বিপিএল অনলাইন টিকেট সংগ্রহ বিড়ম্বনা

মামুন ম. আজিজ
Published : 7 Feb 2012, 09:57 AM
Updated : 7 Feb 2012, 09:57 AM

দু'দিনের বিড়ম্বনা শেষে যদিও বিপিএল এর টিকেট তিনটি হাতে পেয়েছি, কিন্তু বিড়ম্বনা মনে উষ্মাভাব না ছড়িয়ে পারলনা।

হায়রে অনলাইন টিকেট ক্রয়! আগে জানলে নগদ টাকাতেই কেনা বোধহয় ভাল ছিল। দুদিন দু ব্যাংকে ঘুরে দেখলাম টিকেট অফুরন্ত। লাইনও নেই। তবে কি টিকেটের দাম বেশী বলে আগ্রহ কম, নাকি খেলা বেশি বলে চয়েজ অফুরন্ত!

সে যা হোক। মূলত ২৮ তারিখ অনলাইনে ডাচ বাংলার নেক্সাস ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে প্রথমে ১১ তারিখের বিপিএল খেলার সাউথ স্ট্যান্ডের ১০০০ টাকা দামের দুটি টিকেট কাটলাম। খুব সহজ সিস্টেম। তবে একটু করে ফেলল আমার বউ টিকেট সংগ্রহের জন্য ঢাকা ব্যাংকের দিলকুশা ফরেন এক্সচেঞ্জ ব্রাঞ্চের পরিবর্তে সংগ্রহের স্থান দেয়া হয়ে গেলো বংশাল ব্রাঞ্চ। কিন্তু এটা পরে মেইল পাবার পর খেয়াল হওয়ায় আরেক বন্ধুর জন্য আরেকট টিকিট যখন কাটলাম সেটি দিয়ে দিলাম দিলকুশার ব্রাঞ্চ। তারমানে আমাকে দুই শাখায় টিকেট সগ্রহ করতে হবে। ঠিকাছে , টাইম ম্যানেজমন্ট করে ফেললাম এসএমএস পাবার পর। এসএমএস এ জানিয়ে দেয়া হলো ৬ তারিখ থেকে আমি টিকেট সংগ্রহ করতে পারব।

৬ই ফেব্রুয়ারী সকাল বেলা অফিস যাবার সময় ধোলাইখাল হয়ে বংশাল এর ঢাকা ব্যাংকের ব্রাঞ্চে নামলাম। সাথে অনলাইন ই-টিকেট এর প্রিন্ট কপি আর ভোটার আইডির ফটোকপি। কিন্তু হায় ! অফিসের লোকজন বিব্রত বোধ করল। জানাল যিনি অনলাইনে বিষয়টি হ্যান্ডেল করবেন তিনি আজ ছুটিতে , একদিন পরে আসেত অনুরোধ করলেন খুবই বিনয়ের সাথে। বের হয়ে চলে এলাম।

দুপুর ২ টার পর বঙ্গভবন অফিস থেকে বের হয়ে গুলিস্তান অফিসে যাবার কালে দিলকুশা নামলাম। অফিসে ঢুকলাম। লাইনে এক দু'জন ছিল। নগদ টাকা দিয়ে টিকেন কিনছেন তারা। ই-টিকেট এর লোক আমি একা। আলাপ করলাম। জানানো হলো – ই-টিকেট এর জন্য পাওয়া টিকেট সব দেয়া হয়ে গেছে আজ আর কোন টিকেট দেয়া হবেনা। মর জ্বালা। টাকা কেটে রাখল সেই কবে। আমার কাছে প্রিন্ট ই-টিকেট, তবে আমার মূল টিকেট কেনো লাপাত্তা?…বারবার জিজ্ঞেস করছি। এর মধ্যে আরেকটি ছেলে এল , তারকাছেও প্রিন্ট কপি -ই-টিকেটের। তার ৫০০ টাকা দরের টিকেট। তাকেও একই কথা জানালো হলো। আমি একটু বুদ্ধি পেলাম। জিজ্ঞেস করলাম আমার তো ১০০০ টাকা দরের টিকেট। এবার আশার বানী এলো, `তাহলে পাবেন্'।

কিন্তু যে দেবে সে লাঞ্চ থেকে ফেরেনি। অপেক্ষা করছি। সে ফেরেনা। বিরক্ত হচ্ছি। বললাম ভাই দশ মিনিট পরে আসছি। এই ফাঁকে নিজে গিয়ে একটু পেট পূজো করে আসলাম। যাক তারপর ফিরে সতি একখানা টিকেট হাতে পেলাম। সই করে বুঝে নিলাম। যাক একটা তো পেলাম। কিন্তু ৫০০ টাকার টিকেট নিতে আসা সেই ছেলেটি তখনও ঘুরছে। তার টিকেট নাকি নেই !

৭ ই ফেব্রুয়ারী সকালে আজ অফিসে এসে হাতের কাজ শেষ করে দৌড় দিলাম বংশালে। হাসতে হাসতে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠলাম। গার্ডকে আজ জিজ্ঞাসার প্রয়োজন হলোনা। সরাসরি কাউন্টারে দাঁড়ালাম। তারপর জানলাম আমার আগে একজন ৮টি ই-টিকেট নিতে এসেছে। কর্তৃপক্ষ ই-টিকেট দেখে কিভাবে মূল টিকেট দিতে হবে বুঝতে পারছেনা। অনলাইনে ভেরিফিকেশন করতে পারছেনা। মিনিট ৩০ এর বেশি সময় দাঁড়িয়ে আছি। এর মধ্যে নগদ টাকায় বেশ কয়েকজন টিকেট কিনে নিয়ে গেলো। আমার মত আরেকজন ই-টিকেট প্রিন্ট কপি নিয়ে সাথে সহঅপেক্ষার্থী হলো। নানান জায়গায় কল করে অবশেষে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সিস্টেম জানতে পারল। টিকেট নিতে ভেতের ঢুকলাম। এক টিকেট প্রদানে ৪/৫ জন মাথা খাটাতে ব্যস্ত। কেউ বলছে ..এই নম্বরটা লেখ, এইটা মেলাও। একজন সব মিলিয়ে বলল -১০০০ টাকার টিকেট তো নেই। ..খুঁজতে গেলো। বলল` নর্দান গ্যালারীর ১০০০ টাকার টিকেট আছে, সাউথ নেই।' আবার খুঁজতে গেলো। এবার পেলো অবশেষে। যাক। লোয়ার গ্যালারীর টিকেট। এখন যে আপার চাব আমি বিব্রত বোধ করলাম। যাক বাবা! গ্যালারীতো একই। …অবশেষ নিলাম। তবে এখানে আর কাগজে সই করে বুঝে নিতে হলোন।

তিন টিকেটের পেছনে এই যে শ্রম আ সময়! কি আর বলব। প্রযুক্তি সময় বাঁচায় আর এখানে এই দেশে সব চলে উল্টো দিকে!