ময়মনসিংহে টং বন্ধে জীবিকায় টান

মনোনেশ দাসমনোনেশ দাস
Published : 3 Nov 2016, 05:50 PM
Updated : 3 Nov 2016, 05:50 PM

ময়মনসিংহে শহরের ব্রহ্মপুত্র নদ তীরে জয়নুল আবেদিন পার্কের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বেআইনি দোকান ভাঙনের পর সূর্যের তেজ কমে এসেছে। স্থানটি এখন জন-মানবহীন ধু ধু প্রান্তর। এই সে দিন, চলতি সপ্তাহে ,ওরা এসে অবৈধ টং দোকানগুলো উঠিয়ে দিয়েছে।


ওরা মানে ময়মনসিংহ জেলা, পুলিশ, আর পৌরসভা প্রশাসন ময়মনসিংহ । ওরা মানে ময়মনসিংহ। ওরা মানে সরকার। ওরা মানে রাষ্ট্র। ওরা মানে প্রভু।

২ যুগেরও বেশি সময় একটানা এই পার্কের খোলা জায়গায় বসে চটপটি, ফুচকা ,চা ,ঝাল মুড়ি, তথা বেসাতি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতো মানুষগুলো। থাকতে থাকতে শিকড় গজিয়ে গিয়েছিল এদের।


গত ২৯ অক্টোবর হঠাৎই বন্ধ করা হলো এই অবৈধ নির্মাণ। টং বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন ওদের জীবিকায় টান পড়েছে ।সরকারের অভিযোগ এদের কারনে নাকি পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে । স্কুল কলেজের ছেলে মেয়েরা ক্লাশ ফাঁকি দিয়ে নাকি এখানে বসে আড্ডা দেয় ।

গত ২৯ তারিখ থেকে এদের দোকান গুলিও নেই আর বাচ্চা বাচ্চা ছেলে মেয়েদের প্রেম বন্ধ হয়ে গিছে !
টং দোকান গুলি বন্ধ করে দেবার কারন কি শুধুই এটা নাকি অন্য কোন কারন আছে ?


পার্কের ভিতর যদি কোন দোকান নাই থাকবে তাহলে অভিজাত সারিন্দা , ব্রহ্মপুত্র ভ্যালী ,হিমু আড্ডার মত রেস্টুরেন্ট গুলি চলছে কিভাবে ? এই গুলিতে বসে ছেলে মেয়েরা প্রেম করছে না কি ? একই জায়গায় দুই ধরনের আচরন ক্যান তা মাথায় আসছে না ?


যাদের প্রেম করার বয়স তারা নিজেরাই তাদের বসে প্রেম করার জায়গা খুজে নিবে । টং দোকান উঠিয়ে প্রেম বন্ধ করা যাবে না ।

পার্কের ভিতর চটপটি , ফুচকা ,চায়ের দোকান না থাকলে মানুষ যাবে ক্যান সেখানে ? মানুষ সেখানে যায় একটু আড্ডা মারতে পাশাপাশি চা কিংবা অন্য কিছু খেতে ।
দোকান গুলি তুলে দেয়াতে এখন মানুষের বসার জায়গা নেই । দুদিন আগেও যেখানে মানুষে গমগম করতো আজ সেখানে যেন শ্মশানের নীরবতা ।

আর এটা করাতে সবচেয়ে বেশি খতিগ্রস্থ হয়েছে সকালে যারা জগিং করতে যায় নদীর পাড়ে । এদের মাঝে প্রায়সবাই ডায়াবেটিস এর রোগী । সকালে অনেক্ষন হাটার পর সবার সুগার কমে যায় এটাই স্বাভাবিক ।

সবাই হেঁটে এসে এখানে ৫ টাকা দিয়ে এক কাপ চা আর ৫ টাকা দিয়ে একটা ডাল পুড়ি অথবা বিস্কুট খেয়ে নিত । এখন তাদের খেতে হবে ৫০ টাকা দিয়ে কিনে এক কাপ কফি আর ২০ টাকা দিয়ে একটা শিঙাড়া ।


সব কিছুই মিলিয়েই সবার কথা বিবেচনা করে এই খেটে খাওয়া মানুষ গুলির এখানেই নিয়মতান্ত্রিক ভাবেই পুনর্বাসন করা উচিৎ । আর যদি এদের কে আদৌ দোকান করতে দেয়া না হয় তাহলে যেন বড় বড় দোকান গুলিকেও সরিয়ে দেয়া হয় ।

কারন একই অপরাধে একজনের ফাঁসি হবে আর অন্যের বেকসুর খালাস হবে তা কি করে হয় ?


সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে একটি সুন্দর সমাধান করবেন এই প্রত্যাশা ।