচেষ্টায়।

সে ভরসাতেই এমন একটা সংবাদ সবার সাথে শেয়ার করা। প্রত্যাশা কেউ না কেউ তো হাত বাড়িয়ে দেবে। তাকে দেখে আরেকজন। এভাবে অসংখ্য জন। শুরুটা আপনাকে দিয়ে হতে পারে। আপনাকে দেখে আপনার বন্ধু-বান্ধবী, আপনার সহকর্মী, সহপাঠি এগিয়ে আসবে। তাদের দেখে আরো কিছু মানবীয় মানুষেরা …।

পাঁচ লাখ খুব বেশি কি? ১০০ টাকা করে দিলে ৫০০০ মানুষ! ২০০ টাকা করে দিলে ২৫০০ মানুষ! ৫০০ টাকা করে দিলে মাত্র ১০০০ মানুষ। ১৬ কোটি জনসংখ্যার দেশে মাত্র এ কয়জন মানুষ কি এগিয়ে আসবে না?

************************
আর্থিক সাহায্য পাঠাতে:
Mehnaz sharmin Trina
savings account no: 156.101.55603. DBBL.
SWIFT: DBBL BD DH100
ঠিকানাঃ
Mamtasi Emporium
8 & 12 GKMC
Saha Road ( 1st floor)
Choto Bazar, Mymensingh-2200

যোগাযোগ:
Mehfuj- 01723335954,
Mahmud- 01917272525

************************