শান্তির ধর্মে অশান্তির অশনি সংকেত

বিমূর্ত কবির
Published : 16 May 2015, 06:07 AM
Updated : 16 May 2015, 06:07 AM

একজন মানুষ কোন ধর্ম চর্চা করবে কি করবে না এটা তার নিজের ব্যাপার । আমি, আপনি তাকে ধর্ম পালন করতে পরামর্শ দিতে পারি । ধর্ম সম্বন্ধে তার ভুল ধারনা থাকলে সেটা ভেঙ্গে দেবার জন্য আলোচনা করতে পারি , ধর্মিয় বই পুস্তক পড়ার জন্য বলতে পারি কিংবা আমার ধর্মিয় অনুভুতিতে আঘাত লাগে এমন কিছু লেখা বা বলা থেকে বিরত থাকতে বলতে পারি ।  দেশের প্রচলিত আইনেই তার বিরুদ্ধে নালিশ জানানো যায়, মামলা করা যায় । কিন্তু কোন ভাবেই কি ইসলাম তাকে হত্যা করা সমর্থন করে কিংবা নির্দেশ দেয়? দেয়না, যদি দিত তাহলে নবীজী-কে যারা  অপমান করেছে, অবিশ্বাস করেছে তাদের সবাইকে উনি হত্যা করতেন কিংবা হত্যা করার নির্দেশ দিতেন । কিন্তু উনি সে রকম কিছু করেন নাই । উনি ধৈর্য ধারন করেছেন, আল্লাহর সাহায্য চেয়েছেন ।

যুগে যুগে ধর্মে বিশ্বাসী মানুষ যেমন থাকবে তেমনি ধর্মে বিশ্বাস করেনা এমন মানুষও থাকবে এবং তারা তাদের বিশ্বাসটা প্রচার করার চেষ্টা করবে, সেটাই স্বাভাবিক । এই স্বাভাবিকতাকে আমাদের মেনে নিতে হবে। আমার বিশ্বাস যেমন আমার, তেমনিভাবে তার বিশ্বাসও তার । আমার বিশ্বাসের সাথে তার বিশ্বাস সাংঘর্সিক হলে আমি তার প্রচারিত কথার বিরুদ্ধে বলবো কিংবা লিখবো আমার যুক্তি দিয়ে। কিন্তু কোন ভাবেই আমাকে কোন মানুষের হত্যাকারী হবার অনুমোদন আল্লাহ দেন নাই । যে জীবন দেবার ক্ষমতা আমার নাই সেই জীবন কেড়ে নেবার অধিকারও আমার থাকা উচিৎ নয়। আমরা যদি সত্যিকার অর্থে নিজেদেরকে মুসলিম হিসাবে প্রমান করতে চাই তাহলে এই খুন-খারাবি থেকে বেড় হয়ে আসতে হবে। ধর্মিয় কারনে অপরাধের বিচারের ভার আল্লাহর উপরই ছেড়ে দিতে হবে।

আল্লাহর চেয়ে বড় বিচারক হবার চেষ্টা করা কোন মুসলমানেরই উচিৎ নয় । এই রকম অমানবিক ও পাশবিক কাজ যারা করছে তারা ইসলামের উপর কলঙ্ক লেপন করছে । এদের প্রতিহত করা এবং উগ্রবাদিতা থেকে ইসলামকে মুক্ত করা সাধারন মুমিন মুসলীমদের দায়ীত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন । মনে রাখতে হবে – আজকের বিশ্বে মুসলীমদের বাস কোন নির্দিষ্ট দেশে সীমাবদ্ধ নয় । এমন অনেক দেশেই এখন আমরা মুসলিমরা বসবাস করি যেখানে মুসলমানেরা সংখ্যালঘু এবং অনেক ক্ষেত্রে খুবই সিমাবদ্ধতার মধ্যে ধর্মিয় আচার অনুষ্ঠান পালন করে থাকেন । আজকের এই উগ্র আচরনের মাধ্যমে সেই সকল মুসলিমদের জীবনকে বিপদাপন্ন করে তুলছে এই উগ্রবাদিরা । শুধুমাত্র মুসলমান হবার কারনেই যদি এখন সেই সকল সংখ্যালঘু মুসলিমদেরকে অন্যরা হত্যা করতে শুরু করে বা নির্যাতন করে তাহলে সেই দায়ভার কার?  কাজেই চুপ করে থেকে নিজের মুসলমানিত্বের প্রমান দেওয়ার সময় আর নাই । এই উগ্রবাদী
ধর্মান্ধতা বন্ধ করতে সবারই সরব হওয়া দরকার এবং প্রতিহত করে নিজের ধর্মের সুনাম রক্ষা করার জন্য কাজ করা দরকার ।