একজন সঞ্জীব চৌধুরী কিংবা বাঙালির প্রতিবাদ-প্রতিরোধের চির জাগ্রত মশাল

মাসুদ সজীব
Published : 19 Nov 2016, 03:50 PM
Updated : 19 Nov 2016, 03:50 PM

(১)

কবে কোন বিমুগ্ধ ক্ষণে পরিচয় হয়েছিলো মানুষটার সাথে আজ এতদিন পরেও মনে করতে পারি না। অথচ পরিচয়ের পর থেকে এই মানুষটি সমগ্র চেতনায়, ভালোলাগায়, ভালোবাসায়, বেদনায়, ক্ষোভে, উপহাসে, প্রতিবাদে, ভাবনায় মিশে আছে একাকার হয়ে। জীবনের এই ভীষন হাহাকারে ভরা দু:সময়ে তাঁর শূণ্যতা বুকটা সত্যি ভারী করে তুলে। তিনি ছিলেন এই নষ্টদের মিছিলে আলোকিত এক মানুষ হয়ে, ছিলেন বেদনাকাতর স্বপ্নবাজ মানুষ হয়ে। কতো কতো দিন আর কতো রাত তিঁনি বুকের ভেতর তুলেছেন শূণ্যতার ঝড়, চোখের ভেতর দিয়ে গেছেন টলমলে এক নদী জল। অনুভবের জগৎ কে যিনি ঢেকে দিয়েছিলেন বিষন্নতার চাদরে, ভাবনার সবগুলো দরজা কে যিনি খুলে দিয়েছিলেন। আবার তিঁনিই পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন রাজনৈতিক মিথ্যাচারের সাথে, সামাজিক শোষনের সাথে, ভন্ড সমাজপতিদের সাথে। তার পরিচয় অসংখ্য তিঁনি একজন গীতিকার, সুরকার, গায়ক, সাংবাদিক এবং কবি। তবে সব পরিচয় ছাপিয়ে শুধু গায়ক পরিচয়ে বেশি সমাদৃত হয়েছেন। তিঁনি প্রিয় সঞ্জীব চৌধুরী, দলছুটের সঞ্জীব দা, আমাদের প্রিয় সঞ্জীব দা। ২০০৭ সালের আজকের এইদিনে যিনি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে আমাদের থেকে দলছুট হয়েছেন।

সামনা সামনি সঞ্জীব দা' কে দেখা হয়নি কোনদিন তবু তাঁর সাথে দেখা হয় আমার প্রতিটি দিনে, প্রতিটি রাতে এমনকি এই বিষন্ন দূর পরবাসে। পরবাসের দিনগুলো তে সঞ্জীব দা আরো বেশি করে সত্য হয়ে ওঠেন মননে, চিন্তায় আর চেতনাতে। তাল মিলিয়ে চলা কে আমরা যারা জীবন জেনেছি, সবকিছু কে মেনে নেওয়া কে আমরা যারা অভিযোজন করে বেঁচে থাকা বুঝেছি তাদের জন্যেই সঞ্জীব দা গেয়েছিলেন,

ঐ কান্না ভেজা আকাশ আমার ভালো লাগে না
থমকে থাকা বাতাস আমার ভালো লাগে না
তুড়ির তালে নাচতে আমার ভালো লাগে না
এই মরে মরে বেঁচে থাকা ভালো লাগে না।।

পাখির কন্ঠে বেসুরা গান ভালো লাগে না
নরনারীর একমুখী টান ভালো লাগে না।।
ফুলের বুকে ধুতুরার ঘ্রাণ ভালো লাগে না
মৃত্যুভয়ে চমকানো প্রাণ ভালো লাগে না।

