অর্থের হিসাবে দারিদ্র মূলত সেই যে অর্থ দিয়ে তার মৌলিক চাহিদা মিটাতে পারে না। অন্যদিকে মনের দারিদ্রও মানুষকে দারিদ্র করে রাখে। ভয় থেকেও দারিদ্রের সৃষ্টি হয়, যেমন উদ্যোগ নেয়ার ভয়। সাহসীরা দারিদ্রকে জয় করতে পারে। ব্যক্তিত্ব গঠন দ্বারাও দারিদ্র বিমোচন করা যায়। ব্যক্তিত্ববানরা পরিশ্রমী আর আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন হয় এবং ঘৃণা করে অহংকারকে। তাই অর্থনৈতিক আর মানসিক দারিদ্র বিমোচনে প্রয়োজন সাহসী ব্যবসায়িক উদ্যোগ। যে ব্যবসায়ি সামাজিক দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকে এবং মানবতার কল্যাণে কাজ করে তার ব্যবসায় দীর্ঘ মেয়াদে সফল হয়। কারন সাধারন মানুষের জনপ্রিয়তা ছাড়া দীর্ঘ মেয়াদে কোন ব্যবসায় টিকে থাকতে পারে না।
ক্ষুদ্রঋণ একটি চক্রবৃদ্ধি সুদের ব্যবসায়। যা যে কোনো ব্যবসায়িক কারবারে অতিরিক্ত দায় হিসাবে দেখা যায়। ঐতিহাসিক ভাবে আমরা আরও দেখতে পাই যে, ক্ষুদ্রঋণ শুধু ব্যবসায়ীকে অর্থনৈতিক চাপের মধ্যেই রাখে না মানসিক চাপের মধ্যেও রাখে। অনেককেই পরবর্তীতে অধিক পরিশ্রম করার পরেও স্থায়ী সম্পদ বিক্রি করে দায় শোধ করতে হয়েছে।
অপর দিকে ড: মুহাম্মদ ইউনূসের সামাজিক ব্যবসা একটি সুন্দর নাম হলেও এখানে বিনিয়োগকারিরা কোন লভ্যাংশ নিতে পারে না। অর্থাৎ এখানে অর্থ আসবে ভিক্ষার সংজ্ঞায় আর দরিদ্র মানুষের তালিকা করে কমদামে পণ্য দেয়া হবে, আবারো সেই ভিক্ষার সংজ্ঞা। ভিক্ষায় ব্যক্তিত্ব নষ্ট হয় আর দারিদ্র টিকে থাকে। সুতরং ক্ষুদ্রঋণ কিংবা ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস এর সামাজিক ব্যবসায় কোনটাই দারিদ্র বিমোচনে সহায়ক নয়।
মোঃ মাশিউর রহমান, ব্যাংকার