আমি দুর্বল নার্ভের মানুষ। জিয়োগ্রাফী চ্যানেলে দলবদ্ধ হায়েনা যখন নিরীহ হরিণের চারপাশ ঘিরে নিয়ে মজা করে; একজন একটা করে কামড় বসায়, আমি তখন অন্য চ্যানেল দেখি।
আদর্শ দিয়ে রাজনীতি চলেনা। চাই নগদ ইনকাম; চাই রক্ত গরম করা থীম। বিভাজনের জন্য চাই ঘৃনার বিষবৃক্ষ এবং তার সঠিক পরিচর্যা। সেজন্য আমরা হাতে চুড়ি পরার উপমা ব্যবহার করেছি। একহাতে তালি বাজেনা বলে ডিসি সাহেবকে সান্তনা দিয়েছি। পরীক্ষা-কক্ষে পিস্তল দর্শনে অভিভূত পরিদর্শককে সর্বংসহা নীতি শিখিয়েছি। রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলা প্রত্যাহার করে উদারতা শিখিয়েছি। রাজনৈতিক কর্মকান্ডে মূল্যবান অবদানের জন্য গন্ডা পাঁচেক ফাঁসির দড়িকে ফুলের মালায় পরিনত করেছি। মিডিয়াকে নির্দিষ্ট ফরম্যাটের শব্দ সম্ভার সরবরাহ করেছি।
অতএব পথ পরিষ্কার। নির্দেশনায় কোন অস্পষ্টতা নেই; ভ্রান্তির কোন অবকাশ নেই। মনেপ্রানে রাজপথ রঞ্জনে ব্যস্ত হয়ে পড়ো। কোন দূর্মূখ যদি বা তোমায় শিকলের ভয় দেখায়, পেছনে তাকিয়ে দেখো, কীভাবে আমরা শিকলকে ফুলের মালায় পরিণত করতে পারি।
তোমাদের মুখে রক্ত লাগাও, নোনা স্বাদে মাতাল হও। কামারের দোকানে যাও, নিজেই কামার হও; তীক্ষ্ণধারে শানিত কর তোমাদের হলুদ দাঁত, উদ্যত নখর। হাঁপরের শোঁ শোঁ, তপ্ত লোহার ঠুং ঠাং, মৃত্যু যন্ত্রনায় হরিণের আর্তচিৎকার, রক্তের নোনা স্বাদ; এরচেয়ে উত্তম সঙ্গীত আর কী হতে পারে? মাতাল হও! রাজপথ রঞ্জনই তোমাদের সর্বোত্তম কাজ।
দেবতার বেদীতে রক্ত এখন আর শুকিয়ে যায়না; বরং কান পাতলেই ঢেউয়ের আওয়াজ শুনতে পাই। রক্তাক্ত হরিণের আমৃত্যু আকুতি আমাদের রক্তে উন্মত্ত নৃত্যের ঢাক বাজায়।
আমরা রক্তমুখে নৃত্য করি ।
[যখন এ লেখা লিখছিলাম তখন প্রথম আলোতে বিশ্বজিতের ঘটনার 6টি স্লাইড ছিলো। ঘন্টা দুয়েক পর দেখি, বদলে দাও নীতিতে নির্দিষ্ট লিঙ্ক বদলে গেছে অথবা বদলে যেতে বাধ্য হয়েছে। এই হলো স্বাধীন মিডিয়া, তথ্য অধিকার।]