প্রথাগত ভালোলাগা কে ভেঙ্গে দেওয়া এ এক নতুন ধারার গানের সাথে পরিচয় হয়েছিলাম প্রথম যৌবনে। স্রোতে গা ভাসানো জনপ্রিয়তার পেছনে ছুটে যাওয়ার জন্যে সঞ্জীব গান বাঁধেননি, সবার মন জয় করতে তেলে-জলে মিশে তিনি সর্বজনীন শিল্পী হতে চাননি। সত্যিকার শিল্পী হলে সমাজের প্রতি, রাষ্ট্রের প্রতি তার দায়বদ্ধতা থাকে। শিল্পী কখনো সে দায়বদ্ধতা এড়িয়ে যান না কিংবা আপোস করেন না। সেই আপোসহীনতার, সেই দায়বদ্ধতা আমরা দেখেছিলাম টিএসসিতে আয়োজিত গানের আসরে। হাজার মানুষের সামনে সাহসী উচ্চারণ করে বলেছিলেন

'একটা ছেঁড়া সুটকেস থেকে ডান্ডি ডায়িং হয়ে যায়, আপনার বিবেক কি বলে? বলেন? আরেকজন কর্ণেল তাহের কে বন্দি করা হয়, কে করছিলো…বলেন….বলেন…চিৎকার করে বলেন, বিবেক দিয়া বলেন, নিজের মায়ের নামে শপথ, নিজের মাটির নামে শপথ বলেন এ মানুষটিকে কে খুন করেছিলো? বলেন? বলেন? যদি না বলতে পারেন তবে আমি গান না গেয়ে এখান থেকে চলে যাবো….!'

বিএনপি-জামায়েত জোট ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে টিএসসিতে সেই গানের আসরে সঞ্জীব দা বলেছিলেন,

'বাংলাভাই হাঁটে, বাংলাভাই কে কেউ ধরেনা… আমি যখন বলি তখন আমাকে ধরে… আমাদের স্মরণশক্তি বড় কম, ঢাকা ইউনিভার্সিটির ইকোনেমিক্সের ফাষ্টক্লাস ফাষ্ট তাজুল ইসলাম কে এরশাদের গুন্ডাপান্ডা-রা পিটিয়ে মেরে ফেলেছিলো… আর তখন উপপ্রধান মন্ত্রী কে ছিলেন, আপনাদের কি মনে আছে? নাম বলেন..মওদুদ আহমেদ..তিনি এখন আইনমন্ত্রী, খুবই ভালো আইন জানেন। জসিম উদ্দিনের মেয়ের জামাই। ওনাকে ধরার জন্যে ধর ধর এরশাদের চামচা গোরে ধর, ছিলো না? ভুলে গেছেন সবকিছু? সেই মওদুদ আহমেদ এখন আমাদের কে আইন শিখান, আপনারা এখানে বসে বসে আইন শিখেন।'

গানের মঞ্চে এমন করে আর কেউ কি কোনদিন খুলে দিয়েছিলো রাজনৈতিক ভন্ডদের মুখোশ? কেউ কি নিজের প্রাণের মায়া তুচ্ছ করে ক্ষমতাসীন মন্ত্রীর অতীত ইতিহাস কে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলো ভুলে যাওয়া বাঙালি কে?

(২)
সঞ্জীব চৌধুরীর প্রতিটি গানে ছিলো যন্ত্রনা, প্রেম, নি:সঙ্গতা, দ্রোহ আর ঘুনে ধরা সমাজের চিত্র। সহজিয়া সুর আর কাব্যিক গানের কথা খুব সহজেই বুকের ভেতরটা নাড়িয়ে দেয়, চোখের জলের ভেতর ফেলে গানের অনুভব। সমাজের অনাচার, ব্যভিচার, নষ্টের জয়োৎসবে যখন আমরা নির্বাক থাকতাম তখন ও সঞ্জীবের চোখটা কে ভীষন পোড়াতো। তাই তো গেয়েছেন ,

চোখটা এত পোড়ায় কেন
ও পোড়া চোখ সমুদ্রে যাও
সমুদ্র কি তোমার ছেলে আদর দিয়ে চোখে মাখাও।।
বুক জুড়ে এই বেজান শহর হা হা শূন্য আকাশ কাঁপাও
আকাশ ঘিরে শংখচিলের শরীর চেরা কান্না থামাও ।।
সমুদ্র কী তোমার ছেলে আদর দিয়ে চোখে মাখাও।।

