কে দেখবে চবির শিক্ষার্থীদের কষ্ট?

মামুনুর রশিদ
Published : 14 Oct 2014, 07:23 PM
Updated : 14 Oct 2014, 07:23 PM

১৪ অক্টোবর সকাল ১০ টা ডেমু দাঁড়িয়ে আছে ষোলশহর যাওয়ার জন্য। ১০ টা ১০ মিনিটে ডেমুতে উঠলাম দেখি কোন সিট ফাঁকা নেই কাউকে সমবয়সী খুঁজেও পাচ্ছিনা। শুধু দেখতে পাচ্ছি ৩০ থেকে ৭০ বছর বয়সের বেশকিছু অপরিচিত লোক। এরা একেকজন খোঁশ গল্পে মশগুল, কেউ আবার পত্রিকা কিনে দেশের খবর পড়ছেন, কেউ সংসারের গল্প করছেন।ভাবলাম চবি থেকে শহর পর্যন্ত এলাকাবাসীর জন্য নতুন কোন ট্রেন চালু হলো নাকি? না কিছুক্ষন পরে যখন দেখতে পেলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একে একে আসছেন তখন বুঝতে পারলাম এটি আমাদেরই ট্রেন। ঘড়িতে ১০টা ৩০ মিনিট দাঁড়িয়ে রয়েছে কিছু বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া যুবক, বসার কোন জায়গা নেই। কি আর করবে সবাই দাঁড়িয়েই রয়েছে। আর বিস্ময়করভাবে দেখতে পেলাম পারিবারিক ভারী ভারী জিনিসপত্র এমনকি মাছের ভাঁড়, শুটকি থেকে শুরু করে সবকিছুই বহন করছে এই ডেমু। তখন আরেকবার ভাবলাম এটা কি সত্যি স্টুডেন্টদের জন্য নাকি এলাকাবাসীর পারিবারিক পরিবহন?

এ ঘটনাগুলো শুধু ১৪ অক্টোবরের নয়। প্রতিদিনেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রধান যাতায়াত মাধ্যম ডেমু এবং শাটলে এ ঘটনাগুলো ঘটছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ দিবো না তিরস্কৃত করবো তা বুঝতে পারছিনা। ধন্যবাদ দিবো এই জন্য যে, তাঁরা সৌজন্যবোধ শিখেছে, মনুষ্যত্ব অর্জন করেছে। তিরস্কৃত এই জন্য যে, তাঁরা নিজেরা নিজেদের অধিকার আদায় করে নিতে পারেনি, শোষনের হাত থেকে মুক্তিলাভের উপায় বের করতে পারেনি।

দোষ কি শুধুই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের? না দোষ শুধু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নয়, দোষ আমাদের প্রশাসনের। ২২০০০ হাজার শিক্ষার্থীর অভিভাবক হয়েও প্রশাসন কার্যকরী কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় শাটল এবং ডেমু এলাকাবাসীর নিজস্ব পরিবহনে রূপান্তরিত হয়ে গেছে। নাজিরহাটের ট্রেন বটতলী ষ্টেশন পর্যন্ত গেলেও শুধু যাচ্ছেনা দেশের মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের বহনকারী ডেমু এবং শাটল। কে শুনবে তাদের আকুতি?

মামুনুর রশিদ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।