ময়মনসিংহে কমে যাচ্ছে কাঠবিড়ালী

মনোনেশ দাসমনোনেশ দাস
Published : 8 Oct 2016, 08:17 AM
Updated : 8 Oct 2016, 08:17 AM

ময়মনসিংহে বাসস্থান সংকট, খাদ্যাভাব, কীটনাশক প্রয়োগ ও জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে দিন দিন কমে যাচ্ছে নিরীহ প্রাণী কাঠবিড়ালীর সংখ্যা ।

জানা যায় , কাঠবিড়ালীর ইংরেজী নাম : Hoary-bellied Himalayan Squirrel/ Irrawaddy Squirrel বৈজ্ঞানিক নাম : Callosciurus pygerythrus | এক সময় ময়মনসিংহের প্রতিটি গ্রাম গঞ্জের গাছ পালায় নিরীহ নয়নাভিরাম এই প্রাণীটিকে হরহামেশাই দেখা যেতো ।

১০/১২ ইঞ্চির প্রাণীটির গাছে গাছে ছিল অবাধ বিচরণ । লম্বাটে শরীরের স্তন্যপায়ী প্রাণী কাঠবিড়ালীর সামনের ছোট দুই পায়ের দীর্ঘ লেজ ঘন পশমে ঢাকা । প্রখর দৃষ্টি শক্তি সম্পন্ন এই প্রাণীর পায়ের আঙ্গুলে ধারালো নখ দিয়ে লেজ গুটিয়ে মুহুর্তে যে কোন গাছের আগায় উঠে যায় ।


যেন পাখিদের মত দ্রুতবেগে ঊড়ে বেড়ায় এই কাঠ বিড়ালিরা । চলাফেরায় মজার তাই এই ছোট্র প্রাণীটিকে মানুষ দুষ্টু বলে সম্বোধন করেন ।
সামনের দুপা যেন দুহাতের মত । এই দিয়ে মুখের কাছে তুলে দারুন ভঙ্গীতে ফল , খেজুরের রস, বীজ এদের প্রিয় খাবারগুলি খায় । খাওয়ার ভঙ্গি মানুষের দৃষ্টিকাড়ে ।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন, "কাঠবেড়ালি! পেয়ারা তুমি খাও? গুড়-মুড়ি খাও? দুধ-ভাত খাও? বাতাবি-নেবু? লাউ? বেড়াল-বাচ্চা? কুকুর-ছানা? তাও- ডাইনি তুমি হোঁৎকা পেটুক, খাও একা পাও যেথায় যেটুক! বাতাবি-নেবু সকলগুলো একলা খেলে ডুবিয়ে নুলো! তবে যে ভারি ল্যাজ উঁচিয়ে পুটুস পাটুস চাও? ছোঁচা তুমি! তোমার সঙ্গে আড়ি আমার! যাও!

কবি শিশুদের চাওয়া পাওয়া, আকুতি-আবদার, চঞ্চলতা- দুরন্তপনা, হাস্য-কৌতুক সহজ সরল ভাষায় চিত্রিত করেছেন ছন্দে ছন্দে। এই কাঠ বিড়ালী কমে যাওয়ায় শিশুরা এদের চিনছে ও জানছে বাইয়ের পাতায় ।বাস্তবে অনেক শিশুই এদের আর বাস্তবে দেখছে না ।


তারপরও ময়মনসিংহের ঘন জঙ্গলাকীর্ণ গাছ-গাছালিতে টিকে থাকা এই প্রাণীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে বসবাসের মাধ্যমে প্রাকৃতিত পরিবেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে যাচ্ছে ।

প্রাণী গবেষকরা জানান, বাংলাদেশে আট প্রজাতির কাঠবিড়ালি দেখা যায়। এদের মধ্যে পাঁচডোরা কাঠবিড়ালি ও তিনডোরা কাঠবিড়ালি মানুষের সংস্পর্শে তুলনামূলকভাবে বেশি দেখা যায়।

বিশেষজ্ঞরা জানান, কাঠবিড়ালি পরিবেশের উপকারী প্রাণী। এ প্রাণীর উন্নয়নে সবারই কাজ করা প্রয়োজন। তাদের রক্ষা করা সবার দায়িত্ব। এরা যেন স্বাধীনভাবে খেতে ও চলতে পারে এজন্য এদের আবাসস্থল গাছ সুরক্ষায় সকলে এগিয়ে এলেই এদের রক্ষা সম্ভব ।