পঁচে যাওয়া সমাজ কে ভুলে গিয়ে, নষ্ট সময় কে অস্বীকার করে যিনি গাইতে পারেননি সস্তা ভাবুলতার গান। গানের মধ্যেই তুলে দিয়েছেন সময় কে, এঁকে গেছেন সমাজ তথা রাজনৈতিক দৃশ্যপট। যেমন,

সব নিষিদ্ধ
কষ্ট নিষিদ্ধ কষ্ট নাই
দুঃখ নিষিদ্ধ দুঃখ নাই
আমাদের কষ্ট থাকতে নাই দুঃখ পাওয়ার আদেশ নাই
কষ্ট নিষিদ্ধ কষ্ট নাই দুঃখ নিষিদ্ধ দুঃখ নাই
আমাদের জিহ্বা নাই বাক্য নাই
আমাদের মস্তক নাই হস্ত নাই
আমাদের মাথা থাকতে নাই মাথা থাকার নিয়ম নাই…

ঘনিয়ে আসা এই অন্ধকারে যদি সঞ্জীব দা থাকতেন তাহলে তিঁনি ও কি উন্নয়ন নিয়ে খুশি থাকতেন? আস্তিকতা-নাস্তিকতার দোহাই দিয়ে মানুষ হত্যা কে ভুলে তুমি নেই আমি আছি টাইপের গান গাইতেন? তিঁনি ও কি প্রতিষ্ঠিত সব শিল্পীর ন্যায় এ বিষয়ে নীরবতা পালন করতেন, শুধু গান গাওয়া, শ্রোতা কে বিনোদন দেওয়া শিল্পীর দায়িত্ব মনে করতেন? না, সেটা তিনি করেন নি। এরশাদ বিরোধী স্বৈরাচার আন্দোলনে তিনি রাজপথে নেমেছিলেন, আরেক স্বৈরাচার জিয়া যে কর্ণেল তাহের কে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেশ কে মুক্তিযোদ্ধা শূণ্য করার প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছিলেন সেটি বলে গেছেন। রাষ্ট্রের তথাকথিত উন্নয়নের ভিতর যে বঞ্চনা আর ফাঁকিবাজ খেলা করছে তা তিনি বলেছিলেন তীব্র ক্রোধে, করুণ ব্যাঙ্গাত্মক সুরে।

রেডিওতে খবর দিছে দেশে কোন অভাব নাই, নাইলার ঘরে, কাইলার ঘরে আনন্দের আর সীমা নাই, চেয়ারম্যানের সাবে বগল বাজায়, আমরা কিচ্ছু দেখছি না! এবং আসতিছে পরিবর্তনের হাওয়া…এদিকে তহবিল জমে, ওইদিকে চোখের পানি!

আমরা ভুলে গিয়েছিলাম আমাদের অতীত অর্জন, অতীত শপথ, আমাদের হারানো স্বজন আর আমাদের স্বপ্নের কথা কিন্তু সঞ্জীব দা ভুলেন নি। গানে গানে বলেছিলেন,

মনে পড়ে সেই হৃদয় কাঁপানো স্বপ্নের কথা, লাল টুকটুকে সেই স্বপ্নের কথা। কথা ছিলো নিশ্চিত বিজয়, কথা ছিলো সমান অধিকার, কথা ছিলো গাঢ়ের উপর চেপে বসা রক্তচোষার ছাড়গুলো কে, নর্দমার এই কীটগুলো কে পিষে মারার।

পিষে মারা হয়নি কীটদের, বরং দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা। নির্লজ্জের মতো আমরা সেটি মেনে নিয়েছি যুগের পরে যুগে। সঞ্জীব চৌধুরী সেই লজ্জার কথা বলে গেছেন, প্রতিবাদ করেছেন।

