১৭৫৭ সাল থেকে ১৯৭৫ এর ১৫ই আগষ্ট কি অদ্ভুত?

মহি উদ্দীন মহি
Published : 3 August 2015, 03:54 AM
Updated : 3 August 2015, 03:54 AM

১৭৫৭ সালে ২৩ই জুন পলাশীর আম্রকাননে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদৌলাকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলার স্বাধীনতার সূর্যের যে প্রদীপ আমরা নিভিয়ে ছিলাম, তার অন্ধকারে আমাদেরকে থাকতে হয়েছে প্রায় দু'শো বছর। ঠিক তারই সোয়া দু'শোর পর হাজার বছরের শেষ্ঠ বাঙালি, বাঙালি জাতিয়তাবাদের মহান স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যার মাধ্যমে আমরা যে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছে তার খেসারত এখনও দিয়ে যাচ্ছি। মজার ব্যপার হচ্ছে এই দু'টি হত্যাকাণ্ডের সাথে যে বা যাহারাই জড়িত ছিলেন তাদের সবার ভাগ্যে ঠিক একই পরিনতি ঘটে ছিল। মানুষের আদালত থেকে অনেকে মুক্তি পেলেও ইতিহাসের আদালত থেকে কে'উই মুক্তি পাননি এবং দুই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের ভাগ্যে একই পরিনতি একই।

প্রখ্যাত সাংবাদিক, কলামিষ্ট ও অমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি গানের লেখক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর এক  নিবন্ধে পড়ে ছিলাম ১৭৫৭ সালে সিরাজ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত মুশির্দবাদের মীরকাশেম রাস্তায় পাগল উম্মাদ আমার ১৩ নম্বর ধারা কই বলতে বলতে রাস্তায় মৃত্যু বরন করেন। তাহার ব্যবহৃত পুটলির মধ্যে প্রাপ্ত চাপকান থেকে বুঝা গিয়েছিল তিনি মীর কাশেম মুর্শিদাবাদের সাবেক রাজা। লর্ড় ক্লাইভ তার অর্জিত সম্পতি তার বাবা গ্রহন করতে অস্বীকার করায় আত্মহত্যা করেছেন। ভণ্ডপীর দানাশাহ সাপের কামড়ে মৃত্যু বরণ করছেন। ঠিক একই ভাবে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার যড়যন্ত্রকারী  মাহবুবুল আলম চাষী মক্কায় হজ্ব করতে গিয়ে গাড়ীর গ্যাস সিলিন্ডার ব্লাস্ট হয়ে পুড়ে মৃত্যু বরন করেন। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত বঙ্গবন্ধুর অন্যতম সহচর তাদের উদ্দিন ঠাকুর শেষ জীবনে বাড়ির দরজায় গেইটে তালা লাগিয়ে তেতলা বসবাস করতেন। প্রকাশ্যে বের হতে পারেননি। লক্ষীটেরা সেনাপতি জিয়াউর বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে জেনে নিরব থেকেছেন। চট্রগ্রাম সার্কিট হাউসে তারেই একদল সেনার হাতে নির্মমভাবে নিহত হন,অনেকে বলেন তার লাশও নাকি পাওয়া যায়নি। এভাবে বঙ্গবন্ধুর হত্যা ও সিরাজ হত্যা কাণ্ডের সাথে জড়িত অনেকের মানুষের আদালতে শাস্তি না হলেও ইতিহাসের আদালতে শাস্তি হয়েছে। আবার অনেকে মানুষের আদালতেও শাস্তিও পেয়েছেন। এখনও বঙ্গবন্ধু হত্যার মামলার যেসব আসামি বিদেশের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন, তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্য সরকারের নিকট বিনম্র অনুরোধ জানাচ্ছি।

মোঃ মহি উদ্দিন (মহি)