আজও আমাদের এখানে ধর্ষণ নিত্তদিনের ঘটনা হয়ে আছে। প্রতিদিন এখানে সেখানে অসংখ্য তনু, সুলতানা, পূজা-রা ধর্ষিত হয়। যতগুলো খবর পত্রিকা-টেলিভিশনে আসে তার চেয়ে অনেক বেশি ধর্ষণ এখানে সংঘটিত হয়। আমাদের ঘুনে ধরা সমাজ, আমাদের বোধহীন বর্তমান শিল্পী সমাজ সেগুলোকে পাশ কাটিয়ে হাসিমুখে টেলিভিশন পত্রিকায় ফটোসেশান করে। কোথাও কারো দায়বদ্ধতা নেই, কোথাও কারো কোন দায় নেই। অথচ যখন ইয়াসমিন ধর্ষিত হয়ে তখন সঞ্জীব চৌধুরী গেয়ে উঠেছিলেন

ঘরে ফিরতে চাইলেই কি ঘরে ফেরা যায়, সবাই কি ঘরে ফিরতে পারে? ইয়াসমিন, দিনাজপুরের ইয়াসমিন, কিশোরী ইয়াসমিন ঘরে ফিরতে চেয়েছিল। কিন্তু কি অন্ধকার সে পথ, কি নিষ্ঠুর সে পথ। ইয়াসমিনের আর কোন দিন বাড়ি ফেরা হয় না। ঢাকা টু দিনাজপুর অন্ধকারে লোপাট হয়ে যায়। আর রকের মুখোশ পড়ে কসাইগুলো হাসে, পুলিশের ব্যাটন হাতে কসাইগুলো হাসে। আর তাকে ধর্ষন করা হয়, তাকে ধর্ষন করা হয়। তাকে মেরে ফেলা হয়। ইয়াসমিন আহ!

মানবতা যতবার ভুলন্ঠিত হয়েছে এই মানচিত্রে, মানুষের অধিকার যতবার রাষ্ট্রযন্ত্রকলে পিষে মরেছে, যতবার স্বৈরশাসন চেপে বসেছে ছাপান্নো হাজার বর্গমাইলে ততবার সঞ্জীবের কন্ঠসর, সঞ্জীবের কলম প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে। গানে গানে বলেছেন তাইজুল, তাহের সহ মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা রাজপথে অসংখ্য বন্ধুর কথা। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গেয়েছিলেন,

ওরা বলে ঐ গাড়িতে করে আমাদের জন্য
খাদ্য আর পানীয় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো
আমাদের জন্য
খাদ্য আর পানীয়
কিন্তু বিশ্বাস করুন বন্ধুগণ
আমি জানি ঐ গাড়িতে আমাদের জন্য
কোন খাদ্য ছিলো না
আমাদের জন্য কোন পানীয় ছিলো না
তিনশটি লাশ
তিনশটি লাশ ঠান্ডা হিম
যাদের গুম করে ফেলা হবে
আমি বলতে চেয়েছিলাম সেই সমস্ত কথা
আর তখনই
তখনই আমার দিকে এগিয়ে আসলো উদ্ধত রাইফেল
উদ্ধত বেয়নেট
ওরা বলে, "খামোশ!"

সঞ্জীব চৌধুরী ছিলেন জীবনের গায়ক, জীবনের সৌন্দর্য্য খুঁজে গেছেন কথা-গানে আর সুরের মাঝে। আর সৌন্দর্য্য খুঁজতে গেলে কুৎসিতের দেখা মিলে। সেই কুৎসিত কে অস্বীকার করে মিষ্টি মিষ্টি কথার বেড়াজালে নিজের যাপিত জীবনের নষ্ট সময়ে কে অস্বীকার করেননি তিনি।

আমার ছেড়া ছালার বস্তা কই
আমায় ঠেইলা নেওয়ার গাড়ি কই
আমায় হাইকোর্ট চিনাবা না

একটা দেশের বিচারলয়ে দলবেঁধে মানুষ ভিক্ষা করে এর চেয়ে লজ্জার কি থাকতে পারে। রাষ্ট্রযন্ত্র অন্ধ থেকে, আমজনতা নীরব থেকে সেই লজ্জা থেকে মুক্তি দেয় নিজেকে। সঞ্জীব সেই লজ্জা থেকে মুক্তি দেননি নিজেকে।

(৩)

সঞ্জীব চৌধুরী ছিলেন প্রকৃত অর্থে কবিস্বভাবে গায়ক। গানের কথায় কাব্যময়তা আর ছন্দময় বাণীতে যিনি মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন প্রতিনিয়ত। মূলত নিজের লেখা গান বেশি সুরারোপ করলেও অন্য অনেকের লেখা গানে সুর দিয়েছেন, গেয়েছেন। সবখানেই সেই কাব্য বৈশিষ্ট্যর সাথে আপোস করেননি, সস্তা কথা আর সস্তার সুরের পেছনে ছুটেননি। প্রেম-বিরহ, দ্রোহ, প্রতিবাদ, সচেতনতা সব ধরণের গানই সঞ্জীব চৌধুরী গেয়েছেন। ভালোবাসার গানে তিনি ছিলেন অভিমানী। যেমন,

আমি তোমাকেই বলে দেব
কী যে একা দীর্ঘ রাত
আমি হেঁটে গেছি বিরাণ পথে
আমি তোমাকেই বলে দেব
সেই ভুলে ভরা গল্প
কড়া নেড়ে গেছি ভুল দরজায়
ছুঁয়ে কান্নার রঙ
ছুঁয়ে জোছনার ছায়া।

কিংবা

ব্যাকারণ জানে ব্যাকারণবিদ
সূত্র বুঝি না আমি
কোন সংজ্ঞায় ভালোবাসা হয়
বুঝি তার খুব কমি
বহু বন্দর ছুঁয়ে ছুঁয়ে
তাই তোমার উঠোনে ফিরি
যখন যেখানে নোঙর ফেলেছি
সবাই কে আজ আড়ি!

জীবনের ওপারে মৃত্যু দাঁড়িয়ে থাকে, তাই একটু গভীর ভাবে জীবনকে দেখার চেষ্টা করলে তার উল্টো পিঠের মৃত্যু কেও দেখতে পাওয়া যায়। সঞ্জীবের গানে সেই মৃত্যু ভাবনা এসেছে বারে বারে। এই যে এত আয়োজন, এত মান-অভিমান-ভালোবাসা সব বিলীন হয়ে যায় মৃত্যু নামক একটা শব্দের কাছে। সেই সত্য কে সঞ্জীব তুলে ধরেছেন এভাবে,

গল্পে আলাপ উঠবে জমে,
গভীর গল্প আসবে কমে।
সারা রাতের গানের কথা
রাত ফুরালেই কবে না কবে না।
হাতের উপর হাতের পরশ রবে না
হাতের উপর হাতের পরশ রবে না।।

হাতের উপর হাতের পরশ থাকে না সত্যি কিন্তু মনের উপর মনের উপর পরশ থেকে যায় সঞ্জীব দা। মৃত্যু পারে না সবকিছু কে ম্লাণ করে দিতে, পারে না শূণ্য করে দিতে। জীবনবোধের কোনদিন মৃত্যু হয় না, মৃত্যু হয় না সত্যিকার শিল্পীর। সঞ্জীব চৌধুরী শুধু একটি নাম নয়, সঞ্জীব চৌধুরী একটি জীবনবোধের নাম, সঞ্জীব একটি সাহসী চেতনার নাম, একজন কিংবদন্তির নাম। প্রিয় সঞ্জীব চৌধুরী আপনার ছুঁয়ে দেওয়া কান্নার জলে, আর ছুঁয়ে যাওয়া জোছনার ছায়ায় আজও আপনাকে অনুভব করি। আজও আপনাকে পাই চোখের লোনা জলে, প্রতিবাদহীনতা আর প্রতিরোধের প্রতিটি বাঁকে আপনি আছেন জাগ্রত মশাল হয়ে। আপনি থাকবেন অজস্র জন্মধরে বাঙালির মুক্ত চেতনাতে।